সংবাদ :
জাতীয় : জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত- বাংলাদেশের আকাশে আজ পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে, ১০ জুলাই রবিবার সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে ইসলামিক বিশ্ব : আরাফাতে খুতবা দিবেন শায়খ ড. মুহাম্মাদ আবদুল করীম , হজের খুতবা সরাসরি সম্প্রচার হবে বাংলাসহ ১৪ ভাষায় আন্তর্জাতিক : আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় ৩য় স্থান অর্জনকারী সালেহ আহমদ তাকরিমকে সংবর্ধনা প্রদান করল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন

  • টেক্সট সাইজ
  • A
  • A
  • A
  • |
  • রং
  • C
  • A
  • A
  • A

আল্ কুরআনুল কারীম : মানবজাতির হিদায়েতের উৎস
প্রিন্ট
প্রকাশঃ : বৃহস্পতিবার ১৫/০৬/২০১৭

এক.
আল্লাহ তাআলা বিশ্বজাহানের খালিক ও মালিক। বাকি সবকিছু তাঁর মাখলুক বা সৃষ্টি। সকল সৃষ্টির মাঝে মানবজাতিকে তিনি বসিয়েছেন শ্রেষ্ঠত্বের আসনে। তাদের হিদায়েতের জন্য পাঠিয়েছেন আসমানী কিতাব ও নবী-রাসূল। যাদের দায়িত্ব হল উম্মতের সামনে আল্লাহর কিতাবসমূহের ব্যাখ্যা পেশ করা। তাঁর বিধি-বিধান এবং পছন্দ-অপছন্দ সম্পর্কে উম্মতকে অবহিত করা। নবী – রাসূলগণ পরিপূর্ণভাবে এ দায়িত্ব পালন করেছেন। নিজেরা আমল করার মাধ্যমে মানুষকে আল্লাহর কিতাবের বাস্তব প্রয়োগ শিখিয়েছেন।
নবী ও কিতাব প্রেরণের এ ধারাবাহিকতার পূর্ণতা ঘটে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রেরণের মাধ্যমে। তাঁর পর আর নতুন কোন নবীর আবির্ভাব ঘটবেনা। তেমনি কুরআনের পর আর কোন আসমানী কিতাবও অবতীর্ণ করা হবে না।
চিরন্তন হেদায়েতের আকরগ্রন্থ এ কুরআন। পবিত্র কুরআন মূলত মানবজাতির প্রতি আল্লাহ তাআলার মহান এক নেয়ামত। শ্রেষ্ঠ এক উপহার। কেননা
এর মাধ্যমে প্রবাহিত হয় হিদায়াতের ঝর্ণাধারা । আর তাঁর মূল পরিচয়:
الم. ذَلِكَ الْكِتَابُ لَا رَيْبَ فِيهِ. هُدًى لِلْمُتَّقِينَ
অর্থাৎ, “আলিফ, লাম, মীম। এটি সন্দেহমুক্ত একটি কিতাব। খোদাভীরুদের জন্য সঠিকপথ প্রদর্শনকারী।” এটাই হল তার মূল অভিধা। মানবজীবনের সব সমস্যার সমাধান ও পূর্ণ দিকনির্দেশনা এখানে রয়েছে। এ কিতাব তাঁর অনুসারীকে তাকওয়া অর্জনের পদ্ধতি শেখায়। মাওলার সাথে বান্দার মুহাব্বতের সম্পর্ক জুড়ে দেয়। আল্লাহর আদেশ নিষেধ সম্পর্কে বান্দাকে অবহিত করে।
দুই.
পবিত্র কুরআন মানবজাতিকে সকল প্রকার গোমরাহী থেকে হেফাযত করে। হেদায়েতের রাজপথে বান্দাকে এগিয়ে দেয়াই তার কাজ। যে পথে চলে বান্দা পৌঁছে যাবে তার রবের সান্নিধ্যে। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “আমি তোমাদের মাঝে দু‘টি জিনিস রেখে যাচ্ছি। যতক্ষণ তোমরা এগুলোকে আঁকড়ে থাকবে কিছুতেই গোমরাহ তথা বিভ্রান্ত হবেনা। এক. আল্লাহর কিতাব। দুই. রাসূল সা. সুন্নাত।”
পবিত্র কুরআনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল তার সামগ্রিকতা। ইরশাদ হচ্ছে,
وَنَزَّلْنَا عَلَيْكَ الْكِتَابَ تِبْيَاناً لِكُلِّ شَيْء
অর্থাৎ, “সৃষ্টিকুলের সকল সমস্যার সমাধান দিয়েই আমি এ কিতাব আপনার উপর অবতীর্ণ করেছি।” এটাই তার শেষ্ঠত্বের অন্যতম কারণ। তার অনন্য বৈশিষ্ট্য।
আল-কুরআনের এ সামগ্রিকতার পরিচয়টি ফুটে ওঠেছে স্বয়ং মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পবিত্র বাণীতে। আল-কুরআনের পরিচয় দিতে গিয়ে তিনি ইরশাদ করেন-
كتاب الله فيه نبأ من قبلكم و خبر ما بعدكم … ومن دعا إليه هدى إلى صراط مستقيم.
“পবিত্র এ কুরআন; আল্লাহর কিতাব। যাতে আছে তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতসমূহের বিবরণ ও পরবর্তী প্রজন্মের সংবাদ…। আর যে কুরআনের প্রতি আহ্বান করবে, তাকে পরিচালিত করা হবে সঠিক পথে।” যথার্থ এক গ্রন্থ এ কুরআন; অনর্থক নয় এর কিছুই। যে দাম্ভিক এ কিতাবের অনুসরণ ছেড়ে দেবে তাকে আল্লাহ তাআলা ধ্বংস করবেন। যে এ কিতাব ছাড়া অন্য কিতাবে হিদায়েত তালাশ করবে তাকে তিনি পথভ্রষ্ট করবেন। আল্লাহ তাআলার মজবুত রজ্জু হল এ কুরআন। প্রজ্ঞাপূর্ণ নসীহতসম্বলিত। এ কিতাবই সরল-সঠিক পথের দিশারী। বক্রতা থেকে মুক্ত। যা পাঠে যবান আড়ষ্ট হয় না। জ্ঞানীরা কখনো এ কিতাবের অতল জ্ঞানসমুদ্র থেকে জ্ঞাণ আহরণকারীগণ ‘শেষ’ বলে পরিতৃপ্ত হয় না। বারবার পাঠেও এ কিতাব পুরোনো মনে হয় না। এর জ্ঞানের নতুন নতুন দ্বার সদা উন্মোচণশীল; কখনো তা শেষ হবার নয়। এ কিতাব হেদায়েতের এমন এক ‘অমর গ্রন্থ’ যা পাঠ করে জিন সম্প্রদায়ও এ কথা বলতে বাধ্য হয়েছে যে, “আমরা আজ এমন আশ্চর্য এক কুরআন শুনলাম যা সত্যের দিকে পথনির্দেশ করে। ফলে আমরাও এর প্রতি ঈমান নিয়ে এসেছি।”
(সূরা জিন: ১-২)
যে ব্যক্তি এ কিতাব অনুসারে কথা বলবে সে সত্য বলবে। যে তদানুযায়ী আমল করবে সে পুরস্কৃত হবে। এর বিধান মেনে যে ফায়সালা করবে সে ন্যায়সঙ্গত ফায়সালাই করবে। আর যে ব্যক্তি এ কিতাবের দিকে মানুষকে আহবান করবে সে তো সরল-সঠিক পথেরই দিশা পেয়ে গেল।”
(সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং- ৩০৭০)
তিন.
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবন ছিল এ কিতাবের বাস্তব নমুনা। আল কুরআনের ব্যবহারিক রূপ। আম্মাজান হযরত আয়শা রা. এর নিকট রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আখলাক ও চরিত্রমাধুরী সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেছিলেন- “তাঁর আখলাক ও চরিত্রমাধুরী ছিল পবিত্র কুরআন।” তাই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সীরাতই পবিত্র কুরআনের ব্যাখ্যা। হাদীসের কিতাবসমূহে তা বর্ণিত হয়েছে বিস্তারিতভাবে।
‘পবিত্র কুরআনুল কারীম’ আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ‘হাদীস শরীফ’ তথা সুন্নতে নববী শরীয়তের মৌলিক দুটি উৎস। মৌলিক এ দুই উৎসের সাথে হিদায়েতের গভীর ও নিবীড় সম্পর্ক রয়েছে। সকল প্রকার গোমরাহী থেকে মানুষের জন্য যা রক্ষাকবচ।
শরীয়তে ইসলামের মূল এ দুই উৎস তথা কুরআন ও হাদীসের সারনির্যাস ফিকাহশাস্ত্রে বিন্যস্ত আকারে সংকলিত হয়েছে। আল্লাহপ্রদত্ত্ব বিশেষ যোগ্যতা বলে মুজতাহিদ ফুকাহায়ে কিরাম তা সংকলন করেছেন। কুরআন ও হাদীসের সুবিশাল ভান্ডার ঘেটে ইসলামের বিধি-বিধানকে তারা সাধারণ মানুষের সামনে পেশ করেছেন সুবিন্যস্তভাবে। সাধারণ মানুষের জন্য কুরআন ও হাদীস অনুসারে আমল করাকে তারা সহজ করে দিয়েছেন। উম্মতের প্রতি এ তাদের বিরাট এহসান। আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে জান্নাতের সর্বোচ্চ মাকাম দান করুন। আমীন।

৩৪৯

কোন তথ্যসূত্র নেই

আপনার জন্য প্রস্তাবিত

ইসলামিক ফাউন্ডেশন

To preach and propagate the values and ideals of Islam, the only complete code of life acceptable to the Almighty Allah, in its right perspective as a religion of humanity, tolerance and universal brotherhood and bring the majority people of Bangladesh under the banner of Islam

অফিসিয়াল ঠিকানা: অফিসিয়াল ঠিকানা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, আগারগাঁও, শের-এ- বাংলা নগর, ঢাকা -১২০৭