সংবাদ :
জাতীয় : জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত- বাংলাদেশের আকাশে আজ পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে, ১০ জুলাই রবিবার সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে ইসলামিক বিশ্ব : আরাফাতে খুতবা দিবেন শায়খ ড. মুহাম্মাদ আবদুল করীম , হজের খুতবা সরাসরি সম্প্রচার হবে বাংলাসহ ১৪ ভাষায় আন্তর্জাতিক : আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় ৩য় স্থান অর্জনকারী সালেহ আহমদ তাকরিমকে সংবর্ধনা প্রদান করল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন

  • টেক্সট সাইজ
  • A
  • A
  • A
  • |
  • রং
  • C
  • A
  • A
  • A

তাক্বদীরের উপর বিশ্বাস ইসলামের মৌলিক বিষয়াবলীর অন্তর্ভুক্ত।
প্রিন্ট
প্রকাশঃ : রবিবার ২২/১০/২০১৭

সূচনাঃইসলামী শরীয়তে তাক্বদীরকে قدر শব্দ দ্বারা ব্যক্ত করা হয়েছে।বাবে দ্বারাবা থেকেقدر শব্দটি নির্গত।এর আভিধানিক অর্থ-নির্ধারন,স্থিরীকরণ।কোন জিনিসের নির্ধারিত অবস্থা ।যেমন এরশাদে বারী তা'লা- انا كل شيء خلقنا بقدر অর্থাত-নিশ্চয় আমি সকল জিনিসকে নির্ধারিত অবস্থার উপর সৃষ্টি করেছি।(معجم الوسيط)

পরিভাষায় আল্লাহ তা'লা সৃষ্টির প্রারম্ভে স্বসবীয় ইলিম অনুযায়ী হবুতব্য সকল বিষয়কে নির্ধারিত করে রেখেছেন তাই হচ্ছে তাক্বদীর। এক হাদীছে বলা হয়েছে -আল্লাহ তা'লা আদম সৃষ্টির পঞ্ছাশ হাজার বছর পূর্বে তাক্বদীর সৃষ্টি করেছেন।এবিষয়ে পরিচ্ছন্ন ধারণা ও বিশ্বাস ইসলামের মৌলিক বিষয়াবলীর অন্তর্ভূক্ত।عن علي رضي الله تعالي عنه قال قال رسول الله صلي الله عليه وسلم لايومن عبد حتي يومن باربع يشهد ان لا اله الا الله و اني رسول الله بعثني بالحق و يومن بالموت والبعث بعد الموت و يومن بالقدر.(رواه الترميدي و ابن ماجه)

অর্থাৎ- হযরত আলী (রাঃ)থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন আল্লাহর রাসূল صلي الله عليه وسلم ফরমান -কোন বান্দা ঈমানদার হতে পারবেনা যতক্ষন না চারটি বিষোয়ের প্রতি ঈমান আনবে।১।সাক্ষ্য দেবে যে আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই।২,আর সাক্ষ্য দেবে যে নিশ্চয় আমি আল্লাহর রাসুল।আমাকে সত্য সহ পাঠানো হয়েছে।৩,আর ঈমান রাখবে মৃত্যু এবং ততপরবর্তি জীবনের প্রতি ।৪আর তাক্বদীরের উপর বিশ্বাস রাখবে।(তিরমীযি ও ইবনে মাজাহ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন।)সুতরাং তাক্বদীরের প্রতি বিশ্বাস জরুরীয়াতে দ্বীনের অন্তর্ভূক্ত।

বিভিন্ন ফেরক্বার উৎপত্তিঃ আল্লাহর নির্ধারণ কৃত বিষয়াবলীর বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে সকল যুগেই বিস্তর বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। কেউ জ্ঞাতসারে কেউ অজ্ঞাতসারে বিষয় টির মধ্যে গোলমাল সৃষ্টি করবে বলে ই ইসলামের নবীصلي الله عليه وسلم  সতর্কবাণী আরূপ করেছেন এভাবে-عن ابن عباس رضي الله عنه قال قال رسول الله صلي الله عليه وسلم صنفان من امتي ليس لهمافي الاسلام نصيب  المرجيةوالقدرية (رواه الترميذي) আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন আল্লাহর রাসুল صلي الله عليه وسلم এরশাদ ফরমান-আমার উম্মতের দুটি দল এমন রয়েছে ;যাদের জন্য ইসলামে কোন অংশ নাই।তারা হল মুরজিয়া ও ক্বাদরীয়া। (তিরমিযি বর্ণনা করেছেন)এদু'টি দলের চিন্তা বিশ্বাস উম্মতে মুহাম্মদীকে গোমরাহীর অতল গহবরে নিয়ে যাবে বলেই নবীজি তাদের থেকে জোযন দূরে অবস্থানের জন্য নবীজি আগাম বাণি প্রদান করে বলেছেন-এরা উম্মতের অগ্নি পূজক,এদের সাথে উঠা বসা করো না ।আত্মীয়তা করোনা।(আবুদাউদ শরীফ দ্রষ্টব্য)সুতরাং জানা প্রয়োজন তাদের চিন্তা বিশ্বাস কি?

মুরজীয়া সম্প্রদায়ঃ জাবরীয়াহ সম্প্রদায়ের মত এরা বিশ্বাস করে ভাল মন্দ যেহেতু আল্লাহর সৃষ্টি সেহেতু বান্দার কোন এখতিয়ার ই নাই।আর তাই বান্দা মন্দ করলে তাতে সে অপরাধী সাব্যস্থ হবে না। কাজেই তার জন্য সে শাস্থি যোগ্য নয়। এমন ভ্রান্ত আক্বীদার প্রবক্তা প্রধান হচ্ছে- জাহাম ইবনে সাফওয়ান আত তিরমিযী। আমি সেদিন এক ওয়াজে শুনলাম বক্তা বলতেছেন -"আল্লাহ চোর কে বলেন চুরি কর গৃহস্থকে বলেন ধর ধর ।আল্লাহ আদম কে বলেন গন্দম তুমি খাইও না গন্দম কে বলেন ;আদমেরে ছাইড় না"।মা'যাল্লাহ।অদ্ভুদ অভিব্যক্তি! এমন আক্বীদাভী গন্ডগোল পাকানো ওয়াজ এবং গান সরলপ্রান মুসলমানদের কে কোন দিকে নিয়ে যাচ্ছে?আহলে সুন্নাত ওয়াল জমাতের আক্বীদা সংক্ষিপ্তাকারে নীচে পেশ করার আগে ক্বাদরীয়া সম্প্রদায়ের বিশ্বাস আলোচনা করা প্রয়োজন।

ক্বাদরীয়া সম্প্রদায়ঃ জাবরীয়া সম্প্রদায়ের বিশ্বাসের পালটা প্রতিক্রিয়া সরূপ ক্বাদরীয়া সম্প্রদায়ের উৎপত্তি। ৬৯৯ খৃষ্টাব্দে মাবাদ আল জুহানী এ সম্প্রদায়কে প্রতিষ্ঠা করেন।আহলে হক্ব পন্থি উলামায়ে কিরামের মতে;ক্বাদরীয়া একটি ভ্রান্ত সম্প্রদায়ের নাম।এদের আক্বিদা হচ্ছে -তাক্বদীর বলতে কোন কিছু ই নাই। সব কিছু এমনিতে প্রাকৃতিক নিয়মে ই হচ্ছে।তারা আরো বিশ্বাস করে -বান্দাই তার কাজের স্রষ্টা।তাকে তার কাজের ব্যপারে পূর্ণ স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে।আধুনিক বস্তুবাদী সমাজে ও অনুরূপ চিন্তা বিশ্বাসের প্রাদুর্ভাব পরিলক্ষিত হয়।তাই নিম্নে আক্বাইদে আহলে সুন্নাত ওয়াল জ'মাতের এতদসংক্রান্ত  আক্বীদা সংক্ষিপ্ত পরিসরে পেষ করা হল।

আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা'তঃআল্লামা মুল্লা জিয়ন হানাফী (রাঃ) বলেন-عقاءد السنة والجماعة فانها متوسطة بين ্‌الجبر والقدرআক্বাইদে সুন্নাত ওয়াল জামা'ত হচ্ছে সহজ সরল পথের ধারক যেহেতু সে আক্বাইদ জাবরিয়া ,ক্বাদ,রীয়া রাফেযী,খারেজী তাস'বীহি ও তা'তিলী সম্প্রদায়ের মধ্যবর্তি পথে সমান্তরাল গতিতে প্রেম ওজ্ঞান বুদ্ধির সমন্বয়ে ধাবিত হয়েছে।

তাই আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা'তের আক্বীদা হল আল্লাহ সব কিছুর খালিক।বান্দাহ হল কাসিব তথা অর্জন কারী।তাই মন্দ সৃষ্টির কারনে আল্লাহ মন্দকে ভাল বাসেন বলা যাবে না। বান্দা কে অর্জনের এখতিয়ার দেয়ার কারনে মন্দ কোন কিছু গ্রহন করলে বান্দা খারাপ অর্জনের দায় বান্দা নিজে ই বহন করতে হবে।আল্লাহ তালা' কুফরীর প্রতি নারাজ জেনেও তা অর্জন করার কারনে বান্দা দোষী সাব্যস্থ হবে।অনুরূপ চোর চুরির মত মন্দ বিষয়কে গ্রহন বা অর্জনের জন্য দায়ী এবং শাস্থির যোগ্য।সব মন্দের ব্যপারে একই  কথা। সুতরাং চোর কে চুরি করার আর গৃহস্থ কে ধরার দুমূখী নীতির কথা আল্লাহর শানে আরূপ করা জঘন্য খেয়ানত ও ঈমান পরিপন্থি,অমার্জনীয় দৃষ্টতা বটে।

তাক্বদীরের প্রতি বিশ্বাসের ক্ষেত্রে দূর্মূখেরা প্রশ্ন তুলে সব কিছু যেহেতু হয়ে ই আছে তাহলে আমাদের আর চেষ্টা তদবীরের কি প্রয়োজন? আমি যদি প্রশ্ন করি-কি হয়ে আছে তোমার জানা আছে কিনা?তাহলে উত্তর তো অবশ্য ই হবে জানা নাই।তাহলে বলব যেহেতু জানা নাই সেহেতু তদবীর চেষ্টা সাধনা ও তাক্বদীরের ই অন্তর্ভূক্ত।মহা নবী এ জন্য ই তাক্বদীরের প্রতি বিশ্বাস রেখে নিজ নিজ দায়িত্ব আঞ্জাম দেয়ার তাক্বীদ প্রদান করেছেন।বিতর্ক সৃষ্টি করে আল্লাহর কুদরতে হাত দেয়া থেকে কঠোর ভাবে নিষেধ করেছেন।আল্লাহ আমাদের কে সমুজ দান করুন।আমীন।

৩৮২

কোন তথ্যসূত্র নেই

আপনার জন্য প্রস্তাবিত

ইসলামিক ফাউন্ডেশন

To preach and propagate the values and ideals of Islam, the only complete code of life acceptable to the Almighty Allah, in its right perspective as a religion of humanity, tolerance and universal brotherhood and bring the majority people of Bangladesh under the banner of Islam

অফিসিয়াল ঠিকানা: অফিসিয়াল ঠিকানা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, আগারগাঁও, শের-এ- বাংলা নগর, ঢাকা -১২০৭