সংবাদ :
জাতীয় : জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত- বাংলাদেশের আকাশে আজ পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে, ১০ জুলাই রবিবার সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে ইসলামিক বিশ্ব : আরাফাতে খুতবা দিবেন শায়খ ড. মুহাম্মাদ আবদুল করীম , হজের খুতবা সরাসরি সম্প্রচার হবে বাংলাসহ ১৪ ভাষায় আন্তর্জাতিক : আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় ৩য় স্থান অর্জনকারী সালেহ আহমদ তাকরিমকে সংবর্ধনা প্রদান করল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন

  • টেক্সট সাইজ
  • A
  • A
  • A
  • |
  • রং
  • C
  • A
  • A
  • A

গুনাহ মাফের মাস রমজান
প্রিন্ট
প্রকাশঃ : রবিবার ১০/০৬/২০১৮

ফেরদৌস ফয়সাল

পাপ ক্ষমার সর্বোত্তম মাস হলো রমজান। রমজানের দিনগুলোতে আমরা যদি একান্তই আল্লাহর জন্য রোজা রাখি এবং নিজের দোষ-ত্রুটির ক্ষমা চাই, তাহলে আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করবেন এবং অতীতের সব গুনাহও ক্ষমা করবেন। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কোরআন মজিদে এরশাদ করেন, ‘আর তিনিই (আল্লাহ) তাঁর বান্দাদের তওবা কবুল করেন এবং পাপগুলো ক্ষমা করে দেন।’ (সুরা আশ শুরা: ১৫)

হযরত আবু সাঈদ খুদার (রা.) বর্ণনা করেন, হুজুর (সা.) বলেছেন, ‘যখন কেউ রমজানের প্রথম দিন রোজা রাখে, তখন তার আগের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। এমনিভাবে রমজান মাসের সমস্ত দিন চলতে থাকে এবং প্রতিদিন তার জন্য ৭০ হাজার ফেরেশতা সকালের নামাজ থেকে শুরু করে তাদের পর্দার অন্তরালে যাওয়ার আগ পর্যন্ত তার ক্ষমার জন্য দোয়া করতে থাকে।’ (কানজুল উম্মাল, কিতাবুস সাওম)।

হযরত উম্মে সালমা (রা.) বর্ণনা করেন, নবী করিম (সা.) বলেন, ‘রজব আল্লাহর মাস, শাবান আমার মাস, রমজান আমার উম্মতের মাস।’ রাসুল (সা.) বলেন: ‘যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াবের নিয়তে রমজান মাসে রোজা রাখবে, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। যে ব্যক্তি ইমানের সহিত সওয়াবের নিয়তে রমজান মাসে তারাবিহর নামাজ পড়বে, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।’

‘যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াবের নিয়তে শবে কদরে ইবাদত করবে, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।’

(বুখারি ও মুসলিম)।

একবার মহানবী (সা.) বলেন, ‘ফেরেশতারা রোজাদারের জন্য দিন-রাত ইস্তিগফার করতে থাকেন’ (মাজমাউজ জাওয়ায়েদ)। হাদিসে এ বিষয়ে আরও বর্ণিত হয়েছে যে হজরত আবদুর রহমান বিন আওফ (রা.) বর্ণনা করেন, হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান মাসে ইমানের সঙ্গে সওয়াব এবং এখলাসের সঙ্গে ইবাদত করে, সে নিজ গুনাহ থেকে এভাবে পবিত্র হয়ে যায়, যেভাবে সেদিন সে তার মাতৃগর্ভ থেকে জন্মলাভ করেছিল।’ (সুনানে নিশাই, কিতাবুস সাওম)।

হযরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বর্ণনা করেন, হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘যে বান্দা খোদার পথে এক দিন রোজা রাখে আল্লাহ তায়ালা তার চেহারা থেকে আগুনকে দূরে সরিয়ে দেন।’ (সহিহ মুসলিম)।

রমজানে পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ অবশ্যই মসজিদে জামাতে পড়ার চেষ্টা করতে হবে। তারাবিহর নামাজ জামাতে পড়ার জন্য যথাসময়ে মসজিদে যাওয়ার পূর্বপ্রস্তুতি থাকতে হবে। খতমে তারাবিহ পড়া সবচেয়ে উত্তম। ইবাদতের সময়ের সঙ্গে মিলিয়ে কাজকর্মের রুটিন পরিবর্তন করে পুনর্নির্ধারণ করতে হবে। রমজানের পাঁচটি সুন্নত পালনে সচেষ্ট থাকতে হবে। যথা: ১. সাহ্‌রি খাওয়া, ২. ইফতার করা, ৩. তারাবিহর নামাজ পড়া, ৪. কোরআন তিলাওয়াত করা, ৫. ইতিকাফ করা। যাঁরা কোরআন তিলাওয়াত জানেন না, তাঁরা শেখার চেষ্টা করবেন। যাঁরা তিলাওয়াত জানেন, তাঁরা শুদ্ধ করে তিলাওয়াত করার চেষ্টা করবেন। যাঁরা বিশুদ্ধ তিলাওয়াত জানেন, তাঁরা অর্থ বোঝার চেষ্টা করবেন। যাঁরা তরজমা জানেন, তাঁরা তফসির অধ্যয়ন করবেন। সাহাবায়ে কেরাম সাধারণত প্রতি সপ্তাহে এক খতম (পূর্ণ কোরআন করিম তিলাওয়াত সম্পন্নকরণ) করতেন—এভাবে প্রতি মাসে অন্তত চার খতম হয়ে যেত। আবার সেসব সাহাবাই দীর্ঘ এক যুগ ধরে মাত্র একটি সুরা গভীরভাবে অধ্যয়ন করেছেন।

রমজানের অতীব গুরুত্বপূর্ণ একটি সুন্নত হলো ইতিকাফ। রমজানের শেষ দশক ইতিকাফ করা সুন্নতে মুআক্কাহ কিফায়া। এর কম সময় ইতিকাফ করলে তা নফল হিসেবেই গণ্য হবে। পুরুষেরা মসজিদে ইতিকাফ করবেন। নারীরাও নিজ নিজ ঘরে নির্দিষ্ট কক্ষে ইতিকাফ করতে পারবেন। রমজানের বিশেষ তিনটি আমল হলো: ১. কম খাওয়া, ২. কম ঘুমানো এবং ৩. কম কথা বলা। হারাম থেকে বেঁচে থাকা, চোখের হেফাজত করা, কানের হেফাজত করা এবং জবানের হেফাজত করা।

তাকওয়া অর্জনই রমজানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেছেন: ‘হে মুমিনগণ! তোমাদের প্রতি রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের প্রতি; আশা করা যায় যে তোমরা তাকওয়া অর্জন করবে।’ (সুরা বাকারার ১৮৩ নম্বর আয়াত)। রমজান হলো তাকওয়ার প্রশিক্ষণ। লক্ষ্য হলো রমজানের বাইরের বাকি ১১ মাস রমজানের মতো পালন করার সামর্থ্য অর্জন করা, দেহকে হারাম খাদ্য গ্রহণ ও হারাম কর্ম থেকে বিরত রাখা এবং মনকে অপবিত্র চিন্তাভাবনা, হারাম কল্পনা ও পরিকল্পনা থেকে পবিত্র রাখা। যে ব্যক্তি রোজার হেফাজত করে এবং পরিপূর্ণ শর্ত সাপেক্ষে রোজা রাখে আর এ দিনগুলো ইবাদতে রঙিন করে—তার জন্যই কেবল এই রোজা শয়তানি শক্তির মোকাবিলায় ঢাল হিসেবে কাজ করবে।

ফেরদৌস ফয়সাল সাংবাদিক

[email protected]

সূত্র: প্রথম আলো

৪৪৫

কোন তথ্যসূত্র নেই

আপনার জন্য প্রস্তাবিত

ইসলামিক ফাউন্ডেশন

To preach and propagate the values and ideals of Islam, the only complete code of life acceptable to the Almighty Allah, in its right perspective as a religion of humanity, tolerance and universal brotherhood and bring the majority people of Bangladesh under the banner of Islam

অফিসিয়াল ঠিকানা: অফিসিয়াল ঠিকানা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, আগারগাঁও, শের-এ- বাংলা নগর, ঢাকা -১২০৭