সংবাদ :
জাতীয় : জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত- বাংলাদেশের আকাশে আজ পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে, ১০ জুলাই রবিবার সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে ইসলামিক বিশ্ব : আরাফাতে খুতবা দিবেন শায়খ ড. মুহাম্মাদ আবদুল করীম , হজের খুতবা সরাসরি সম্প্রচার হবে বাংলাসহ ১৪ ভাষায় আন্তর্জাতিক : আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় ৩য় স্থান অর্জনকারী সালেহ আহমদ তাকরিমকে সংবর্ধনা প্রদান করল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন

  • টেক্সট সাইজ
  • A
  • A
  • A
  • |
  • রং
  • C
  • A
  • A
  • A

দাম্পত্য জীবনে স্ত্রীর কর্তব্য:
প্রিন্ট
প্রকাশঃ : শুক্রবার ২০/১১/২০২০

 দাম্পত্য জীবনে স্ত্রীর কর্তব্য:

১. স্বামীর অসন্তুষ্টি থেকে বিরত থাকা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “তিনজন ব্যক্তির সালাত তাদের মাথার উপরে উঠে না। (ক) পলাতক গোলামের সালাত, যতক্ষণ না সে মনিবের নিকট ফিরে আসে। (খ) সে নারীর সালাত, যে নিজ স্বামীকে রাগান্বিত রেখে রাত যাপন করে। (গ) সে আমিরের সালাত, যার ওপর তার অধীনরা অসন্তুষ্ট।”[16]

২. স্বামীকে কষ্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকা। ইমাম আহমদ ও অন্যান্য মুহাদ্দিস বর্ণনা করেন, “দুনিয়াতে যে নারী তার স্বামীকে কষ্ট দেয়, জান্নাতে তার হুরগণ (স্ত্রীগণ) সে নারীকে লক্ষ্য করে বলে, তাকে কষ্ট দিও না, আল্লাহ তোমার সর্বনাশ করুন। সে তো তোমার কাছে ক’দিনের মেহমান মাত্র, অতি শীঘ্রই তোমাকে ছেড়ে আমাদের কাছে চলে আসবে।”[17]

৩. স্বামীর অকৃতজ্ঞ না হওয়া। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “আল্লাহ তা‘আলা সে নারীর দিকে দৃষ্টি দিবেন না, যে নিজ স্বামীর কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে না, অথচ সে স্বামী ব্যতীত স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়।”[18]

ইমাম মুসলিম বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “আমি জাহান্নাম কয়েক বার দেখেছি, কিন্তু আজকের ন্যায় ভয়ানক দৃশ্য আর কোনো দিন দেখি নি। তার মধ্যে নারীর সংখ্যাই বেশি দেখেছি। তারা বলল, আল্লাহর রাসূল কেন? তিনি বললেন, তাদের না শোকরিয়ার কারণে। জিজ্ঞাসা করা হলো, তারা কি আল্লাহর না শোকরি করে? বললেন, না, তারা স্বামীর না শোকরি করে, তার কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে না। তুমি যদি তাদের কারো ওপর যুগ-যুগ ধরে ইহসান কর, অতঃপর কোনো দিন তোমার কাছে তার বাসনা পূণ না হলে সে বলবে, আজ পর্যন্ত তোমার কাছে কোনো কল্যাণই পেলাম না।”[19]

৪. কারণ ছাড়া তালাক তলব না করা। ইমাম তিরমিযী, আবু দাউদ প্রমুখগণ সাওবান রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন, “যে নারী কোনো কারণ ছাড়া স্বামীর কাছে তালাক তলব করল, তার ওপর জান্নাতের ঘ্রাণ পর্যন্ত হারাম।”

৫. অবৈধ ক্ষেত্রে স্বামীর আনুগত্য না করা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “আল্লাহর অবাধ্যতায় মানুষের আনুগত্য করা যাবে না।”[20] এখানে নারীদের শয়তানের একটি ধোঁকা থেকে সতর্ক করছি, দো‘আ করি আল্লাহ তাদের সুপথ দান করুন। কারণ. দেখা যায় স্বামী যখন তাকে কোনো জিনিসের হুকুম করে, সে এ হাদীসের দোহাই দিয়ে বলে এটা হারাম, এটা নাজায়েয, এটা জরুরি নয়। উদ্দেশ্য স্বামীর নির্দেশ উপেক্ষা করা। আমি তাদেরকে আল্লাহর নিম্নোক্ত বাণীটি স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি, আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَيَوۡمَ ٱلۡقِيَٰمَةِ تَرَى ٱلَّذِينَ كَذَبُواْ عَلَى ٱللَّهِ وُجُوهُهُم مُّسۡوَدَّةٌ﴾ [الزمر: ٦٠]

“যারা আল্লাহর ওপর মিথ্যা আরোপ করেছে, কিয়ামতের দিন তাদের চেহারা কালো দেখবেন।” [সূরা আয-যুমার, আয়াত: ৬০]

হাসান বসরি রহ. বলেন, “হালাল ও হারামের ব্যাপারে আল্লাহ ও তার রাসূলের ওপর মিথ্যা বলা নিরেট কুফুরী।”

৬. স্বামীর বর্তমানে তার অনুমতি ব্যতীত সাওম না রাখা। সহীহ মুসলিমে আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “কোনো নারী স্বামীর উপস্থিতিতে তার অনুমতি ব্যতীত সাওম রাখবে না।”[21] যেহেতু স্ত্রীর সাওমের কারণে স্বামী নিজ প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত থাকে, যা কখনো গুনাহের কারণ হতে পারে। এখানে সাওম দ্বারা স্বাভাবিকভাবেই নফল সাওম উদ্দেশ্য। কারণ, ফরয সাওম আল্লাহর অধিকার, আল্লাহর অধিকার স্বামীর অধিকারের চেয়ে বড়।

৭. স্বামীর ডাকে সাড়া না দেওয়া। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “কোনো পুরুষ যখন তার স্ত্রীকে নিজের বিছানায় ডাকে, আর স্ত্রী তার ডাকে সাড়া না দেয়, এভাবেই স্বামী রাত যাপন করে, সে স্ত্রীর ওপর ফিরিশতারা সকাল পর্যন্ত অভিসম্পাত করে।”[22]

৮. স্বামী-স্ত্রীর একান্ত গোপনীয়তা প্রকাশ না করা: আসমা বিনতে ইয়াযিদ থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “কিছু পুরুষ আছে যারা নিজ স্ত্রীর সাথে কৃত আচরণের কথা বলে বেড়ায়, তদ্রুপ কিছু নারীও আছে যারা আপন স্বামীর গোপন ব্যাপারগুলো প্রচার করে বেড়ায়?! এ কথা শুনে সবাই চুপ হয়ে গেল, কেউ কোনো শব্দ করল না। আমি বললাম, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসূল! নারী-পুরুষেরা এমন করে থাকে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এমন করো না। এটা তো শয়তানের মতো যে রাস্তার মাঝে নারী শয়তানের সাক্ষাৎ পেল, আর অমনি তাকে জড়িয়ে ধরল, এদিকে লোকজন তাদের দিকে তাকিয়ে আছে!”[23]

৯. স্বামীর ঘর ছাড়া অন্য কোথাও বিবস্ত্র না হওয়া। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “যে নারী স্বামীর ঘর ব্যতীত অন্য কোথাও বিবস্ত্র হলো, আল্লাহ তার গোপনীয়তা নষ্ট করে দিবেন।”[24]

১০. স্বামীর অনুমতি ব্যতীত কাউকে তার ঘরে ঢুকতে না দেওয়া। সহীহ বুখারীতে আবূ হুরায়রা থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “নারী তার স্বামীর উপস্থিতিতে অনুমিত ছাড়া সাওম পালন করবে না এবং তার অনুমতি ছাড়া তার ঘরে কাউকে প্রবেশ করতে দিবে না।”[25]

১১. স্বামীর অনুমতি ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়া। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “তোমরা ঘরে অবস্থান কর” ইবন কাসীর রহ. এর ব্যাখ্যায় বলেন, “তোমরা ঘরকে আঁকড়িয়ে ধর, কোনো প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হয়ো না।”[26] নারীর জন্য স্বামীর আনুগত্য যেমন ওয়াজিব, তেমন ঘর থেকে বের হওয়ার জন্য তার অনুমতি ওয়াজিব।

স্বামীর খেদমতের উদাহরণ:

মুসলিম বোন! স্বামীর খেদমতের ব্যাপারে একজন সাহাবীর স্ত্রীর একটি ঘটনার উল্লেখ যথেষ্ট হবে বলে আমার ধারণা। তারা কীভাবে স্বামীর খেদমত করেছেন, স্বামীর কাজে সহযোগিতার স্বাক্ষর রেখেছেন ইত্যাদি বিষয় বুঝার জন্য দীর্ঘ উপস্থাপনার পরিবর্তে একটি উদাহরণই যথেষ্ট হবে, আমার দৃঢ় বিশ্বাস। আসমা বিনতে আবু বকর থেকে সহীহ মুসলিমে বর্ণিত, তিনি বলেন, যুবায়ের আমাকে যখন বিয়ে করে, দুনিয়াতে তখন তার ব্যবহারের ঘোড়া ব্যতীত ধন-সম্পদ বলতে আর কিছু ছিল না। তিনি বলেন, আমি তার ঘোড়ার ঘাস সংগ্রহ করতাম, ঘোড়া মাঠে চরাতাম, পানি পান করানোর জন্য খেজুর আঁটি পিষতাম, পানি পান করাতাম, পানির বালতিতে দানা ভিজাতাম। তার সব কাজ আমি নিজেই আঞ্জাম দিতাম। আমি ভালো করে রুটি বানাতে জানতাম না, আনসারদের কিছু মেয়েরা আমাকে এ জন্য সাহায্য করত। তারা আমার প্রকৃত বান্ধবী ছিল। সে বলল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দান করা যুবায়েরের জমি থেকে মাথায় করে শস্য আনতাম, যা প্রায় এক মাইল দূরত্বে ছিল।”[27]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যদি নারীরা পুরুষের অধিকার সম্পর্কে জানত, দুপুর কিংবা রাতের খাবারের সময় হলে, তাদের খানা না দেওয়া পর্যন্ত বিশ্রাম নিত না।”[28]

২০

কোন তথ্যসূত্র নেই

আপনার জন্য প্রস্তাবিত

ইসলামিক ফাউন্ডেশন

To preach and propagate the values and ideals of Islam, the only complete code of life acceptable to the Almighty Allah, in its right perspective as a religion of humanity, tolerance and universal brotherhood and bring the majority people of Bangladesh under the banner of Islam

অফিসিয়াল ঠিকানা: অফিসিয়াল ঠিকানা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, আগারগাঁও, শের-এ- বাংলা নগর, ঢাকা -১২০৭