সংবাদ :
জাতীয় : জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত- বাংলাদেশের আকাশে আজ পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে, ১০ জুলাই রবিবার সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে ইসলামিক বিশ্ব : আরাফাতে খুতবা দিবেন শায়খ ড. মুহাম্মাদ আবদুল করীম , হজের খুতবা সরাসরি সম্প্রচার হবে বাংলাসহ ১৪ ভাষায় আন্তর্জাতিক : আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় ৩য় স্থান অর্জনকারী সালেহ আহমদ তাকরিমকে সংবর্ধনা প্রদান করল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন

  • টেক্সট সাইজ
  • A
  • A
  • A
  • |
  • রং
  • C
  • A
  • A
  • A

জামা'অাতের সাথে সালাত অাদায়ের ফজিলত
প্রিন্ট
প্রকাশঃ : বৃহস্পতিবার ২৬/১০/২০১৭

জামা'আতের সাথে সালাত আদায়ের ফজিলত

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তা'য়ালার জন্য- যিনি রব্বুল আ'লামীন।

 দুরদ ও সালাম রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রতি যিনি রহমাতুল্লিল আ'লামীন, তাঁর পরিবারবর্গ ও বংশধর, সাহাবায়ে কিরাম (রাদিআল্লাহু আনহুম) ও সালিহীন (র) বান্দাগণের প্রতি।

 আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি  যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই এবং মুহাম্মাদ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর বান্দা ও তার রসুল। নিশ্চয়ই শুভ পরিণতি কেবলমাত্র মুত্তাকীনদের জন্যই নির্ধারিত। 

জামাতের সাথে সালাত আদায় করা সকল বালিগ পুরুষদের জন্য ওয়াজিব। আল্লাহ তা’য়ালা সালাতকে নির্দিষ্ট সময়ের সাথে ফরজ করেছেন, সালাতকে কায়েম করতে বলেছেন এবং জামাতের সাথে আদায় করা মুমীনগণের বৈশিষ্ট্য বলে আখ্যায়িত করেছেন। যেমন- আল্লাহ তায়ালা বলেন : "নিশ্চয়ই মু’মিন তারা, আল্লাহর নাম উচ্চারিত হলে যাদের হৃদয় বিগলিত হয়ে চমকে ওঠে, যখন তাদের নিকট আল্লাহর আয়াতসমূহ পাঠ করা হয় তখন তাদের ঈমানকে সুদৃঢ় করে আর তারা কেবলমাত্র তাদের প্রভুর উপরেই ভরসা রাখে। যারা সালাত কায়েম করে এবং আমি যে জীবিকা তাদেরকে দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করে- তারাই সত্যিকারের মুমিন। তাদের প্রভুর নিকট তাদের জন্য রয়েছে মর্যাদা, ক্ষমা এবং সম্মানজনক জীবিকা।" 
-(সূরা আনফাল : ২-৪)

পবিত্র হাদীস গ্রন্থসমূহে জামাতের সাথে সালাত আদায়ের নানাবিধ মর্যাদা এবং জামাত পরিত্যাগের ভয়আবহ পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে। এ প্রসংগে কতিপয় হাদীস বর্তমান প্রবন্ধে সবার বিবেচনার জন্য তুলে ধরা হল।

গুনাহ মাফ ও মর্যাদা বৃদ্ধিঃ হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : "আমি কি তোমাদেরকে সে কাজের কথা বলে দিব না, যার দ্বারা আল্লাহ সুবহানা ওয়াতা'আলা তোমাদের গুনাহ মাফ করে দিবেন এবং তোমাদের মর্যাদা বাড়িয়ে দিবেন? সাহাবীগণ আরয করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! অবশ্যই বলুন। তিনি বললেন : কষ্টের সময় অযু করা, মসজিদের দিকে বেশি বেশি হেটে যাওয়া এবং এক নামাজের পর এর পরবর্তি নামাজের অপেক্ষারত থাকা।" - (সহীহ মুসলিমঃ হাদীস নং ১৩১)

হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ "যে ব্যক্তি ভালভাবে অযু করে অতঃপর মসজিদের দিকে যায়, তার প্রত্যেকটি পদক্ষেপের বিনিময়ে একটি করে নেকি লিখা হবে। একটি করে মর্তবা বাড়িয়ে দেয়া হবে। এবং একটি করে গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে।" -[সহীহ মুসলিমঃ হাদিস নং ১৫২০]

জামাতের জন্য মাসজিদে যাতায়াতকারীর জন্য জান্নাতে মেহমানদারীঃ হযরত আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন : "কোন ব্যক্তি সকাল সন্ধ্যায় যতবার মসজিদে যাতায়াত করে, আল্লাহ্ তার জন্য জান্নাতে ততবারে মেহমানদারীর সামগ্রী তৈরী করে রাখেন।" - (সহীহ বুখারীঃ হাদীস নং ৬৬২) 

জামাতে সালাতের সওয়াব একাকীর চেয়ে কমপক্ষে পঁচিশ গুনঃ হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : "কোন ব্যাক্তির জামা'আতের সাথে সালাতের সওয়াব, তাঁর নিজের ঘরে ও বাজারে আদায়কৃত সালাতের সওয়াবের চেয়ে পঁচিশ গুন বাড়িয়ে দেয়া হয়। এর কারণ এই যে, সে যখন উত্তমরূপে ওযু করে, একমাত্র সালাতের উদ্দেশ্য মাসজিদে রওনা হয় তখন তাঁর প্রতি কদমের বিনিময়ে একটি মরতবা বৃদ্ধি করা হয় এবং একটি গুনাহ মাফ করা হয়। সালাত আদায়ের পর যতক্ষন সে নিজ সালাতের স্থানে থাকে ততক্ষন মালাকগন তাঁর জন্য এ বলে দুয়া করতে থাকেন- 'হে আল্লাহ্‌! আপনি তাঁর উপর রহমত বর্ষণ করুন এবং তাঁর প্রতি অনুগ্রহ করুন' আর তোমাদের কেউ যতক্ষন সালাতের অপেক্ষায় থাকে ততক্ষন সে সালাতে রত বলে গন্য হয়।" 
- (সহীহ বুখারীঃ  হাদীস নং ৬৪৭)

অন্য বর্ণনায়ঃ হযরত আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : "পুরুষ লোকদের জামায়াতের সাথে নামায আদায় করা বাজার কিংবা ঘরে নামায আদায় করার চেয়ে বিশ গুন বেশি সওয়াব পাওয়া যায়। কারন যখন কোন ব্যক্তি নামায আদায়ের উদ্দেশ্যে মসজিদে আসে এবং নামাযের উদ্দেশ্যেই ঘর থেকে বের হয়। তখন মসজিদে প্রবেশ করা পর্যন্ত প্রত্যেক কদমে তার মর্যাদা বৃদ্ধি করা হয় এবং তার গুনাহ ক্ষমা করা হয়। অতপর যখন মসজিদে প্রদেশ করে তখন থেকে যতক্ষন নামাযের জন্য অপেক্ষা করে ততক্ষন নামাযের সওয়াব পায়। আর নামাযের স্থানে যতক্ষন বসে থাকে ততক্ষন ফেরেশতারা তার জন্য দু'আ করে এবং বলেঃ হে আল্লাহ একে দয়া কর। হে আল্লাহ একে ক্ষমা কর। হে আল্লাহ এর তাওবা কবূল কর। যতক্ষন কাউকে কষ্ট না দেয়া কিংবা বেওযু না হয়, ততক্ষন ফেরেশতারা এভাবে দু'আ করতে থাকে।"- (বুখারীঃ নামায অধ্যায়, মুসলিমঃ নামায অধ্যায়, রিয়াযুস সালেহীনঃ ১০)

মাসজিদ থেকে যার দুরত্ব যত বেশী তার সওয়াবও তত বেশীঃ হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : "(মাসজিদে) যে যত অধিক দূরত্ব অতিক্রম করে আসে, তাঁর তত অধিক পুন্য হবে। আর যে ব্যাক্তি ইমামের সঙ্গে সালাত আদায় করা পর্যন্ত অপেক্ষা করে , তাঁর পুন্য সে ব্যাক্তির চেয়ে অধিক , যে একাকী সালাত আদায় করে ঘুমিয়ে পড়ে।" - (সহীহ বুখারীঃ হাদীস নং ৬৫১) 

অন্য বর্ণনায়ঃ হযরত আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : "মসজিদ হতে যার অবস্থান (বাসস্থান) যতদূরে, সে তত অধিক ছওয়াবের অধিকারী।" -(ইবনে মাজাহঃ হাদীস নং ৫৫৬)

বিভিন্ন প্রকার ফযীলতঃ হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ "রাস্তায় চলতে চলতে একটি লোক পথের উপর কণ্টকযুক্ত একটি শাখা দেখতে পেয়ে তা সরিয়ে ফেলল। এতে আল্লাহ তার গুনাহ মাফ করে দিলেন এবং তাকে পুরস্কৃত করলেন। অতঃপর তিনি বললেন, শহীদ পাঁচ প্রকার। ১) প্লেগ (বা মহামারিতে) মৃত, ২) পেটের পীড়ায় মৃত, ৩) পানিতে ডুবে মৃত, ৪) চাপা পড়ে মৃত এবং ৫) আল্লাহর পথে শহীদ। তিনি আরও বললেন, লোকেরা যদি জানত আযান দেওয়ায় ও প্রথম কাতারে দন্ডায়মান হওয়ায় ছওয়াব কি পরিমাণ? তবে লটারী ছাড়া অন্য উপায় না পেলে তারা অবশ্যই লটারি করত। তারা প্রথম ওয়াক্তে পড়ার ছওয়াব জানলে অবশ্যই সেজন্য দৌড়ে যেত। তারা এশা ও ফজরের নামাজ (জামা'আতে) পড়ার ছওয়াব জানলে তারা সেজন্য অবশ্যই হামাগুড়ি দিয়ে হলেও আসত।" ~[সহিহ বুখারীঃ হাদীস নং ৬১৫]

অন্য বর্ণনায়ঃ হযরত আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত।  রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : "আযানে ও প্রথম কাতারে কী (ফযীলত) রয়েছে, তা যদি লোকেরা জানত, কুরআহর মাধ্যমে নির্বাচন ব্যতীত এ সুযোগ লাভ করা যদি সম্ভব না হত, তাহলে অবশ্যই তারা কুরআহর মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিত। যুহরে সালাত আউয়াল ওয়াক্তে আদায় করার মধ্যে কী (ফযীলত) রয়েছে, যদি তারা জানত, তাহলে তারা এর জন্য প্রতিযোগিতা করত। আর ইশা ও ফজরের সালাত (জামা’আতে) আদায়ের কী ফযীলত তা যদি তারা জানত, তাহলে নিঃসন্দেহে হামাগুঁড়ি দিয়ে হলেও তারা উপস্থিত হত"।
 -[সহীহ বুখারীঃ হাদীস নং ৫৮৮]

ইমামকে অবশ্যই মুক্তাদীগণের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবেঃ হযরত আবূ কাতাদা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ  আমি অনেক সময় দীর্ঘ করে সালাত আদায়ের ইচ্ছা নিয়ে দাঁড়াই। পরে শিশুর কান্নাকাটি শুনে সালাত সংক্ষেপ করি। কারণ আমি পছন্দ করি না যে, শিশুর মাকে কষ্টে ফেলি। - (সহীহ বুখারীঃ হাদীস নং ৬৭২)

ইমামের চেয়ে এগিয়ে যাওয়া নিষিদ্ধঃ হযরত আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : “তোমাদের কেউ যখন সালাতে ইমামের আগে মাথা উঠিয়ে ফেলে, তখন সে কি ভয় করেনা যে, আল্লাহ তার মাথা গাধার মাথায় পরিণত করে দিবেন, আর তার আকৃতি গাধার আকৃতি করে দিবেন।” -[সহীহ বুখারীঃ হাদিস নং ৬৫৮]

ফেরেশতা মন্ডলীর ন্যায় কাতারবদ্ধ হতে হবেঃ হযরত জাবির বিন সামুরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছে এসে বলেলেন : ফেরেশতা মন্ডলী যেমন তাদের প্রভুর সামনে কাতারবদ্ধ হয় তোমরা কি তেমন কাতারবদ্ধ হবে না ? আমরা জিজ্ঞাসা করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! ফেরেশতা মন্ডলী তাদের প্রভুর সামনে কিভাবে কাতারবদ্ধ হয় ? তিনি বললেন : তারা আগের কাতারগুলো পূর্ণ করে এবং মাঝখানে ফাঁক না রেখে মিলিতভাবে দাড়ায় । -[সহীহ মুসলিমঃ হাদিস নং ৪৩০]

সালাতরত ব্যক্তির জন্য ফিরিস্তাগণ দু’আ করতে থাকেনঃ হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ  তোমাদের কেউ যতক্ষণ পর্যন্ত নামাযে থাকবে ততক্ষন পর্যন্ত ফিরিস্তাগণ এ বলে দু’আ করতে থাকে, হে আল্লাহ্‌! তাঁকে ক্ষমা করে দিন; হে আল্লাহ্‌! তার প্রতি রহম করুন; এই দু’আ চলতে থাকবে, যতক্ষন পর্যন্ত লোকটি সালাত ছেড়ে না দাড়াবে অথবা তার উযু ভঙ্গ না হবে। - (বুখারী)

ফজর ও আসরের সালাত আদায়কারী কখনো জাহান্নামে যাবে নাঃ আবু যুহাইর উমারা ইবনে রুওয়াইবা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত।  তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বলতে শুনেছি : "যে ব্যক্তি সূর্যোদয়ের পূর্বে ও সূর্যাস্তের পূর্বে নামায পড়ে সে কখনো জাহান্নামে যাবে না। অর্থাৎ ফজর ও আসরের নামায।" -[রিয়াদুস সালেহীনঃ হাদীস নং ১০৪৮; ইমাম মুসলিম হাদীসটি বর্ণনা করেছেন]

ফজর ও আসরের পর কিছু সময় আল্লাহর জিকিরের ফজিলতঃ হযরত আবু হুরাইরা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : মহান আল্লাহ বলেছেন, “হে আদম সন্তান! ফজর ও আসর নামাযের পরে কিছু সময়ের জন্য আমাকে স্মরণ কর। তা হলে উভয় নামাযের মধ্য সময়ে আমি তোমাকে সহায়তা করব।” 
-[আবূ নুয়াঈ’ম]

মুনাফিকদের কাছে বেশী ভারবহ হল এশা ও ফজরের নামাযঃ হযরত আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ “এশার ও ফজরের নামাযের মত আর কোন নামায মুনাফিকদের কাছে বেশী ভারবহ মনে হয় না। তবে যদি তাঁরা জানতো এই দুই নামাযের মধ্যে কি (ফজিলত) আছে; তাহলে তাঁরা হামাগুড়ি দিয়ে হলেও নামাযে আসত।” -[বুখারী ও মুসলিম]

যতদুর আজানের শব্দ পৌঁছে ততদুর পর্যন্ত জামাতে অনুপস্থিতির অনুমতি নাইঃ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত।  তিনি বলেন, একদিন তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দরবারে এসে বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ, আমি একজন অন্ধ মানুষ, আমার বাড়ীও অনেক দুরে এবং আমার একজন পথ চালক আছেন কিন্তু সে আমার পছন্দনীয় নয়। এমতাবস্থায় আমার জন্য ঘরে নামাজ পড়ার অনুমতি আছে কি? রাসূল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ  "তুমি কি আযান শোন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ  তাহলে আমি তোমার জন্য জামাআতে অনুপস্থিত থাকার কোন অনুমতি দিচ্ছি না।" 
-(আবু-দাউদ হাদিস নং ৫৫২)

মসজিদে হারাম, মসজিদে আকসা ও মসজিদে নববীর মর্যাদাঃ হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ "তিনটি মসজিদ ছাড়া অপর কোন মাসজিদে (সওয়াবের আশায়) সফর করা যাবে না; আমার এ মসজিদ, মসজিদে হারাম ও মসজিদে আকসা (বায়তুল মাকদাস)।" -(সহীহ মুসলিমঃ  হাদীস নং ৩২৪৭)

সালাতের জামাত পরিত্যাগ করা মারাত্মক ক্ষতিকরঃ হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ  "আমার প্রাণ যার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে তাঁর শপথ! অবশ্যি আমি সংকল্প করেছি, আমি কাঠ সংগ্রহ করার নির্দেশ দিব, তারপর নামাযের হুকুম দিব এবং এজন্য আযান দেয়া হবে, তারপর আমি এক ব্যক্তিকে হুকুম করব, সে লোকদের নামায পড়াবে। এরপর আমি সেই লোকদের দিকে যাব, যারা নামাযের জামায়াতে হাজির হয়নি এবং নামাযের সময়ে বাড়িতে থাকে এবং তাদের বাড়িঘর তাদের সামনেই জ্বালিয়ে দিব। (তবে, মহিলা ও শিশু-দের কারনে শুধু তা করা হয় না)।" - (বুখারী ও মুসলিম)

জামাত পরিত্যাগকারী শয়তানের কবলে পতিত হয়ঃ হযরত আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ "যে এলাকায় বা জনবসতিতে তিনজন লোকও অবস্থান করে, অথচ তাঁরা জামায়াত কায়েম না করে নামায পড়ে, তাদের উপর শয়তান সওয়ার হয়ে যায়। কাজেই জামায়াতে নামায পড়া তোমাদের জন্য অপরিহার্য। কারণ (একা নামায পড়লে তার অবস্থা হবে এমন) যেমন দলছুট বকরীকেই বাঘে ধরে খায়।" - (আবু দাঊদ)

আল্লাহ তা’য়ালা আমাদের সবাইকে নিয়মিত জামাতের সাথে সালাত আদায় করার তৌফিক দান করুন! তাঁর মহান দ্বীনের খেদমতের জন্য কবুল করুন! রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাহাবা (রাঃ)-গনের আদর্শের উপর সর্বদা কায়েম রাখুন! তাঁদের বরকতময় জামাআতের সংগে আমাদের হাশর করুন! (আমীন।)

৬৩১

কোন তথ্যসূত্র নেই

আপনার জন্য প্রস্তাবিত

ইসলামিক ফাউন্ডেশন

To preach and propagate the values and ideals of Islam, the only complete code of life acceptable to the Almighty Allah, in its right perspective as a religion of humanity, tolerance and universal brotherhood and bring the majority people of Bangladesh under the banner of Islam

অফিসিয়াল ঠিকানা: অফিসিয়াল ঠিকানা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, আগারগাঁও, শের-এ- বাংলা নগর, ঢাকা -১২০৭