সংবাদ :
জাতীয় : জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত- বাংলাদেশের আকাশে আজ পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে, ১০ জুলাই রবিবার সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে ইসলামিক বিশ্ব : আরাফাতে খুতবা দিবেন শায়খ ড. মুহাম্মাদ আবদুল করীম , হজের খুতবা সরাসরি সম্প্রচার হবে বাংলাসহ ১৪ ভাষায় আন্তর্জাতিক : আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় ৩য় স্থান অর্জনকারী সালেহ আহমদ তাকরিমকে সংবর্ধনা প্রদান করল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন

  • টেক্সট সাইজ
  • A
  • A
  • A
  • |
  • রং
  • C
  • A
  • A
  • A

পর্দা করুন
প্রিন্ট
প্রকাশঃ : বৃহস্পতিবার ২২/০২/২০১৮

পর্দা করুন 
 মুসলিম সমাজে যারা ইসলামকে মেনে চলতে আগ্রহী, তাদের ক্ষেত্রে- সামাজিক ও পারিবারিকভাবে নারীদেরকে পর্দার ব্যাপারে যতটা গুরুত্ব সহকারে নসীহত বা উপদেশ দিতে দেখা যায়, অনুরূপ যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে তা পুরুষদেরকে দিতে দেখা যায় না। কিন্তু ইসলামের দৃষ্টিতে পর্দার ব্যাপারটি লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে এটা উভয়ের জন্য সমান গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। যে সমাজের ভিত্তিই তাকওয়া, সেইরকম একটি সমাজে নারী-পুরুষের প্রতি পারস্পারিক শ্রদ্ধাবোধ গড়ে ওঠে উভয়ের ক্ষেত্রে পর্দাকে যথাযথভাবে অনুসরণের অনুশীলনের মধ্য দিয়ে। আমি মানছি যে, বাংলাদেশের মুসলিম সমাজটি সামগ্রিকভাবে এ রকম তাকওয়াভিত্তিক নয়। কিন্তু পুরুষদেরকে অবহেলাবশতঃ এ শিক্ষা থেকে দূরে রাখা একটি মুসলিম সমাজের পুরুষদের মানসিক পরিপক্কতা অর্জনের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিতে যথেষ্ট ভূমিকা রাখতে সক্ষম। কারণ, সেক্ষেত্রে অন্য একটি সমাজ বিশেষত সেক্যুলার সমাজে নারীদের প্রতি পুরুষরা যে দৃষ্টিভংগী পোষণ করে থাকে, তার চেয়ে মুসলিম সমাজের একজন পুরুষের দৃষ্টিভংগী খুব বেশি বৈসাদৃশ্যপূর্ণ হয় না। একটি মুসলিম সমাজে আর অন্য সকল শিক্ষার মতই এই শিক্ষারও প্রাথমিক সূচনা হওয়া উচিত পরিবার থেকেই। পুরুষদের ক্ষেত্রে ইসলামের দৃষ্টিতে পর্দার নীতিমালা কি কি হবে সে বিষয়ে যথাযথ ও পূর্ণাংগ শিক্ষা রয়েছে। আমরা সংক্ষেপে সেদিকে একটু আলোকপাত করে নিতে চাই প্রথমেই।
আল্লাহ তায়ালা মুমিনদেরকে উপদেশ দিয়েছেন এভাবেঃ “মুমিনদেরকে বলঃ তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করে; এটাই তাদের জন্যে উত্তম; তারা যা করে সে বিষয়ে আল্লাহ অবহিত”। (২৪,সুরা নূরঃ ৩০)
‘লজ্জাস্থানের হেফাযতে’র ব্যাপারে যথাযথ গুরুত্বারোপ করা হলেও অনেকক্ষেত্রে ‘দৃষ্টিকে সংযত রাখা’র বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব পায় না। দৃষ্টি সংযত রাখার ব্যাপারে রাসুল (সাঃ) হাদীসের মাধ্যমে বারবার সতর্কতা নির্দেশ করেছেন। সে সতর্কতাগুলো এরকমঃ
হযরত বুরাইদা ইবনে আল-হাসিব (রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছেঃ রাসুল (সাঃ) হযরত আলী (রাঃ) কে বলেনঃ “হে আলী! দৃষ্টির উপর দৃষ্টি ফেলো না। হঠাৎ যে দৃষ্টি পড়ে ওটা তোমার জন্য ক্ষমার্হ, কিন্তু পরবর্তী দৃষ্টি তোমার জন্য ক্ষমার যোগ্য নয়”। (সুনানে আবু দাঊদ, হাদীসঃ ২১৪৯/ অধ্যায়-১২, হাদীস-১০৪)
হযরত আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আমাদেরকে বলেছেনঃ “হে যুবকেরা! তোমাদের মধ্যে যাদের সামর্থ রয়েছে তারা যেন বিয়ে সম্পন্ন করে, কেননা দৃষ্টি সংযত রাখা ও লজ্জাস্থানের হেফাযতের জন্য এটা বেশি কার্যকর। আর যে সামর্থবান নয় তার উচিত রোজা পালন করা, কেননা এটা তার জন্য সংযম হবে”। (সুনানে আন-নাসাঈ, হাদীসঃ ৩২০৯/ অধ্যায়-২৬, হাদীস-১৪) প্রায় একই রকম বর্ণনায় এই হাদীসটি বুখারী শরীফেও বর্ণিত হয়েছে (বুখারী, হাদীসঃ ৫০৬৬/ অধ্যায়-৬৭, হাদীস-৪)
হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসুল (সাঃ) বলেনঃ “সাবধান! তোমরা পথের উপর বসা থেকে বিরত থাকো। সাহাবীগণ বললেন, কিন্তু আমাদের জরুরী কথাবার্তা চালানোর জন্য এই বসার জায়গাগুলোকে পরিহার করার যে কোন বিকল্প নেই। রাসুল (সাঃ) বললেন, যদি তোমাদের সে জায়গাগুলোতে বসতেই হয়, তবে পথের হক আদায় কর। তাঁরা জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! পথের হক কি? তিনি বললেন, সেগুলো হচ্ছে- দৃষ্টিকে সংযত/নত করা, মানুষের ক্ষতি করা থেকে বিরত থাকা, সালামের জবাব দেয়া, ভাল কাজের আদেশ দেয়া এবং মন্দ কাজের নিষেধ করা”। (বুখারী, হাদীসঃ ২৪৬৫/ অধ্যায়-৪৬, হাদীস-২৬)
যে সমাজের প্রত্যেকে আল্লাহকে ভয় করে চলে, তাদের জন্য আল্লাহর সমস্ত বিধান মেনে চলাও অনেকক্ষেত্রে সহজ হয়ে যায়। কিন্তু বাংলাদেশে আমাদের মুসলিম সমাজব্যবস্থা পুরোপুরি এই তাকওয়ার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত নয়। পর্দার বিধানগুলো অনেকক্ষেত্রে তাই শুধুমাত্র প্রথা হিসেবে মানা হয়ে থাকে এবং শুধুমাত্র নারীদেরকেই এর আওতাধীন মনে করা হয়ে থাকে। অনেকক্ষেত্রে এটাও মনে করা হয় যে, নারীরা যদি যথাযথভাবে আবৃত হয়ে তাদের বাইরের প্রয়োজনীয় কাজে বের হয় তবে সেটাই যথেষ্ট। হয়তোবা যথেষ্ট, কিন্তু তাই বলে পুরুষদের দায়িত্বকে অবহেলার চোখে দেখার কিন্তু কোন অবকাশ নেই। এমনকি কোন ধরণের দুর্ঘটনা বা অনাংখিত ঘটনার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র নারীদের পর্দার অপর্যাপ্ততাকে একতরফাভাবে দোষারোপ করা হয়ে থাকে। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে পর্দার ব্যাপারে উভয়ের দায়িত্বশীল আচার-আচরণই একটি মুসলিম সমাজের প্রত্যেকটি মানুষকে পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলে। 

৩২০

কোন তথ্যসূত্র নেই

আপনার জন্য প্রস্তাবিত

ইসলামিক ফাউন্ডেশন

To preach and propagate the values and ideals of Islam, the only complete code of life acceptable to the Almighty Allah, in its right perspective as a religion of humanity, tolerance and universal brotherhood and bring the majority people of Bangladesh under the banner of Islam

অফিসিয়াল ঠিকানা: অফিসিয়াল ঠিকানা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, আগারগাঁও, শের-এ- বাংলা নগর, ঢাকা -১২০৭