সংবাদ :
জাতীয় : জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত- বাংলাদেশের আকাশে আজ পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে, ১০ জুলাই রবিবার সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে ইসলামিক বিশ্ব : আরাফাতে খুতবা দিবেন শায়খ ড. মুহাম্মাদ আবদুল করীম , হজের খুতবা সরাসরি সম্প্রচার হবে বাংলাসহ ১৪ ভাষায় আন্তর্জাতিক : আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় ৩য় স্থান অর্জনকারী সালেহ আহমদ তাকরিমকে সংবর্ধনা প্রদান করল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন

  • টেক্সট সাইজ
  • A
  • A
  • A
  • |
  • রং
  • C
  • A
  • A
  • A

মৃত ব্যক্তির নামে কুরবানি করা প্রসঙ্গে
প্রিন্ট
প্রকাশঃ : মঙ্গলবার ১০/০৭/২০১৮

এতে কোন সন্দেহ নেই যে, কুরবানী একমাত্র আল্লাহর জন্য। তাঁর নামেই কুরবানী করা ফরজ ও অপরিহার্য। যেখানে কোন আপোষ নেই। জবেহের সময় কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে, জেনে শুনে এবং সুস্হ মস্তিস্কে আল্লাহর নাম নেয়া পরিত্যাগ করলে জবেহকৃত পশুটি যেমন হারাম হতে বাধ্য, ঠিক তেমনিভাবে বেঈমান হতেও দেরী নেই।

*** আমাদের চট্টগ্রামে কুরবানীর পশু কেনা ও অংশীদার মনোনীত করার ক্ষেত্রে এমন বাক্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে , যা ছোট শির্কের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায়না ।

*** বলা হয়ে থাকে " আমার নামে এক শরীক রেখো । আমার বাবা'র নামে এক শরীক । আমার ভায়ের নামে কুরবানী করতে বলুন । ইত্যাদি ইত্যাদি ! এসব কুপ্রথা থেকে আমরা হেদায়াতের পথে আদৌ ফিরে আসতে পারবো কিনা জানিনা । বলা উচিত " আমার পক্ষ থেকে । আমার বাবা'র পক্ষ থেকে । অমুকের পক্ষ থেকে ইত্যাদি । "

*** কুরবানীর ভাষা হতে হবে " ইহা আমার পক্ষ হতে মহান আল্লাহর নামে ।" অথচ আমরা ভাষা ব্যবহার করছি ঠিক উল্টো । অর্থাৎ আমার নামে ।" পরহেজগার হওয়া সত্ত্বেও নিজের অজান্তে এমন ভুলের কারণে সমস্যা হতেই পারে । আলেম সমাজের উচিত এসব বিষয়ে সাধারণ মুসলমানদেরকে জুমা'র খোৎবা ও অন্যান্য বয়ানের মাধ্যমে অবহিত করা । অন্যথায় আলেমগণও গুনাহের অংশ নেবেন বৈকি !

*** যদি কর্তা বা তাঁর সন্তানদের কেউ জবেহ করবেন , বলতে হবে
هاذا مني و من اهلي
" ইহা আমার ও আমার পরিবারের পক্ষ থেকে ।" শরিকী কুরবানীর ক্ষেত্রে যে কোন সদস্য কুরবানীর পশু জবেহ করার প্রাক্কালে বলবেন
هاذا مني و من شركائنا
" ইহা আমার ও আমার অংশীদারদের পক্ষ থেকে ।"
যদি কোন ইমাম সাহেব কিংবা বহিরাগত কাউকে দিয়ে এ শুভ কাজটি করাতে চান , পশু জবেহের সময় ইমাম সাহেব বা অন্য যে কাউকে বলতে হবে ,
هاذا من فلان و أهله
" ইহা অমুক ও তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে ।" উদাহরণ স্বরুপ যদি কর্তার নাম আব্দুল্লাহ হয়ে থাকে, বলতে হবে
هذا من عبدالله و أهله
" ইহা আব্দুল্লাহ ও তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে ।" আর যদি শরিকী কুরবানী হয়ে থাকে, ইমাম সাহেবকে বলতে হবে
هاذا من هؤلاء الأشخاص
" ইহা এ লোকদের পক্ষ থেকে ।"
অত:পর সর্বশেষ এ বাক্য দ্বারা চূড়ান্তভাবে কুরবানী আরম্ভ করতে হবে
اللهم هاذا منك ....

* মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কুরবানী করার কোন দলীল হাদিসে নেই। ইহা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমাদের আলেমগণ কোন ধরণের দূর্বল, অকেজো হাদিস বা মাশায়েখের ফতওয়া প্রদানের মাধ্যমে মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কুরবানী করার প্রচলন সমাজগুলোতে চালু রেখেছেন, আমার জানা নেই। কারণ খোলাফায়ে রাশেদীন থেকে শুরু করে প্রখ্যাত ইমাম আবু হানিফা রহ: পর্যন্ত কারো কাছ থেকে মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কুরবানী করার কোন ফতওয়া বা আমল প্রমাণিত নয়। সুতরাং এ জাতীয় কুরবানী বিশুদ্ধ না হওয়ার কারণে গ্রহণযোগ্যতা শূণ্য। কেবলমাত্র গোশত খাওয়া হবে । এর বাইরে কিছু নেই ।

*** মহানবী সা: সাইয়্যিদাহ খাদিজা রা: ও সাইয়্যিদুনা হামযাহ রা:'র মৃত্যেুর পর তাঁদের পক্ষ থেকে একবার মাত্র কুরবানী দিয়েছিলেন । যেহেতু ইসলাম ধর্মে তাঁদের অবদান সুস্পষ্ট ছিলো । তাও একবার মাত্র কুরবানী করা হয় । মহানবী সা: তাঁদের পক্ষ থেকে প্রতি বছর কুরবানী করেননি । সাহাবায়ে কেরামগণও এ কাজটির পুণরাবৃত্তি করেননি । সুতরাং তাঁদের জন্য মৃত্যুের পর একবার মাত্র কুরবানী করা সম্পূর্ণ Especial ব্যাপার ছিলো ।

*** কোন ব্যক্তি যদি মৃত্যুের পূর্বে ওসিয়ত করে যান , ওহে সন্তানেরা ! আমার মৃত্যুের পর আমার রেখে যাওয়া সম্পদ থেকে তোমরা আমার পক্ষে কুরবানী করিও ।" এমতাবস্হায় মৃত ব্যক্তির সম্পদ যদি থেকে থাকে, সেখান থেকে তাঁর পক্ষে কুরবানী করা অত্যাবশ্যক । তবে একবার মাত্র । প্রতি বছর নয় । আর যদি ওসিয়তকারী মৃত ব্যক্তির সম্পদ না থেকে থাকে, তাঁর পক্ষে কুরবানী দেয়া অত্যাবশ্যক নয় তবে সন্তানেরা নিজেদের টাকা থেকে সে ওসিয়ত একবারের জন্য পালন করতে চায়লে কোন সমস্যা নেই ।

*** আপনি আপনার মৃত মা- বাবাকে খুব ভালোবাসেন । অবশ্যই । যখনই আপনি পারিবারিকভাবে কিংবা শরিকী কুরবানী করেন না কেন, মৃত মা- বাবাকে ছওয়াব লাভের মধ্যে শামিল করার নিয়ত করতে পারেন। অর্থাৎ এভাবে বলা :
হে আল্লাহ ! আমি ও আমার পরিবারের পক্ষ থেকে করতে যাওয়া এ কুরবানীর ছওয়াবের মধ্যে আমার মৃত মা- বাবাকেও অন্তর্ভূক্ত করুন। অনুরুপভাবে মৃত দাদা-দাদী, নানা-নানী সহ সকলের জন্য নিয়ত করতে পারেন । মৃত ব্যক্তির জন্য ইহাই বিশুদ্ধ মত ।

*** সরাসরি মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কুরবানী করা শরিয়ত পরিপন্হী ও বাতিল । শুধুমাত্র গোশ্ত খাওয়া ছাড়া আর কিছুই নেই ।

মোট কথা ঃ

কুরবানী হতে হবে জীবিত মানুষের পক্ষ থেকে । মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কুরবানী করা বৈধ নয় । ওসিয়ত থেকে থাকলে একবারের জন্য বৈধ মাত্র । সইয়্যিদুনা হামযাহ রা: ও মা খাদিজা রা:’র বিশেষ অবদানের কারণে মহানবী সা: তাঁদের পক্ষ থেকে একবার মাত্র কুরবানী দেন ।

১৩৪৫

কোন তথ্যসূত্র নেই

আপনার জন্য প্রস্তাবিত

ইসলামিক ফাউন্ডেশন

To preach and propagate the values and ideals of Islam, the only complete code of life acceptable to the Almighty Allah, in its right perspective as a religion of humanity, tolerance and universal brotherhood and bring the majority people of Bangladesh under the banner of Islam

অফিসিয়াল ঠিকানা: অফিসিয়াল ঠিকানা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, আগারগাঁও, শের-এ- বাংলা নগর, ঢাকা -১২০৭