সংবাদ :
জাতীয় : জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত- বাংলাদেশের আকাশে আজ পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে, ১০ জুলাই রবিবার সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে ইসলামিক বিশ্ব : আরাফাতে খুতবা দিবেন শায়খ ড. মুহাম্মাদ আবদুল করীম , হজের খুতবা সরাসরি সম্প্রচার হবে বাংলাসহ ১৪ ভাষায় আন্তর্জাতিক : আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় ৩য় স্থান অর্জনকারী সালেহ আহমদ তাকরিমকে সংবর্ধনা প্রদান করল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন

  • টেক্সট সাইজ
  • A
  • A
  • A
  • |
  • রং
  • C
  • A
  • A
  • A

কুরআন-হাদিসে হজ
প্রিন্ট
প্রকাশঃ : বৃহস্পতিবার ১৫/০৬/২০১৭

ইসলামের পাঁচটি রুকুনের মধ্যে হজ অন্যতম। হজ মানুষের প্রতি মহান আল্লাহ কর্তৃক ফরজকৃত একটি আর্থ-দৈহিক ইবাদত- যা সক্ষম ব্যক্তির ওপর সারা জীবনে কেবল একবারই ফরজ। 

হজ কবুলের পূর্বশর্ত : হজ কবুল হওয়ার জন্য হালাল সম্পদ থাকা বাঞ্ছনীয়। অন্যথায় তা কবুল হবে না। কেননা নবী সা: বলেছেন, ‘আল্লাহ পূতঃপবিত্র। তিনি পবিত্র সম্পদ ছাড়া অন্য কিছু কবুল করেন না।’ অপর এক হাদিসে আছে, ‘যখন কোনো ব্যক্তি হালাল সম্পদ নিয়ে হজের উদ্দেশ্যে বের হয়, অতঃপর বাহনে আরোহণ করে বলেন, ‘লাব্বায়িক আলাহুম্মা লাব্বায়িক’ তখন আসমান থেকে জবাব আসে, ‘হজের উদ্দেশ্যে তোমার বের হওয়া ও হজের উদ্দেশ্যে আগমন মঞ্জুর, তোমার সৌভাগ্যের দ্বার উদঘাটিত, তোমার পাথেয় হালাল, তোমার বাহন হালাল, তোমার হজ কবুল ও ত্র“টিমুক্ত ঘোষণা করলাম।’
হজ ফরজ হওয়ার ব্যাপারে কুরআন ও হাদিস : জীবনে একবার হজ করা ফরজ। মহান আল্লাহ হজ ফরজ হওয়া সম্পর্কে বলেন, ‘মানুষের মধ্যে যার সেখানে (মাসজিদুল হারামে) যাওয়ার সামর্থ্য আছে, আল্লাহর উদ্দেশ্যে ওই ঘরের হজ করা তার অবশ্য কর্তব্য। আর যে প্রত্যাখ্যান করবে সে জেনে নিক, নিশ্চয় আল্লাহ বিশ্ববাসীর মুখাপেক্ষী নন’ (সূরা আলে ইমরান : ৯৭)।
হজ ফরজ হওয়ার ব্যাপারে মহানবী সা:-এর অনেক হাদিস রয়েছে। কয়েকটি হাদিস উল্লেখ করা হলো-
হজরত আবু হুরায়রা রা: বলেন, রাসূলুল্লাহ সা: আমাদের উদ্দেশে ভাষণ দেন। তিনি বলেন, ‘হে মানবমণ্ডলী! নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের ওপর হজ ফরজ করেছেন। অতএব তোমরা হজ করো। এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসূল! প্রতি বছর? তিনি চুপ করে থাকলেন। তিনবার একই কথা জিজ্ঞেস করার পর রাসূলুল্লাহ সা: বললেন, আমি হ্যাঁ বললে তা (প্রতি বছর পালন করা) বাধ্যতামূলক হয়ে যেত। অথচ (তা পালনে) তোমরা সক্ষম হতে না’ (মুসলিম)।
হজরত ওমর ইবনুল খাত্তাব রা: থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘আমার ইচ্ছা হয় কিছুসংখ্যক লোককে রাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থানে প্রেরণ করি এবং তারা দেখুক ওই সব লোককে যারা হজ ফরজ হওয়া সত্ত্বেও তা আদায় করে না এবং তারা তাদের ওপর জিজিয়া কর আরোপ করুক। কেননা সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যারা হজ আদায় করে না তারা মুসলমান নয়’ (আস-সুনান)।
নবী সা: বলেন, ‘হে মানব জাতি! আল্লাহ তোমাদের ওপর হজ ফরজ করেছেন, কাজেই তোমরা হজ আদায় করো’ (মুসলিম)।
হজের ফজিলত : হজের ফজিলত সম্পর্কে মহানবী সা:-এর অনেক হাদিস রয়েছে। এখানে কয়েকটি হাদিস উল্লেখ করা হলো-
হজরত আবু হুরায়রা রা: বলেন, রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘একটি ওমরা পরবর্তী ওমরা পর্যন্ত মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহের কাফফারাস্বরূপ। আর কবুল হজের প্রতিদান একমাত্র জান্নাত’ (বুখারি, মুসলিম, তিরমিজি, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, মুয়াত্তা ইমাম মালিক, মুসনাদে আহমদ)
হজরত আবু হুরায়রা রা: বলেন, রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর (সন্তুষ্টিলাভের) জন্য হজ করে এবং স্ত্রীসম্ভোগ ও পাপাচারে জড়িয়ে পড়ে না, সে তার জন্মদিনের ন্যায় (নিষ্পাপ অবস্থায়) ফিরে আসে’ (বুখারি, মুসলিম, তিরমিজি, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমদ)।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা: বলেন, রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘তোমরা একই সাথে পর পর হজ ও ওমরা করো। কেননা হজ ও ওমরা অভাব ও পাপরাশি এমনভাবে দূর করে, যেমন হাঁপরের আগুন লোহা ও সোনা-রুপার ময়লা দূর করে। আর কবুল হজের প্রতিদান হচ্ছে একমাত্র জান্নাত’ (তিরমিজি, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমদ)।
৪. হজরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘হজ ও ওমরা আদায়কারীরা হচ্ছেন আল্লাহর মেহমান। তারা আল্লাহর কাছে দোয়া করলে তিনি তা কবুল করেন এবং ক্ষমা চাইলে ক্ষমা করে দেন’ (ইবনে মাজাহ)।
হজ না করার পরিণাম
হজ ফরজ ইবাদত। সামর্থ্যবান মুসলমানদের এ ইবাদত আদায় করা অবশ্য কর্তব্য। হজ না করার পরিণাম অত্যন্ত ভয়াবহ। মনে রাখতে হবে, হজ না করলে কিংবা অস্বীকার করলে আল্লাহর কোনো ক্ষতি হবে না, ক্ষতি হবে আমাদেরই। মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘মানুষের মধ্যে যার সেখানে (মাসজিদুল হারামে) যাওয়ার সামর্থ্য আছে, আল্লাহর উদ্দেশে ওই ঘরের হজ করা তার অবশ্য কর্তব্য। আর যে অস্বীকার করবে, সে জেনে রাখুক, নিশ্চয় আল্লাহ বিশ্ববাসীর মুখাপেক্ষী নন’ (সূরা আলে ইমরান : ৯৭)।
মহানবী সা: বলেছেন, ‘যে ব্যক্তিকে কোনো অনিবার্য প্রয়োজন অথবা জালিম শাসক অথবা দুরারোগ্য রোগব্যাধি হজ আদায়ে বাধার সৃষ্টি করেনি, সে হজ না করে মারা গেলে চাই ইহুদি হয়ে মরুক অথবা খ্রিষ্টান হয়ে মরুক’ (দারেমি)।
মহিলাদের হজ : হানাফি মাজহাব মতে হজে গমনেচ্ছু মহিলার সাথে তার স্বামী বা মাহরাম আত্মীয় (যাদের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন স্থায়ীভাবে হারাম) থাকা শর্ত। ইমাম মালেক ও ইমাম শাফি আ: বলেন, মহিলার সাথে মাহরাম আত্মীয় থাকা শর্ত নয় বরং শর্ত হচ্ছে, সে তার সতীত্ব রক্ষা করতে পারবে কি না তা নিশ্চিত করা। এ অভিমত অনুযায়ী সে যদি তার সতীত্ব ও সম্ভ্রম বজায় রেখে হজ করার নিশ্চয়তা লাভ করে, তবে মাহরাম আত্মীয় ছাড়াও হজে যেতে পারে।
শেষ কথা : হজ বিশ্ব মুসলিমভ্রাতৃত্বের চূড়ান্ত নিদর্শন। বিশ্ব ভ্রাতৃত্বের এক বিরাট প্রদর্শনী। হজ পরস্পর পরস্পরের প্রতি সৌহার্দ্য, প্রেমপ্রীতি ও স্নেহ বিস্তার করার শিক্ষা দেয়। শিক্ষা দেয় ধনী-গরিব, রাজা-প্রজা, উঁচু-নিচুর মধ্যে কোনো ভেদাভেদ নেই। সাম্য মৈত্রী ও ভ্রাতৃত্বের অপূর্ব নিদর্শন হজের সময় সবার মুখে একই বুলি লাব্বায়িক আল্লাহুমা লব্বায়িক ধ্বনিতে মক্কার আকাশ বাতাস হয়ে ওঠে মুখরিত। এই আন্তর্জাতিক মিলনের ভেতর দিয়ে গড়ে ওঠে মুসলিম ভ্রাতৃসঙ্ঘ। মুমিনদের বৃহত্তর জীবনে যোগ্যতার সাথে দায়িত্ব পালনে প্রস্তুত করে তোলে।

৪০০

কোন তথ্যসূত্র নেই

আপনার জন্য প্রস্তাবিত

  • কুরআন-হাদিসে হজ

    ইসলামের পাঁচটি রুকুনের মধ্যে হজ অন্যতম। হজ মানুষের প্রতি মহান......

ইসলামিক ফাউন্ডেশন

To preach and propagate the values and ideals of Islam, the only complete code of life acceptable to the Almighty Allah, in its right perspective as a religion of humanity, tolerance and universal brotherhood and bring the majority people of Bangladesh under the banner of Islam

অফিসিয়াল ঠিকানা: অফিসিয়াল ঠিকানা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, আগারগাঁও, শের-এ- বাংলা নগর, ঢাকা -১২০৭