সংবাদ :
জাতীয় : জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত- বাংলাদেশের আকাশে আজ পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে, ১০ জুলাই রবিবার সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে ইসলামিক বিশ্ব : আরাফাতে খুতবা দিবেন শায়খ ড. মুহাম্মাদ আবদুল করীম , হজের খুতবা সরাসরি সম্প্রচার হবে বাংলাসহ ১৪ ভাষায় আন্তর্জাতিক : আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় ৩য় স্থান অর্জনকারী সালেহ আহমদ তাকরিমকে সংবর্ধনা প্রদান করল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন

  • টেক্সট সাইজ
  • A
  • A
  • A
  • |
  • রং
  • C
  • A
  • A
  • A

বিবাহবিহীন অমাহরম নারী-পুরুষ নিভৃতে থাকা প্রসঙ্গে
প্রিন্ট
প্রকাশঃ : শনিবার ০৪/০৮/২০১৮

السلام عليكم و رحمة الله وبركاته
الحمد لله وسلم على عباده الذين اصطفى: اما بعد: 

 প্রিয় রাসুল সা এর পবিত্র হাদিস

لا يخلون رجل بامرأة الا ومعها ذو محرم.. الحديث 

হযরত রাসুল সা বলেছেন, মাহরম সঙ্গী বিহীন মহিলার সাথে কোন পূরুষ যেন কখনো একাকী অবস্থান না করে।
এই পবিত্র হাদিস শরীফ সম্পর্কে কিছু কথা

'''''’'''''''’’''''

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, যে আমি রাসূল সা কে বক্তব্য দিতে শুনেছি তিনি বলেছেন, অমুহররম স্ত্রীলোকের সাথে যেন কোন পূরুষ একাকী দেখা সাক্ষাৎ না করে। এবং কোন মহিলা যেন মুহরাম সঙ্গী ছাড়া ভ্রমন না করে। 

তখন এক ব্যক্তি দাড়িয়ে প্রশ্ন করল, হে আল্লাহর রাসূল! আমার স্ত্রী তো হজ্জে গমন করার ইচ্ছা পোষণ করেছে । অথচ যুদ্ধে যাওয়ার জন্য মুজাহিদের তালিকায় আমার নাম উঠেছে। একথা শুনে রাসূল সা বললেন, তুমি চলে যাও । তোমার স্ত্রীর সাথে হজ্জে গমন কর । 
বুখারী ও মুসলিম। 

এই হাদিসের সাথে কয়েকটি শিক্ষনীয় বিষয় শংশ্লিষ্ঠ রয়েছে: 

১ম শিক্ষা

মুহররম স্ত্রীলোকগণ যাদের ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে
''''''''''''''''''''''''''
অমাহরম স্ত্রীলোকের সাথে কোন পূরুষ নিভৃত্যে অবস্থান করা, যেখানে তারা দুই জন ছাড়া অন্য কেহ থাকে না। সেখানে তারা অশ্লীলতা বা ব্যাভিচারে লিপ্ত না হলেও সেটা শয়তানের একটি ভয়ঙ্কর ফাঁদ। যার দ্বারা মু'মিনদের উপর ফিতনা বিপর্যয় চলে আসে। 

হযরত উমর রা বর্ণনা করেছেন যে, একবার রাসুল সা সাহাবীগণের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিচ্ছিলেন, তাতে রাসুল সা কঠোর ভাবে সতর্ক করছিলেন যে, সাবধান কোনো ব্যক্তি যেন কখনো (অমাহরম) মহিলার সাথে একাকি মিলিত না হয়। কেননা তারা দুজনের সাথে ৩য় জন আছে শয়তান।
মুসনদে ইমাম আহমদ 

এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, ঘরে ও অন্যান্য স্থানে ড্রাইভারের সাথে স্ত্রী লোকের নির্জন অবস্থান। এবং ঘরের মালিক বা তার সন্তান কিংবা পরিবারের যে কোন সদস্য চাকরাণীর সাথে নিভৃত্যে অবস্থান। এটা অবাধ ও সাধারণ হওয়ায় অনেকে ব্যভিচার বা নানান ধরণের ফিতনা-ফসাদ ও বিপর্যয়ের মধ্যে লিপ্ত হয়ে পড়ে। 

২য় শিক্ষা
''''''''''''''''''''''''''
যে সব নির্জন অবস্থান বা সাক্ষাৎ কে নিষেধ করা হয়েছে তার মধ্যে অত্যন্ত সাঙ্গাতিক ব্যাপার হল স্ত্রী তার স্বামীর নিকটাত্মীয়দের সাথে একাকি অবস্থান করা। যেমন স্বামীর ভাই, চাচাত ভাই, খালাত ভাই, মামাত ভাই ইত্যাদির সাথে নিভৃত্যে মিলিত হওয়া। এই জন্য নবী সা এ ব্যাপারে কঠোরতা অারোপ করেছেন। 

হযরত উকবা ইবনে আমের রা: বর্ণিত হাদিসে রাসুল সা বলেছেন, সাবধান ! তোমরা মহিলাদের আস্তানায় গমন করা থেকে বিরত হও সতর্ক থাক। তখন এক আনসারী সাহাবী প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! তা হলে الحمو  দেবরের ব্যাপারে কি হকুম হবে ? তখন রাসূল সা: বললেন, দেবর তো মৃত্যু তুল্য। 
(বুখারী-মুসলিম।)

হযরত লায়স ইবনে সা'দ রাহ: বললেন الحمو দেবর হল স্বামীর ভাই ও অনুরুপ অন্যান্য আত্বীয়গণ। চাচাত ভাই ইত্যাদি। 

হযরত ইমাম নববী রহ: বলেন- অভিধান বিশারদগণ এ ব্যাপারে একমত যে, الاحماء  হচ্ছে স্বামীর আত্বীয়-স্বজন। যেমন- চাচা, ভাই, ভাইপু, চাচাত ভাই ইত্যাদি। নবী সা এ ব্যাপারে এ জন্য কঠোরতা অারোপ করেছেন' যে লোকের তাতে অবাধভাবে মিলিত। তাদের সংমিশ্রণে অধিকাংশ লোক ফিতনায় নিমজ্জিত হয়। যা অন্যান্যরা আচও করতে পারে না । এতে করে মুসলমানদের মধ্যে আবশ্যক ভাবে ব্যাভিচারের ঘটনা ঘঠে যায়। শরিয়তের আদেশ নিষেধ অমান্য করার কারণে । আল্লাহ ও তার রাসূল সা এর বাণী শ্রবণ না করার কারণে। সেটাই তাকে ইহকাল ও পরকালে লাঞ্চনার মধ্যে নিমজ্জিত করবে। 

৩য় শিক্ষা
'''''''''''''''''''''''''''''''
সালফে সালেহীন তথা পূর্বসূরী আলেমগণ তাদের জ্ঞান, পরহেজগারীতা ও যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও অমাহরমদের সাথে নির্জনে সাক্ষাৎ করতেন না আবার নিজেদের ব্যাপারে উহাদেরকেও সতর্ক করতেন। 

হযরত উবাদা বিন সামির রা: এর এ সংক্রান্ত উক্তিটি ভেবে দেখুন তিনি বয়োবৃদ্ধ আনসারী সাহাবীদের মধ্যে অন্যতম একজন জলীলুল কদর সাহাবী। তিনি বৃদ্ধ হয়েও  লোকদেরকে নসিহত করতেন। তোমরা কি আমাকে দেখছ না যে আমি ভার দেয়া ব্যতীত দাড়াতে পারছি না এবং নম্র ও তরল না হলে খাবারও খেতে পারি না। এবং আমার সঙ্গী লিঙ্গটি  দুর্বল গেছে আনেক আগে এতদ সত্বেও কোন অমাহরম মহিলার সাথে নিভৃত্যে মিলিত হওয়া আমি আনন্দময় মনে করি না। কেননা আমার আশঙ্কা হয় যে হয়ত শয়তান এসে উহাকে উস্কে দিয়ে উত্তেজিত করে দেবে। 

হযরত মায়মুন ইবনে  মাহরান বলেন হযরত উমর ইবনে আব্দুল আজিজ রহ: আমাকে বলতেন, হে মায়মুন ইবনে মাহরান ! আমি তোমাকে একটি উপদেশ দিচ্ছি, তুমি গুরুত্ব সহকারে উপদেশটি সংরক্ষণ করবে। "সাবধান! তুমি কখনো কোন অমাহরম মহিলার সাথে একাকি দেখা-সাক্ষাৎ করবে না। এমনকি তাকে নিভৃত্যে কোরআনের তা'লীম বা শিক্ষা দেয়ার জন্য হলেও একাকি মিলিত হবে না।"

হযরত সাঈদ ইবনে মুসাইয়েব রাহ: বলেন, তখন তিনি ৮৪ বছর বয়স্ক এক চোখ কানা প্রৌঢ় ব্যক্তি। অপরের সাহায্য ব্যতীত তার জীবন অচল। তিনি মনে করেন এ অবস্থায়ও স্ত্রীলোকের ব্যাপারে শয়তান তার কাছে আসতে নিরাশ নয়। স্ত্রীলোক এর বিপর্যয়ে লিপ্ত হওয়া ছাড়া আমার কাছে অন্য কোন কিছুর আশংকা নেই। তাকে বলা হল, হে আবু মুহাম্মদ! আপনার মত লোকের কাছে স্ত্রী লোকের প্রতি আকর্ষণ থাকে না। এবং মহিলারাও এমন লোকের প্রতি (কাম ভাবের) ইচ্ছা পোষণ করেন না। তিনি বলেছেন, তাই তো আমি তোমাদেরকে বলছি। তিনি একজন দুর্বল দৃষ্টি সম্পন্ন লোক ছিলেন। 

অপর হাদিসে রাসুল সা বলেছেন,

لا تسافر المرأة الا مع ذي محرم.
কোনো মুহররম পূরুষকে সঙ্গে নেয়া ব্যতীত কোন মেয়ে লোক আদৌ কোন বিদেশ সফর করবে না। 

ইমাম আহমদ রহ: বলেছেন, 
لا يجب الحج على المرأة اذا لم تجد محرما.
মুহররম পূরুষ সাথী না পেলে মেয়েলোকের জন্য হজ্জই  ওয়াজিব হয় না 
দারে কুতনী বর্ণিত হাদিসের বিশেষ অংশ হচ্ছে: 
لا تحجن امرأة الا ومعها زوج. 
স্বামীর সঙ্গে ছাড়া কোন মেয়ে লোকই কখনও হজ্জ করতে পারে না। 
আল্লাহ পাক এরশাদ করেছেন,
واذاسألتموهن متاعا فاسألوهن من وراء حجاب. الاحزاب.
যদি তোমাদেরকে মেয়েলোকদের কাছে কিছু চাইতেই হয়, তবে পর্দার আড়ালে থেকে তাদের কাছে চাও।

৪০৪

কোন তথ্যসূত্র নেই

আপনার জন্য প্রস্তাবিত

ইসলামিক ফাউন্ডেশন

To preach and propagate the values and ideals of Islam, the only complete code of life acceptable to the Almighty Allah, in its right perspective as a religion of humanity, tolerance and universal brotherhood and bring the majority people of Bangladesh under the banner of Islam

অফিসিয়াল ঠিকানা: অফিসিয়াল ঠিকানা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, আগারগাঁও, শের-এ- বাংলা নগর, ঢাকা -১২০৭