সংবাদ :
জাতীয় : জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত- বাংলাদেশের আকাশে আজ পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে, ১০ জুলাই রবিবার সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে ইসলামিক বিশ্ব : আরাফাতে খুতবা দিবেন শায়খ ড. মুহাম্মাদ আবদুল করীম , হজের খুতবা সরাসরি সম্প্রচার হবে বাংলাসহ ১৪ ভাষায় আন্তর্জাতিক : আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় ৩য় স্থান অর্জনকারী সালেহ আহমদ তাকরিমকে সংবর্ধনা প্রদান করল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন

  • টেক্সট সাইজ
  • A
  • A
  • A
  • |
  • রং
  • C
  • A
  • A
  • A

মাযহাবের প্রয়োজনীয়তা কী ?
প্রিন্ট
প্রকাশঃ : বুধবার ১১/০৭/২০১৮

মাযহাবের প্রয়োজনীয়তা কী ?

শেখ মুহাম্মদ মুশাহিদ আলী

তারিখঃ ১১.৭.২০১৮ ইং

মাযহাব পরিচিতিঃ আরবী মাযহাব শব্দের অর্থ – মত, তরিকা, পন্থা, পদ্ধতি ইত্যাদি । (মিছবাহুল লুগাত)। পরিভাষায় আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক আনিত ইসলাম ধর্মের আমল সমূহ পালনের পদ্ধতির নাম মাযহাব । ধর্মের নাম নয় । যেমনটি কিছু মাযহাব মানতে না চাওয়া গোষ্ঠী মনে করে থাকেন । মূলত ধর্ম বলতে আক্বিদা বিশ্বাস ও আমলিয়াতের সমষ্টিকে বুঝায় । আর মাযহাব সে ধর্মের আমল সমূহের পদ্ধতির ভিন্নতার উপর গড়ে উঠে । আক্বিদার ক্ষেত্রে নয়। এ জন্য মাযহাব ও ধর্ম এক বিষয় নয়।

আমলের নীতি ও তরিকা আলাদা আলাদা হওয়াটা নবীজি (দরূদ) থেকেই প্রকাশিত। তাই ইমামগণ ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতিতে আমলের রায় প্রদান করলে ও কেউ কারো প্রতি বিরূপ বা বিরাগভাজন নন। একজনের প্রতি আরেকজনের রয়েছে প্রগাঢ় ভালবাসা ও শ্রদ্ধাবোধ। উপরন্তু আক্বিদা বা বিশ্বাসের ক্ষেত্রে কোন ভিন্নতা না থাকায় মাযহাবের সকল ইমামগণ একই আক্বিদার উপর তথা আহলে সুন্নাত ওয়াল জা’মাতের উপর অবিচল রয়েছেন।

মাযহাবের প্রয়োজনীয়তাঃ আমলের ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতি বা তরিকা দয়াল নবীজি (দরূদ) থেকেই প্রকাশিত হয়েছে। তাই মাযহাবের উৎপত্তি সেখান থেকেই । আসুন বিষয়টি একটু খতিয়ে দেখি । যেমন নামাযে হাত বাঁধার বিষয় عن قبيضة بن هلب عن ابيه قال كان رسول الله صلي الله عليه وسلم يومنا فياخذ شماله بيمنه অর্থাৎ কুবায়দা ইবনে হলব তাঁর বাবা থেকে বর্ণনা করেন – আল্লাহর নাবী (দরূদ) আমাদের ইমামতি করতে তাঁর ডান হাত দিয়ে বাম হাত ধরতেন । (জামে’ তিরমিযি হাদিস নং ২৫২)

عن معاذبن جبل قال كان النبي صلي الله عليه وسلم اذا كان في صلاته رفع يديه قبالة اذنيه فاذا كبر ارسلهما ثم سكت و ربما رايته يضع يمينه علي يساره অর্থাৎ মুয়াজ ইবনে জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন আল্লাহর নাবী (দরূদ) যখন নামায পড়তেন তার হাতদ্বয় তাকবীরের সময় কান বরাবর উঠাতেন। অতঃপর যখন তাকবীর দিতেন উভয় হাত ছেড়ে দিতেন । তারপর চুপ হয়ে যেতেন । আবার কখনো দেখতাম তাঁর ডানহাত বাম হাতের উপর রাখতেন । (তাবারানী হাদিস নং-১৬৫৯৩)

عن علقمة بن واءل بن حجر عن ابيه قال رايت النبي صلي الله عليه وسلم وضع يمينه علي شماله تحت السرة অর্থাৎ -আলক্বামা ইবনে ওয়াইল ইবনে হাজর তার বাবা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন আমি রাসূলুল্লাহ (দরূদ) কে দেখেছি তিনি তাঁর ডান হাত কে বাম হাতের উপরে নাভীর নীচে রাখতেন । (মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা ১ম খণ্ড হাদিস নং- ৪২৭ মুসলিম শরীফ হাদিস নং ৪০১ )

সহিহ বোখারী শরীফে باب وضع اليمني علي اليسري অধ্যায়ে ৭৪০ নং হাদিসে রয়েছে- قال سهل بن سعد كان الناس يومرون ان يقع الرجل يده علي ذراعه اليسري في الصلاة قال ابو حازم لا اعلمه الا ينمي ذالك الي النبي صلي الله عليه وسلم

عن طاوس قال كان رسول الله صلي الله عليه وسلم يضع يده اليمني علي يده اليسري ثم يشد بينهما علي صدره و هو في الصلاة অর্থাৎ - হযরত ত্বাউস রাঃ থেকে বর্ণিত তিনি বলেন আল্লাহর রাসূল (দরূদ) নামাজে তাঁর ডান হাত কে বাম হাতের উপর রেখে বুকের উপর শক্ত করে বাঁধতেন ।( সুনানু আবু দাঊদ হাদিস নং ৭৫৯)

উপরোল্লেখিত হাদিস সমূহ লক্ষ্য করলে প্রথম হাদিসে দেখা যায় নবীজি (দরূদ) ডান হাতকে বাম হাতের উপর বাঁধতেন। দুই নং হাদিসে প্রতীয়মান হয় নবীজি (দরূদ) তাকবীর দিয়ে উভয় হাত মোবারক দুই পাশে ছেড়ে দিতেন ,ঝুলিয়ে দিতেন। তিন ও চার নং হাদিস দ্বারা প্রমাণ হয় দয়াল নবী (দরূদ) ডান হাতকে বাম হাত মোবারকে দিয়ে নাভীর নীচে বাঁধতেন। পাঁচ নং হাদিস দ্বারা প্রতিভাত হয় যে, তিনি বুকের উপর হাত বাঁধতেন। এখন নিশ্চিতরূপে এমন কোন প্রমাণও নাই যে, এক হাদিসকে রেখে অপর হাদিসকে বাদ দেয়া যাবে। তাই যে সাহাবী দয়াল নবীজি (দরূদ) কে যেভাবে নামাজে হাত বাঁধতে দেখেছেন সেভাবে বর্ণনা করেছেন। এবং তিনি যে অঞ্চলে বসবাস করেছেন লোকদেরকে সেভাবে বলে আমল করিয়েছেন। আর মাযহাবের ইমামগণ ও যে সাহাবী থেকে যেরূপ বর্ণনা শুনেছেন সে রূপ ফায়সালা দিয়ে তার অনুসারিদেরকে সেরূপ আমল শিক্ষা দিয়েছেন। সুতরাং আমলের পদ্ধতিতে ভিন্নতা সৃষ্টি হয়েছে । ঘটেছে মাযহাবের উদ্ভব । তা না করে যদি কেবল মাত্র একটি বর্ণনাকে পালন করা হতো তাহলে আল্লাহর রাসূলের কৃত অপরাপর আমল পদ্ধতি অপালনীয় থেকে যেত । আর বিশ্বস্ত সাহাবীগণ হয়ে যেতেন সন্দিহান । অথচ আল্লাহর রাসূলের সাহাবীগণ সত্যের মাপকাঠি। তাদের দ্বারা আমরা কোরআন পেয়েছি। লাভ করেছি হাদিসের অমীয় সওগাত। তাদের হাতেই দ্বীনের আমানত যথাযথভাবে সংরক্ষিত । আর মাযহাবের ইমামগণ তাদের সে জ্ঞান সাগরের  মনি-মাণিক্য কুড়িয়ে আমাদের জন্য শৃংখলাবদ্ধ করে রেখে গিয়েছেন । তাই তাদের কাছে গোটা মুসলিম উম্মাহ ঋনী । লেখার কলেবর বৃদ্ধি হয়ে যাওয়ায় এখানেই শেষ করে পরবর্তীতে ‘কেন মাযহাব মানতে হবে’? এ বিষয়ে আলোকপাত করার আশা পোষণ করি । আল্লাহ তাওফিক্বদাতা ।

 

৬৩৩

কোন তথ্যসূত্র নেই

আপনার জন্য প্রস্তাবিত

ইসলামিক ফাউন্ডেশন

To preach and propagate the values and ideals of Islam, the only complete code of life acceptable to the Almighty Allah, in its right perspective as a religion of humanity, tolerance and universal brotherhood and bring the majority people of Bangladesh under the banner of Islam

অফিসিয়াল ঠিকানা: অফিসিয়াল ঠিকানা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, আগারগাঁও, শের-এ- বাংলা নগর, ঢাকা -১২০৭