দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর এখন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর অত্যাসন্ন। ঈদ-উল-ফিতর মানে রোজা ভাঙ্গার উৎসব। গত একমাস ধরে সিয়াম সাধনার মধ্যে দিয়ে রোজাদার যে কঠিন পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়েছে, আজ তা থেকে উত্তীর্ণের সময় ক্রমেই ঘনিয়ে এসেছে। চতুর্দিকে তাই আজ ঈদের আমেজ সুস্পষ্ট। মুসলিম
সমাজ জীবনে ঈদ-উল-ফিতরের অবারিত আনন্দধারার তুলনা চলে না। কারণ, প্রথমত এ আনন্দোৎসবের আমেজ গরিবের পণ্য কুটির হতে ধনীর বালাখানা পর্যন্ত সমানভাবে মুখরিত। শহর নগর গ্রামগঞ্জ সর্বত্র এর ঢেউ বিবৃÍত। দ্বিতীয়ত এ আনন্দ অতি পবিত্র ও নির্মল।
সহীহ হাদীস শরীফ সমূহে বছরের যে পাঁচটি রাতকে অতি মর্যাদাপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে এর মধ্যে ঈদ-উল-ফিতর পূর্ববর্তী রাত অন্যতম। হাদীস শরীফে এসেছে রমজানের ইফতারের সময় প্রত্যেক দিন আল্লাহ সুবহানাহুতায়ালা এক হাজার জাহান্নামীকে নরকমুক্ত করেছেন, তাদের প্রত্যেকের জন্য দোযখে যাওয়া অবধারিত ছিল। আর রমজান মাসের শেষ দিন যখন আসে আল্লাহ সেদিন রমজানের প্রথম থেকে ওই দিন পর্যন্ত যত পাপীতাপীকে ক্ষমা করেছেন তার সমসংখ্যক অপরাধীকে ক্ষমা করে দেন। (সুবহানাল্লাহ...)। তাই দেখা যায়, নেককার মানুষ শব-ই-কদরের ন্যায় ঈদপূর্ব রাতেও ইবাদতে মশগুল হয়।
সাহাবী আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাদি) এক দীর্ঘ হাদীসে বর্ণনা করেন : যখন ঈদ-উল-ফিতরের রাতের আগমন হয় ওই রাতকে পুরস্কার দানের রজনী হিসেবে অভিহিত করা হয়। যখন ঈদের সকাল নামে তখন আল্লাহ প্রতিটি দেশে ফেরেস্তা প্রেরণ করেন। তারা পথের ধারে অবস্থান নেন এবং ডাকতে থাকেন। তাদের আহ্বান মানুষ ও জ্বীন ব্যতীত সব মাখলুকই শুনতে পায়। তারা বলেন : ওহে উম্মতে মুহাম্মদী (স)! বের হয়ে এসো মর্যাদাবান প্রতিপালকের পানে। তিনি অধিক পরিমাণে দান করে থাকেন, মারাত্মক অপরাধও ক্ষমা করে দেন।
বস্তুত ঈদ-উল-ফিতরের দিবস হচ্ছে পুরস্কারের দিন, আত্মোপলব্ধির দিন। সমাজ ও যুগের নানা অবক্ষয়ের ছোঁয়ায় ঈদের অনুষ্ঠানেও নানা অতিরঞ্জিত বিষয় ও বাড়াবাড়ি এসে পড়েছে। আমাদের এ ব্যাপারে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, যাতে মহানবী (স) এর প্রবর্তিত পবিত্র ঈদের শিক্ষা ও বরকত হতে আমরা বঞ্চিত না হই। আজকের লাগামহীন ঈদের আনন্দে আমাদের অনেকে ঈদের উপরিউক্ত ধর্মীয় গুরুত্ব ও মর্যাদার কথা বেমালুম ভুলে থাকে। যার কারণে আমরা লক্ষ্য করছি, মুসলমানদের ঈদ ক্রমশ হয়ে পড়েছে নিষ্প্রাণ উদ্দেশ্য লক্ষ্যহীন। বস্তুত রমজান যেমন সাধনার মাস এতে সিয়াম, কিয়ামসহ কঠিন ইবাদতসমূহের মাঝামাঝি রয়েছে ইফতার সাহরীর আনন্দদায়ক মুহূর্তগুলো, তেমনি ঈদ-আনন্দও কিছু বিধিনিষেধে পরিপূর্ণ যা অনিয়মতান্ত্রিকতাকে নিরুৎসাহিত করে এক সুশৃঙ্খল ও ধারাবাহিক দায়িত্ব কর্তব্য স্মরণ করিয়ে দেয়। যেমন :
ঈদের নামাজের প্রাক্কালে কিছু মুস্তাহাব কাজ করার বিধান রয়েছে। এর মধ্যে ১. ঈদগাহে গমনের পূর্বে ফজরের পর কোন মিষ্টি জাতীয় খাবার গ্রহণ, ২. গোসল করা, ৩. মিসওয়াক করা, ৪. খুশবু ব্যবহার করা, ৫. উত্তম কাপড়-চোপড় পরিধান করা, ৬. ঈদের নামাজে গমনের পূর্বে সাদকাতুল ফিতর আদায় করা, ৭. প্রত্যুষে বিছানা ত্যাগ করা, ৮. সকাল সকাল ঈদগাহে উপস্থিত হওয়া, ৯. হেঁটে হেঁটে ঈদগাহভিমুখে গমন করা, ১০. চলতে পথে নীচু কণ্ঠে তাকবীর বলে যাওয়া (তাকবীর ‘আল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবর, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবর ওয়ালিল্লাহিল হামদ্)। ১১. এক পথে যাওয়া, ভিন্ন পথে আসা, ১২. সাজগোজ করা, ১৩. উন্মুক্ত আকাশের নিচে খোলা ময়দানে ঈদের নামাজ আদায় করা।
ঈদের আনন্দে যেন আমরা ঈদের পালনীয় আহকামগুলো ভুলে না যাই, সে দিকে আগে থেকে সতর্ক থাকতে হবে।
মাসব্যাপী এ কলামে আমরা রোজা নামাজ ও যাকাতের বিভিন্ন বিধিবিধান নিয়ে আলোচনা করেছি। একইভাবে ইসলামে অন্যান্য আদব ও সৌন্দর্যগুলোও তুলে ধরেছি। আমাদের উদ্দেশ্য এ মোবারক মাসে এ কলামের মাধ্যমে যতটুকু সম্ভব পবিত্র ইসলাম ধর্মের বিজ্ঞানসম্মত ও সময়োপযুক্ত আচরণগুলো হৃদয়ে স্পর্শ করে যায়। আল্লাহ আমাদের উদ্দেশ্য কবুল করুন।
৩৮০
০
০
কোন তথ্যসূত্র নেই
শনিবার সৌদি আরবের আকাশে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। রবিবার......
-----------------আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ ইসলামের পাঁচটি ভিত্তির মধ্যে অন্যতম প্রধান......
সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান আল্লামা মাসঊদ......
الحمد لله رب العالمين الصلوة والسلام على سيد الانبياء والمرسلين......
পবিত্র সিয়ামসাধনার একটি মাস কাটানোর পর আল্লাহর পক্ষ থেকে মুমিনের......
রহমত বরকত ও মাগফিরাতের মাস রমজান চলে গেল। দীর্ঘ এক......
ভয়কে জয় করে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায়......
রহমত, মাগফেরাত ও নাজাতের সওগাত নিয়ে আগত মাহে রমজানের প্রতিদান......
প্রতিবেশী প্রতি যে মমত্ববোধটুকু এখনো অটুট আছে সেটা একান্তই গ্রামকেন্দ্রীক।......
------আব্দুল্লাহ শাকির আজ ২৪ রমজান। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:......