সংবাদ :
জাতীয় : জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত- বাংলাদেশের আকাশে আজ পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে, ১০ জুলাই রবিবার সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে ইসলামিক বিশ্ব : আরাফাতে খুতবা দিবেন শায়খ ড. মুহাম্মাদ আবদুল করীম , হজের খুতবা সরাসরি সম্প্রচার হবে বাংলাসহ ১৪ ভাষায় আন্তর্জাতিক : আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় ৩য় স্থান অর্জনকারী সালেহ আহমদ তাকরিমকে সংবর্ধনা প্রদান করল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন

  • টেক্সট সাইজ
  • A
  • A
  • A
  • |
  • রং
  • C
  • A
  • A
  • A

অাদর্শ শিক্ষক
প্রিন্ট
প্রকাশঃ : বৃহস্পতিবার ১৮/০১/২০১৮

আদর্শ শিক্ষক

সাহাবিরা বসে আছেন মসজিদে।  আবু হুরায়রা রা. আনাস রা... আরও অনেকে।  রাসূলুল্লাহ সা.ও আছেন।  হঠাৎ এক বেদুইন গ্রাম্যলোক মসজিদে ঢুকল। প্রস্রাবের বেগ ছিল তার মধ্যে। কিছুক্ষণ চেষ্টা করল নিয়ন্ত্রণের। কিন্তু পারলো না। দৌঁড়ে মসজিদের এক কোণায় গিয়ে মুত্রত্যাগ করতে লাগল। তখন মসজিদ ছিল কাচামাটির। উপরে খেজুরের ডাল দিয়ে ছাদ তৈরি করা হয়েছিল।
.
সাহাবিরা যখন তাকে দেখলেন বললেন, 
(مه مه) 
- এ কী করছো তুমি? মসজিদে প্রশ্রাব করছো? 

বেদুইনের কাজটা তাদের খুব দৃষ্টিকটু মনে হলো।  এদিকে আল্লাহর রাসূল সা. সব লক্ষ করছিলেন। সাহাবাদেরকে বললেন,
- মুত্রত্যাগের মাঝখানে তাকে পেরেশান করো না। তাকে ছেড়ে দাও। শান্তিতে মুত্রত্যাগ করতে দাও । 
সাহাবায়ে কেরাম চুপ হয়ে গেলেন। 
.
প্রস্রাব করে ফেলল বেদুইন। তার কাজ শেষ হবার পর প্রাজ্ঞ শিক্ষক রাসূল সা. তাকে ডাক দিয়ে বললেন,
- প্রিয়ভাই! 
(إن هذه المساجد لا تصلح لشيء من هذا البول والقذر)
“দেখো! এসব মসজিদে মলমুত্র ত্যাগ করা ঠিক না।”
(إنما هي لذكر الله عز وجل والصلاة وقراءة القرآن)
“এগুলো তো স্রেফ আল্লাহ তা‘আলার যিকির, নামায ও কুরআন তেলাওয়াতের জন্য নির্মিত হয়েছে।”
.
রাসূলুল্লাহ সা.এর এমন সুন্দর আচরণে বেদুইনটি খুবই মুগ্ধ হলো।  বলল:
 (بأبي وأمي) 
-“আমার পিতা-মাতা আপনার উপর কুরবান হোক।” 
নিজের মুগ্ধতার প্রকাশ করতে গিয়ে সে বলল,
- তিনি আমাকে বকা দিলেন না, গালমন্দও করেন নি। 

এদিকে আল্লাহর রাসূল সা. সাহাবিদের নির্দেশ দিলেন,
- পানির মশক নিয়ে আসো এবং তা ওই প্রস্রাবের উপর ঢেলে দাও। 
.
বেদুইন লোকটি রাসূলুল্লাহ সা.এর চরিত্র ও ভালোবাসায় এমন প্রভাবিত ও মুগ্ধ হয়েছে যে, আল্লাহর রাসূল সা.এর জন্য সে দুআ করতে লাগল। সে ছিল বেদুইন, গ্রাম্য লোক। দুআর আদব-কায়দা সম্পর্কে ওয়াকিফহাল ছিল না। কিন্তু এক সাক্ষাতেই আল্লাহর রাসূল সা.কে ভীষণ ভালোবেসে ফেলে সে। আবু হুরায়রা রা. বলেন, ভালোবাসার আতিশায্যে সে বলল,
 (اللهم ارحمني ومحمدا ولا ترحم معنا أحدا)
“হে আল্লাহ! আমার ও মুহাম্মদ সা.এর প্রতি দয়া কর এবং আমরা ব্যতীত আর কাউকে এই রহমত ও দয়ায় অন্তর্ভূক্ত করো না।”
.
আল্লাহর রাসূল সা. নামায পড়ছিলেন। নামায শেষ করেন। ওই বেদুইনের দুআ শুনেছেন তিনি। তিনি মুচকি হেসে বললেন,
 (لقد حجرت واسعا) 
-“তুমি তো আল্লাহর বিশাল প্রশস্ত রহমতকে সীমাবদ্ধ করে ফেলেছো?” আল্লাহ তা‘আলা তো ইরশাদ করেছেন, 
(ورحمتي وسعت كل شيء)
 “আমার রহমত এমন বিশাল ও প্রশস্ত যে তা সবকিছুকে আচ্ছন্ন করে নেয়।” (সূরা আল আরাফ: ৭/১৫৬)
.
সম্মানিত পাঠক! উপরোক্ত ঘটনাটি সহিহ হাদিসে এসেছে। একেবারে বিশুদ্ধ ও সঠিক। আমাদের আলেম-উলামা, দায়ী, মুবাল্লিগ ও ওয়ায়েযদের জন্য এই ঘটনায় অনেক শিক্ষা রয়েছে। আল্লাহর রাসূল সা. কত নরম হৃদয়ের মানুষ ছিলেন! কত সহিঞ্চু ও উন্নত চরিত্রের অধিকারী ছিলেন! 
.
তিনি তাঁর সাথী-সাহাবিদের ভুল-ত্রুটিকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখতেন। তাদের সংশোধন করতেন। তাদের সাথে বিনম্র আচরণ করতেন। তাদের সঙ্গে কখনো কঠোর ব্যবহার করতেন না। ওই বেদুইনকে তিনি বকাঝকা করেননি.. মারধরও করেননি.. গালমন্দও করেননি। বরং নেহায়েত ভদ্রভাবে বললেন, প্রিয়সাথী! এ মসজিদসমূহ এই ধরনের কাজের জন্য নির্মিত হয়নি।
.
এই ঘটনাটি আমাদের সবার জন্য ভাবনার বিষয় নয় কি?! আসুন, আমরা মসজিদে আগত লোকদেরকে উৎসাহিত করি। তাদের ভুলত্রুটি ক্ষমা করি। তাদের সমালোচনা করার পরিবর্তে মহব্বত ও ভালোবাসা দিয়ে তাদের সংশোধন করি। কেউ যদি জ্ঞানের স্বল্পতা ও অজ্ঞতার কারণে কোনো অনুপযুক্ত কাজ করেও ফেলে, তখন তার সাথে কঠোর ব্যবহার না করি; বরং নম্রতার সাথে তাকে সতর্ক করি, যাতে সে ভবিষ্যতের জন্য বুঝে যায়।
    

৪৬০

কোন তথ্যসূত্র নেই

আপনার জন্য প্রস্তাবিত

ইসলামিক ফাউন্ডেশন

To preach and propagate the values and ideals of Islam, the only complete code of life acceptable to the Almighty Allah, in its right perspective as a religion of humanity, tolerance and universal brotherhood and bring the majority people of Bangladesh under the banner of Islam

অফিসিয়াল ঠিকানা: অফিসিয়াল ঠিকানা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, আগারগাঁও, শের-এ- বাংলা নগর, ঢাকা -১২০৭