সংবাদ :
জাতীয় : জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত- বাংলাদেশের আকাশে আজ পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে, ১০ জুলাই রবিবার সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে ইসলামিক বিশ্ব : আরাফাতে খুতবা দিবেন শায়খ ড. মুহাম্মাদ আবদুল করীম , হজের খুতবা সরাসরি সম্প্রচার হবে বাংলাসহ ১৪ ভাষায় আন্তর্জাতিক : আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় ৩য় স্থান অর্জনকারী সালেহ আহমদ তাকরিমকে সংবর্ধনা প্রদান করল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন

  • টেক্সট সাইজ
  • A
  • A
  • A
  • |
  • রং
  • C
  • A
  • A
  • A

তাওবার গুরুত্ব ফজিলত ও পদ্ধতি।
প্রিন্ট
প্রকাশঃ : মঙ্গলবার ১১/০৯/২০১৮

"তওবা করার গুরুত্ব,ফযিলত ও নিয়ম-কানুন৷"**

তওবা করার পদ্ধতি:

পবিত্রতা অর্জন করে নিজে নিজে বলবে-
আমি ঈমান আনলাম আল্লাহ রাসূলের উপর। আমি ঈমান আনলাম কোরআন ও হাদীসের উপর। আল্লাহপাক কালামে পাকের আয়াতে কারীমার যে ভাবার্থ বা মুরাদ নিয়েছেন সে মুরাদের উপর ঈমান আনলাম। রাসূলেপাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদিসশরীফের যে ভাবার্থ বা মুরাদ নিয়েছেন সেই মুরাদের উপর ঈমান আনলাম। আমি সকল বাতিল দ্বীনের উপর বেজার হলাম। আমি আমার ঈমান তাজা করলাম। 

اشهد ان لااله الا الله وحده لاشريك له واشهد ان محمد عبده ورسوله

উচ্চারণ : আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু ওয়াশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়ারাসূলুহু।

অর্থ : আমি স্যা দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া ইবাদত বন্দেগি পাওয়ার উপযুক্ত কোন মাবুদ নেই। আল্লাহ এক তাঁর কোন শরিক নেই। আমি আরও স্যা দিচ্ছি যে, হযরত মোহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর প্রেরিত, আল্লাহর উপাসক ও আল্লাহর রাসূল।

(তারপর বলবেন) হে আল্লাহ! আমি তওবা করছি জীবনের সমস্ত গোনাহ হতে। হে আল্লাহ জানা অজানা সগিরা-কবিরা,প্রকাশ্যে-গোপনে, বুঝে-না বুঝে যত গোনাহ করেছি, জীবনের সমস্ত গোনাহকে তোমার শাহানশাহী দরবারে হাজির করে তওবা করছি। আমাদের তওবাকে কবুল করুন। জীবনের সমস্ত গোনাহ-খাতা মাফ করুন। অতঃপর ‘ছাইয়্যিদুল ইস্তেগফার’ পড়বেন-

সায়িদুল ইস্তেগফার

اللهم انت ربى لا اله الا انت خلقتنى وانا عبدك وانا على عهدك ووعدك ما استطعت ابوء لك بنعمتك على وابوء لك بذنبى فاغفرلى فانه لا يغفر الذنوب الا انت- اعوذ بك من شر ما صنعت- بخارى شريف جلد ثانى۹۳۶

ভাবার্থ: আল্লাহ তুমি আমার প্রভু! তুমি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমার বান্দা। আমি আমার সাধ্যনুযায়ী তোমার চুক্তি ও অঙ্গীকারের উপর আছি। আমি স্বীকার করি আমার প্রতি তোমার দানকে এবং স্বীকার করি আমার অপরাধকে। সুতরাং তুমি আমাকে মা কর। কেননা, তুমি ব্যতীত অপরাধরাশি মা করার আর কেউ নেই। আমি আমার কৃতকার্যের মন্দ পরিণাম হতে তোমার নিকট আশ্রয় চাই।

ফজিলত : বুখারিশরীফ ২য় জিলদের ৯৩৬ পৃষ্ঠা ও মিশকাতশরীফের ২০৪ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে- নূরনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন- ‘যে ব্যক্তি উপরোক্ত সায়্যিদুল ইস্তেগফারের উপর বিশ্বাস স্থাপন করে রাতের বেলায় পাঠ করে অতঃপর ঐ রাতেই মৃত্যুবরণ করে সে ব্যক্তি জান্নাতি হবে। আর যদি সকাল বেলা পাঠ করে আর ঐ দিনেই মারা যায় তাহলেও সে ব্যক্তি জান্নাতি হবে।

আবুদাউদশরীফে বর্ণিত আছে যে, রাসূলেপাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি বেশি বেশি করে তওবা করবে আল্লাহতা’য়ালা তার সমস্ত অসুবিধা দূর করে দিবেন এবং তাকে এত বেশি পরিমাণ সম্পদ দান করবেন যা সে কল্পনা করতেও পারে না।

তওবা ব্যতিরেকে ইবাদত বন্দেগি সহিহ-শুদ্ধ হয় না। পীরে কামেল মাখদুম সৈয়দ আলী হুজুবিরী উরফে হযরত দাতাগঞ্জ বখ্শ রাদিয়াল্লাহু আনহু তদীয় ‘কাশহুল মাহজুব’ নামক কিতাবে উল্লেখ করেছেন- ইমাম জাফর বিন মোহাম্মদ ছাদেক রাদিয়াল্লাহু আনহু এরশাদ করেছেন-

لاتصح العبادة الابالتوبة لان الله تعالى قدم التوبة على العبادة قال الله تعالى التائبون العابدون الاية-

অর্থাৎ তওবা ব্যতীত ইবাদত বন্দেগি সহিহ-শুদ্ধ হয় না। এজন্য আল্লাহতা’য়ালা কালামেপাকে ইবাদতের পূর্বেই তওবা উল্লেখ করেছেন। সুতরাং আল্লাহতা’য়ালা নিজেই এরশাদ করেছেন-আল্লাহর শাহানশাহী দরবারে তওবাকারীরাই ইবাদতকারীরূপে গণ্য  হয়ে  থাকে।  কেননা তওবা হল সর্বস্তরের ইবতেদা বা প্রথম উবুদিয়ত বা বন্দেগি হল তারই সর্বশেষ স্তর।

আল্লাহতা’য়ালা যখনই গোনাহগার বান্দাদের উল্লেখ করেছেন তখনই তওবার নির্দেশের মাধ্যমে উল্লেখ করেছেন। আল্লাহতা’য়ালা নিজেই এরশাদ করেছেন-

توبوا الى الله جميعا ايها المؤمنون

অর্থাৎ হে ঈমানদারগণ আল্লাহতা’য়ালার শাহানশাহী দরবারে সমস্ত গোনাহ থেকে তওবা কর।

অপরদিকে যখনই আল্লাহতা’য়ালা তাঁর হাবিব সায়্যেদে আলম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উল্লেখ করেছেন তখন উবুদিয়ত ও বন্দেগির দ্বারা তাঁর হাবিবের উল্লেখ করেছেন। আল্লাহতা’য়ালার বাণী-

فاوحى الى عبده ما اوحى

অর্থাৎ ‘আমি আমার প্রিয় খাস বান্দার উপর যে ওহি নাজিল করতে পছন্দ করি তাই নাজিল করে থাকি।’

উপরের দলিলভিত্তিক আলোচনার দ্বারা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হল, আল্লাহর শাহানশাহী দরবারে তওবা করা ইবাদতের প্রথম স্তরের মধ্যে গণ্য। কারণ তওবা করলেই ইবাদতের প্রেরণা জন্মে এবং একজন ঈমানদার উবুদিয়ত ও বন্দেগির মাধ্যমে একজন কামেল ওলির দর্শন লাভ করতে সম হয়। এজন্যই সদা-সর্বদা তওবা করার অভ্যাস করে নিতে হবে।

আজ থেকে প্রায় পাঁচশত বৎসর পূর্বে মীর আব্দুল ওয়াহিদ বুলগেরামী রাদিয়াল্লাহু আনহু তদীয় سبع سنابل شريف নামক কিতাবে উল্লেখ করেন-

مریدی چیشت- توبہ از گناہاں- شدن تقصیرہا راعذر خواہاں مریدی عقد توبہ ستن امد- زاخلاق ذمیمہ رشتن آمد چودین- بے توبہ- در نفصان وشین ست مریدی عین نص وفرض عین ست-

অর্থাৎ ‘ (ক) হক্বানী পীর ও মুর্শিদের মাধ্যমে জীবনের সমস্ত গোনাহ থেকে তওবা করা এবং স্বীয় অপরাধের ওজরখাহী আল্লাহ তায়ালার শাহানশাহী দরবারে পেশ করে আল্লাহতা’য়ালার সন্তুষ্টি লাভ করার এরাদা করাকে মুরিদ বলা হয়ে থাকে।

(খ) মুরিদী অর্থাৎ গোনাহ থেকে তওবা করা এবং শরিয়তের বিপরীত কথাবার্তা থেকে বিরত থাকার মতা অর্জনের চেষ্টা করাকেই মুরিদ বলা হয়ে থাকে।

(গ) কেননা ঈমানদারগণ অবশ্যই সদাসর্বদা তওবা করার অভ্যাস করতে হবে। এজন্য যে, তওবা ব্যতিরেকে দ্বীন ইসলাম ত্রুটিপূর্ণ অবস্থায় অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকে।

সুতরাং একান্তই প্রয়োজন, এমনকি ঈমানদারের জন্য ফরজে আইন বা অকাট্য দলিল দ্বারা প্রমাণিত।’

উপরোক্ত দলিলভিত্তিক আলোচনা দ্বারা স্পষ্ঠভাবে প্রমাণিত হল, প্রত্যেক ঈমানদার মুসলমানের জন্য হক্বানী পীর ও মুর্শিদের মাধ্যমে তওবা করা একান্ত প্রয়োজন।

অপরদিকে হক্বানী পীর ও মুর্শিদের উসিলার মাধ্যমে  আল্লাহর হাবিব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে বায়আতে রাসূল গ্রহণ করা সুন্নত।
 

৮৮৪

কোন তথ্যসূত্র নেই

আপনার জন্য প্রস্তাবিত

ইসলামিক ফাউন্ডেশন

To preach and propagate the values and ideals of Islam, the only complete code of life acceptable to the Almighty Allah, in its right perspective as a religion of humanity, tolerance and universal brotherhood and bring the majority people of Bangladesh under the banner of Islam

অফিসিয়াল ঠিকানা: অফিসিয়াল ঠিকানা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, আগারগাঁও, শের-এ- বাংলা নগর, ঢাকা -১২০৭