সংবাদ :
জাতীয় : জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত- বাংলাদেশের আকাশে আজ পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে, ১০ জুলাই রবিবার সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে ইসলামিক বিশ্ব : আরাফাতে খুতবা দিবেন শায়খ ড. মুহাম্মাদ আবদুল করীম , হজের খুতবা সরাসরি সম্প্রচার হবে বাংলাসহ ১৪ ভাষায় আন্তর্জাতিক : আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় ৩য় স্থান অর্জনকারী সালেহ আহমদ তাকরিমকে সংবর্ধনা প্রদান করল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন

  • টেক্সট সাইজ
  • A
  • A
  • A
  • |
  • রং
  • C
  • A
  • A
  • A

রজব মাসের করণীয় আমল ও বর্জনীয় বিষয়সমূহ
প্রিন্ট
প্রকাশঃ : বৃহস্পতিবার ২১/০১/২০২১

কুরআনে বর্ণিত সম্মানিত মাসগুলোর মধ্যে একটি মাস হল, রজব মাস। আল্লাহ তায়ালার অসংখ্য গুণের একটি হল বান্দার দোষ-ত্রুটি ক্ষমা করা। গুনাহগার বান্দাকে বিভিন্ন উসিলায় ক্ষমা করেন। মহান আল্লাহ তায়া’লা তার সৃষ্টির প্রতি অনুগ্রহ করে বিভিন্ন ক্ষণে বিশেষ ফজিলত ও বরকত রেখেছেন; আর সেই সব ক্ষণগুলোতে ইবাদতে অফুরন্ত প্রতিদান দেয়ার ঘোষণা করেছেন। এ কারণে, অন্যান্য মাসের মতই রজব মাসেও বান্দাদেরকে ইবাদাতে উৎসাহদদীপ্ত তৎপরতা দেখা যায়।

আইয়ামে জাহেলিয়াতের যুগে পুরো আরবে বছরের মধ্যে চার মাস যুদ্ধ-বিগ্রহ বন্ধ থাকত। মহিমান্বিত রজব মাসে আরবে যুদ্ধ-বিগ্রহ নিষিদ্ধ ছিল। হজরত রাসূল (সা.) সঙ্গী-সাথিদের রজব মাসে যুদ্ধ-বিগ্রহ থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ প্রদান করেছেন।

এই মাসে মুহাম্মাদ (স.) মেরাজে গমন করেন। রজব মাসের একটি বিশেষ আমল হচ্ছে শবে মেরাজ। মেরাজ আরবী শব্দ যার বংলা অর্থ ঊর্ধ্বে গমন করা। মেরাজের ঘটনা সম্পর্কে কুরআনে কারীমে ইরশাদ হচ্ছে, “পবিত্র ঐ মহান সত্ত্বা যিনি রাত্রি বেলায় তাঁর বান্দাকে মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত ভ্রমণ করিয়েছেন, যার আশপাশকে আমি বরকতময় করেছি। এটা এজন্য যাতে আমি তাকে আমার নিদর্শনাবলী দেখাতে পারি।” (সূরা বনী ইসরাইল আয়াত নং-১)

রজব মাসের করণীয়

আল্লাহ কর্তৃক মনোনীত চারটি মাস, বিশেষ মর্যাদা এবং প্রভূত সম্মানে ভূষিত। যার অংশীদার রজবও, যেহেতু রজব তার একটি। আল্লাহ তাআলা বলেন:

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا لَا تُحِلُّوا شَعَائِرَ اللَّهِ وَلَا الشَّهْرَ الْحَرَامَ (الأنعام:2)

“হে মু’মিনগণ,আল্লাহর নিদর্শনসমূহ (নিষিদ্ধ বস্তু) হালাল মনে করো না এবং সম্মানিত মাসসমূহকে।” (মায়েদা-২)

অর্থাৎ আল্লাহ তাআলার সংরক্ষিত, নিষিদ্ধ বস্তুসমূহ-যেগুলোকে তিনি সম্মান প্রদর্শনের নির্দেশ দিয়েছেন এবং অনাধিকার চর্চা হতে বারণ করেছেন, সেগুলোকে তোমরা হালাল মনে কর না। যার ভেতর ভ্রান্ত বিশ্বাস, নিষিদ্ধ-কাজ, উভয়ই অন্তর্ভুক্ত।

আল্লাহ তাআলা বলেন:

فَلَا تَظْلِمُوا فِيهِنَّ أَنْفُسَكُمْ. (التوبة:36)

“এতে তোমরা নিজেদের উপর অত্যাচার (ক্ষতিসাধন) করো না।” (সূরা তাওবা : ৩৬)

অর্থাৎ, সম্মানিত মাস গুলোতে। যেহেতু আল্লাহ তাআলা এ মাস গুলোকে বিশেষ সম্মানে ভূষিত করেছেন, তাই এর সম্মান যথাযথ রক্ষা করা। এবং এর মর্যাদা ও পবিত্রতার লক্ষ্য করত: এতে কোন গুনাহে লিপ্ত না হওয়া। তদুপরি জমানার পবিত্রতার কারণে, অপরাধ হয় জঘন্য ও মারাত্মক। এ জন্যই আল্লাহ তাআলা উল্লিখিত আয়াতের মাধ্যমে নিজেদের উপর জুলুম না করার নির্দেশ দিয়েছেন। অন্যথায় স্বীয় নফ্‌সের উপর জুলুম করা বা অন্য কোন গুনাহে জড়িত হওয়া, সব মাসেই হারাম ও নিষিদ্ধ।

রজব মাসকে কেন্দ্র করে কতিপয় নতুন আবিষ্কৃত আমল, বিদআ‘ত:

১. রজব মাসের রোজা

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তার সাহাবাদের থেকে রজব মাসের রোজার ফজিলতের ব্যাপারে প্রামাণ্য কোন দলিল নেই। তবে অন্যান্য মাসের মত এ মাসেও, সপ্তাহের সোমবার, বৃহস্পতিবার, মাসের তেরো, চৌদ্দ, পনেরো তারিখ, একদিন রোজা রাখা, পরের দিন না রাখা- সওয়াবের, বৈধ ও সুন্নত। ওমর রা. রজব মাসের রোজা হতে নিষেধ করতেন। কারণ, এতে ইসলাম-পূর্ব কুসংস্কারাচ্ছন্ন জাহেলি যুগের সাথে সামঞ্জস্য বিদ্যমান।

২. রজব মাসে ওমরা

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রজব মাসে ওমরা করেছেন, এমন কোন প্রামাণ্য দলিল নাই। এ জন্য নির্দিষ্ট ভাবে রজবে ওমরা করা কিংবা এতে ওমরার বিশেষ ফজিলত আছে-বিশ্বাস করা বিদআত।

তবে, কেউ যদি স্বাভাবিক নিয়মে (ফজিলতের বিশ্বাস বিহীন) রজব মাসে ওমরা করে, তাতে দোষ নেই। কারণ, এ সময়েই তার জন্য ওমরা করার সুযোগ হয়েছে।

৩. সালাতে রাগায়েব

হাদিস শাস্ত্রে কতিপয় মিথ্যাচারের দ্বারা এ নামাজের সূচনা হয়। এ নামাজ রজবের প্রথম রাতে পড়া হয়। একে পরিত্যাগ করা, এর থেকে বিরত থাকা এবং এর সম্পাদনকারীকে নিষেধ করা কর্তব্য। কারণ, ইসলাম কোন আনুষ্ঠানিক ইবাদতকে বৈধতা দেয় না।

শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেন, ইমাম মালেক, শাফি, আবু হানিফা, সাওরি, লাইস প্রমুখের মতে সালাতে রাগায়েব বেদআত। হাদিস বিশারদগণের দৃষ্টিতে এ ব্যাপারে বর্ণিত সকল হাদিস জাল, বানোয়াট।

৪. রজব মাসের ২৭ তারিখ রজনী লাইলাতুল মিরাজ মনে করে জমায়েত হওয়া ও মাহফিল করা

মেরাজের রজনী কিংবা মেরাজের মাস নির্ধারণের ব্যাপারে কোন প্রমাণ দাঁড় করানো সম্ভব হয়নি। এ নিয়ে অনেক মতভেদ আছে, সত্য অনুদ্ঘাটিত। তাই এ ক্ষেত্রে নিশ্চুপ থাকাই শ্রেয়। মেরাজের রজনি নির্দিষ্ট করণের ব্যাপারে কোন বিশুদ্ধ হাদিস বর্ণিত হয়নি। যা বিদ্যমান আছে, সব জাল, ভিত্তিহীন। (বেদায়া নেহায়া ২:১০৭, মাজমুউল ফতওয়া ২৫:২৯৮)

অতএব এ রাতে অতিরিক্ত এবাদত ধার্য করা, যেমন রাত জাগা, দিনে রোজা রাখা, অথবা ঈর্ষা, উল্লাস প্রকাশ করা, নারী-পুরুষ অবাধ মেলা-মেশা, গান-বাদ্যসহ মাহফিলের আয়োজন করা, যা বৈধ, শরিয়ত কর্তৃক স্বীকৃত ঈদেও না-জায়েজ-হারাম, এখানের তো বলার অপেক্ষা রাখে না।

উপরন্তু মেরাজ রাত্রি ঐতিহাসিকভাবেও সুনির্দিষ্ট নয়। প্রমাণিত মনে করলেও এতে মাহফিল করার কোন জো নেই। কারণ, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবায়ে কেরাম এবং আদর্শ পূর্বসুরীগণ হতে এ ব্যাপারে কোন দিক-নির্দেশনা পাওয়া যায়নি।

৫. রজব মাসে গুরুত্বসহকারে কবর জিয়ারত করা :

এটিও বেদআত। কারণ, কবর জিয়ারত বছরের যে কোন সময় হতে পারে।

৬. রজব মাসে পশু জবাই বা এ জাতীয় কিছু উৎসর্গ করা :

জাহিলিয়াতে রজব মাসকে নির্দিষ্ট করে এ ধরনের আমল সম্পাদন করা হত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা নিষেধ করেন।

ইমাম ইবনে রজব বলেন, রজব মাসে পুন্য মনে করে জবাই করা, ঈদ-উৎসব উদযাপন করার মত।

রজব মাসে করণীয় ও বর্জনীয়

নিজের কিংবা অন্যের উপর জুলুম করা হতে বিরত থাকা, যার অর্থ - ইবাদতে আত্মনিয়োগ করা, বেশি বেশি নেক আমল করা, আল্লাহ কর্তৃক সংরক্ষিত ও নিষিদ্ধ বিষয় বস্তু পরিত্যাগ করা। অর্থাৎ, বিশুদ্ধ মনে তওবা করা, আল্লাহ তাআলার রহমত ও ক্ষমা প্রার্থনা করা, রমজান মাসের ভাগ্যবান ও লাইলাতুল কদরের মুক্তিপ্রাপ্ত হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেয়া।

রমজানের জন্য বর্তমান রজব মাস থেকে তৈরি হন। এবাদত, আনুগত্য, অনুসরণ এবং আল্লাহ তায়া’লার বশীভূত হওয়ার জন্য অন্তর ও শরীরের অনুশীলনের ব্রত গ্রহণ করুন

৪৯৯

কোন তথ্যসূত্র নেই

আপনার জন্য প্রস্তাবিত

ইসলামিক ফাউন্ডেশন

To preach and propagate the values and ideals of Islam, the only complete code of life acceptable to the Almighty Allah, in its right perspective as a religion of humanity, tolerance and universal brotherhood and bring the majority people of Bangladesh under the banner of Islam

অফিসিয়াল ঠিকানা: অফিসিয়াল ঠিকানা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, আগারগাঁও, শের-এ- বাংলা নগর, ঢাকা -১২০৭