সংবাদ :
জাতীয় : জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত- বাংলাদেশের আকাশে আজ পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে, ১০ জুলাই রবিবার সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে ইসলামিক বিশ্ব : আরাফাতে খুতবা দিবেন শায়খ ড. মুহাম্মাদ আবদুল করীম , হজের খুতবা সরাসরি সম্প্রচার হবে বাংলাসহ ১৪ ভাষায় আন্তর্জাতিক : আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় ৩য় স্থান অর্জনকারী সালেহ আহমদ তাকরিমকে সংবর্ধনা প্রদান করল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন

  • টেক্সট সাইজ
  • A
  • A
  • A
  • |
  • রং
  • C
  • A
  • A
  • A

ইমাম ও মুসল্লীগণ নামাজের জন্য কখন দাঁড়াবেন ?
প্রিন্ট
প্রকাশঃ : সোমবার ১০/০৯/২০১৮

মুসল্লিগন নামাজে কখন দাঁড়াবেন তা নিয়ে আমাদের মধ্যে মতানৈক্য পরিলক্ষিত হয় । অনেকে মুয়াজ্জিন ইক্বামতের জন্য দাঁড়ালেই সাথে সাথে মোয়াজ্জিনের সাথে দাঁড়িয়ে যান । আসলে এটা সুন্নাত বা নবীজির নীতিসম্মত নয় । বরং হাইয়্যা আলাস সালাহ বলার সময় দাঁড়ানো মোস্তাহাব । এ ব্যপারে হানাফি ফিক্বাহে বলা আছে যে’ ‘হাইয়্যা আলাছ সালাহ বলার সময় ইমাম মোয়াজ্জিন উভয়েই দাঁড়াবেন । ইমাম মসজিদে বসা আছেন আর মুছল্লীগণ নামাজের জন্য দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করা মাকরুহ ।   যারা এক্বামতের সময় মুয়াজ্জিনের সাথে সাথে দাঁড়িয়ে যান তাদের দলিল হল - এক হাদীছে আছে হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) বলেন -اقيمت الصلاة فقمنا فعدلنا الصفوف قبل ان يخرج الينا رسول الله صلي الله عليه وسلم অর্থাৎ- নামাজের একামত দেয়া হয়ে গেছে ,আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের দিকে বের হওয়ার পূর্বেই আমরা কাতার সোজা করে নিতাম ।(সহিহ মুসলিম, হাদীছ নং- ১৫৭ মুজামুল আওসাত হাদীছ নং ৯১৯২ নাসাঈ শরীফ হাদীছ নং -৮০৯)

কিন্তু অন্য হাদীছে  দয়াল নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরূপ করতে নিষেধ করেছেন ।যেমন- حدثنا مسلم بن ابراهيم قال كتب الي يحيبن ابي كثير عن عبد الله بن ابي قتادة ان النبي صلي الله عليه وسلم قال اذا اقيمت الصلاة فلا تقوموا حتي تروني হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আবি কাতাদা তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরমান যখন নামাজের জন্য ইক্বামত দেয়া হবে ,তখন আমাকে না দেখা পর্যন্ত তোমরা দাঁড়াবে না । ( ছহিহ বোখারী হাদীছ নং ৬৩৭, তিরমিযি শরীফ ১ম জিলদ ২৭ ও ৭৬ পৃঃ,ছহীহ মুসলিম ১ম খন্ড-২২০ পৃঃ, মুছান্নাফে ইবনে আবি শায়বা ১ম খন্ড ৪৪৩ পৃঃ ,তাবরানী তাঁর আওসাতে ৬ষ্ট খন্ড ২০৭ পৃষ্ঠা , ফতহুল বারী ২য় খন্ড ১৪৫ পৃঃ, উমদাতুল ক্বারী শরহে বোখারী ৪র্থ খন্ড ২১৪ পৃঃ, মিশকাত হাদীছ নং- ৬৮৫, মিরকাত শরহে মিশকাত ২য় খন্ড ৩৫৫ পৃঃ )

তাই হাফিজ ইবনে হাজর আসকালানী (রাঃ) বলেন - و انهم كانوا يقومون ساعة تقام الصلاة ولو لم يخرج النبي صلي الله عليه وسلم فنهاهم عن ذالك অর্থাৎ- নিশ্চয় লোকেরা নামাজের জন্য দাঁড়িয়ে যেতেন অথচ নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বের হননি । অতঃপর নবীজি তাদের কে এরূপ ভাবে অর্থাৎ নবীজি কে হুজরা থেকে বের হতে না দেখে নামাজের জন্য দাঁড়াতে নিষেধ করে দেন । সুতরাং স্পষ্ট ভাবে প্রমাণিত হয়ে গেল নামাজের জন্য ইকামতের প্রথম দিক থেকেই দাঁড়িয়ে যাওয়া সাহাবাগণের প্রথমিক আমল ছিল । নবীজি উহাকে নিষেধ করে দিয়েছেন । এ আমল রহিত হয়ে গেছে ।

সুতরাং ইমাম সাহেব মসজিদে অবস্থান রত অবস্থায় ইমাম মোয়াজ্জিন সকলেই হাইয়্যা আলাছ সালাহ/ হাইয়্যা আলাল ফালাহ বলার সময় দাঁড়াবেন । হানাফি মাযহাবের স্পষ্ট রেওয়ায়েত হলো এটাই ।

قال محمد رحمه الله في الاصل اذا كان الامام مع القوم في المسجد فاني احب لهم ان يقوموا في الصف اذا قال الموذن حي علي الفلاح অর্থাৎ ইমাম মুহাম্মদ (রাঃ) বলেন, মূল কথা হল যখন ইমাম সাহেব মুসল্লীগণের সাথে মসজিদে উপস্থিত থাকবেন তখন মুয়াজ্জিন হাইয়্যা আলাল ফালাহ বলার সময় মুছল্লিগণ দাঁড়াবেন এটা আমি পছন্দ করি । ( আল মুহিতুল বুরহানী ১ম খন্ড ৩৫৩ পৃঃ)

এ কিতাবের অপর জাগায় আছে- وكان الامام مع القوم في المسجد فانه يقوم الامام والقوم اد ا قال الموذن حي علي الفلاح عند علماءنا الثلاثة رحمهم الله অর্থাৎ - ইমাম সাহেব মুসল্লীগণের সাথে মসজিদে থাকলে মুয়াজ্জিন হাইয়্যা আলাল ফালাহ বলার সময় ইমাম ও মুয়াজ্জিন দাঁড়াবেন এটা তিন ইমাম রাহিমাহুমুল্লাহ এর অভিমত । অতএব ইমাম সাহেব মসজিদে বসা থাকাবস্থায় মুছল্লীগণ নামাজের জন্য দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করা মাকরুহ । اذا دخل الرجل عند الاقامة يكره له الانتظار قاءما ولكن يقعد ثم يقوم اذا بلغ الموذن قوله حي علي الفلاح كذا في المضمرات অর্থাৎ - যখন কোন ব্যক্তি ইককামতের শুরুতে মসজিদে প্রবেশ করে তখন দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করা মাকরুহ , বরং সে বসে যাবে । অতঃপর মুয়াজ্জিন যখন হাইয়্যা আলাল ফালাহ পর্যন্ত পৌঁছুবে তখন দাঁড়াবেন । এটা মুজমিরাত কিতাবে ও আছে । (ফাতওয়ায়ে আলমগীরি ১ম খন্ড ৫৭ পৃঃ)

 

আবার ক্বাদকামাতিস সালাহ বলার পূর্বে দাঁড়ানো টা অপছন্দনীয় বলা হয়েছে - حدثنا ابو بكر بن ابي الاسود قال حدثنا معتمر بن سليمان عن هشام عن الحسن وابن سيرين انهما كان يكرهان ان يقوما حتي يقول الموذن قد قامت الصلاة হাসান বসরি ও ইবনে শিরিন কাদক্বামাতিস সালাহ বলার পূর্বে দাঁড়ানো অপছন্দ করতেন । (ইমাম ইবনে আব্দিল বার আত- তামহীদ ৯ম খন্ড ১৯৩ পৃঃ)

এ বর্ণনার সনদে বিচ্ছিন্নতা থাকলেও আমলের ক্ষেত্রে অসুবিধা নাই । এ ব্যপারে আরো অনেক হাদীছ বর্ণিত আছে । আর আল্লামা বদরুদ্দীন আইনি ও ইমাম নববী আলাইহিমার রাহমাহ স্ব স্ব কিতাবে উল্লেখ করেছেন -وقال جمهور العلماء من السلف والخلف لا يكبر الامام حتي يفرغ الموذن من الاقامة সালফ ও খালফের জমহুর উলামায়ে কেরামের ঐক্যমত হয়েছে যে, যতক্ষন না মুয়াজ্জিন ইকামত শেষ করবেন ততক্ষন পর্যন্ত ইমাম তাকবীরে তাহরিমা বাঁধবেন না । (উমদাতুল ক্বারী ৩য় খন্ড ২২৫ পৃঃ, আল মিনহাজ শরহে মুসলিম ১ম জিলদ ২২১ পৃঃ)

মোদ্দা কথা হল ইমাম সাহেব মসজিদে না থাকলে তিনি যখন মসজিদে আসবেন তখন ই মুয়াজ্জিন একামত দিবেন আর মুসল্লিগন দাঁড়িয়ে যাবেন । এ ব্যপারে হাদীছ রয়েছে । ইমাম কে দেখে মুসল্লিগণ দাঁড়াবেন । আর দয়াল নবীজি হাইয়্যা আলাল ফালাহ বলার সময় ই স্বীয় হুজরা থেকে বের হতেন আর সাহাবাগণ নবীজিকে দেখেই দাঁড়িয়ে যেতেন । হানাফি ফক্বিহগণ সে জন্য এর উপর ই রায় প্রদান করেছেন ।

১৭০৮

কোন তথ্যসূত্র নেই

আপনার জন্য প্রস্তাবিত

ইসলামিক ফাউন্ডেশন

To preach and propagate the values and ideals of Islam, the only complete code of life acceptable to the Almighty Allah, in its right perspective as a religion of humanity, tolerance and universal brotherhood and bring the majority people of Bangladesh under the banner of Islam

অফিসিয়াল ঠিকানা: অফিসিয়াল ঠিকানা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, আগারগাঁও, শের-এ- বাংলা নগর, ঢাকা -১২০৭