সংবাদ :
জাতীয় : জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত- বাংলাদেশের আকাশে আজ পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে, ১০ জুলাই রবিবার সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে ইসলামিক বিশ্ব : আরাফাতে খুতবা দিবেন শায়খ ড. মুহাম্মাদ আবদুল করীম , হজের খুতবা সরাসরি সম্প্রচার হবে বাংলাসহ ১৪ ভাষায় আন্তর্জাতিক : আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় ৩য় স্থান অর্জনকারী সালেহ আহমদ তাকরিমকে সংবর্ধনা প্রদান করল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন

  • টেক্সট সাইজ
  • A
  • A
  • A
  • |
  • রং
  • C
  • A
  • A
  • A

রমযানুল মোবারক
প্রিন্ট
প্রকাশঃ : শুক্রবার ১৬/০৬/২০১৭

                                 ----------আব্দুল্লাহ শাকির

রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস রমজানুল মোবারক
আল্লাহর বিশেষ করুণা ও দয়ার অপার সুযোগ এবং
সমাজের পাপী-তাপী সব মানুষের জন্য এক
অনাবিল শান্তি ও চিরস্থায়ী মুক্তির দিশারি। মাসব্যাপী
সিয়াম-সাধনার দ্বিতীয় ১০ দিনকে বলা হয় মাগফিরাতের
দশক অর্থাৎ ১১ থেকে ২০ রোজা পর্যন্ত
মাগফিরাত; যার অর্থ ক্ষমা। আর শেষ ১০ দিনকে
নাজাতের দশক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। নাজাত মানে
মুক্তি। একটানা ২০ দিন সংযম-সাধনার পর রোজাদার এমন
একটি পর্যায়ে পৌঁছে যান, যেখানে রয়েছে পরম
প্রাপ্তি। মানুষের জন্য জাহান্নামের আগুন ও শাস্তি
থেকে মুক্তির চেয়ে বড় পাওনা আর কিছু নেই।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘রমজানের প্রথম ১০ দিন
রহমতের, দ্বিতীয় ১০ দিন মাগফিরাত লাভের এবং
তৃতীয় ১০ দিন জাহান্নাম থেকে নাজাত
প্রাপ্তির।’ (মিশকাত)
একজন রোজাদার সারা বছরের নেকি ও পুণ্যের
ঘাটতি পূরণের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা-সাধনা চালিয়ে যান।
সততা, ন্যায়নিষ্ঠা ও সত্যবাদিতায় তিনি নিজেকে
সুশোভিত করে আত্মশুদ্ধি লাভ করেন, যাবতীয়
পাপ-পঙ্কিলতা, অন্যায়, অপরাধমূলক চিন্তাভাবনা ও অসৎ
কাজকর্ম থেকে বিরত থেকে রোজাদার যখন
রোজা রেখে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের
উদ্দেশ্যে ন্যায়, কল্যাণ ও সৎ পথে পরিচালিত হন,
তখন মাসের ১০ দিন অতিবাহিত হলে তিনি আল্লাহর
রহমত তথা দয়া, করুণা ও অনুগ্রহ লাভে ধন্য হন।
অতঃপর যখন এমনিভাবে রমজান মাসের আরও ১০ দিন
অতিবাহিত করেন, তখন রাহমানুর রাহিম তাঁর গুনাহখাতা মাফ
করে দেন। এর পরও যখন তিনি মাহে রমজানের
শেষ ১০টি দিন এভাবে সিয়াম-সাধনার মধ্য দিয়ে
অতিবাহিত করেন, তখন রোজাদার জাহান্নাম থেকে
নাজাত বা মুক্তিযোগ্য হন।
মাহে রমজানের প্রতি দিবা-রাত্রিতেই অনেক
লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়া হয় এবং
দোয়া কবুল হয়। এ মাসে পারলৌকিক মুক্তি অর্জনের
বিষয়টি নিঃসন্দেহে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
রোজাদারের ক্ষমা অবশ্যম্ভাবী, প্রার্থনাকারী
ব্যর্থ মনোরথ হবে না। হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে
যে, ‘মাহে রমজানের প্রতি রাতেই একজন
ফেরেশতা ঘোষণা করতে থাকেন: ‘হে পুণ্য
অন্বেষণকারী! অগ্রসর হও। হে পাপাচারী!
থামো, চোখ খোলো।’ তিনি আবার ঘোষণা
করেন, ‘ক্ষমাপ্রার্থীকে ক্ষমা করা হবে।
অনুতপ্তের অনুতাপ গ্রহণ করা হবে। প্রার্থনাকারীর
প্রার্থনা কবুল করা হবে।’
রমজান মাসে ইমানদার ব্যক্তির অন্তরে তাকওয়া বা
খোদাভীতি ও আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা জাগ্রত হয়।
ফলে তিনি আল্লাহর দরবারে মাগফিরাত কামনা করেন।
গরিব-দুঃখীদের প্রতি দান-সাদকার পরিমাণ বাড়িয়ে
দেন। ন্যায়-অন্যায়ের তীব্র অনুভূতি তার মনে
জেগে ওঠে। নিজে সকল প্রকার খারাপ কাজ
পরিহার করেন, নেক কাজ করেন এবং অন্যকেও
সৎ কাজে উৎসাহিত করেন ও মন্দ কাজে নিরুৎসাহিত
করেন। রোজাদার ব্যক্তি ভালো কাজে অগ্রণী
ভূমিকা পালন করেন। আল্লাহর অপার সন্তুষ্টি
অর্জনের জন্য ইবাদত-বন্দেগি, জিকির-আজকার,
তাসবিহ-তাহলিল, পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত ও দোয়া-
ইস্তেগফার করেন। সারা বছরের অন্যায় অপরাধের
জন্য অত্যন্ত বিনয়ী ও অশ্রুসিক্ত হয়ে পরম
করুণাময় অতি দয়ালু আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা
করেন।
মাহে রমজান বেহেশতপ্রত্যাশী মুমিন বান্দাদেরই
মাস, অভিশপ্ত শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে মুক্ত
খোদাভীরু পরহেজগার বান্দার জন্যই রমজানুল
মোবারক। নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘এ মাসে
চারটি কাজ অবশ্যকরণীয়। দুটি কাজ এমন যে তার
দ্বারা তোমাদের প্রতিপালক সন্তুষ্ট হন। অবশিষ্ট দুটি
এমন, যা ছাড়া তোমাদের কোনো গত্যন্তর
নেই। এই চারটির মধ্যে একটি হলো কালেমায়ে
শাহাদাত পাঠ করা, দ্বিতীয়টি হলো অধিক পরিমাণে
ইস্তেগফার বা ক্ষমা প্রার্থনা করা। এই দুটি কাজ
আল্লাহর দরবারে অতি পছন্দনীয়। তৃতীয় ও
চতুর্থ হলো জান্নাত লাভের আশা করা ও জাহান্নাম
থেকে পরিত্রাণের প্রার্থনা করা। এই দুটি এমন বিষয়,
যা তোমাদের জন্য একান্ত জরুরি।’ (ইবনে খুজাইমা)
পাপমুক্তি ও ক্ষমা লাভের প্রেরণা রোজাদার মুমিন
বান্দাদের উদ্বেলিত করে তোলে। তাই মাহে
রমজানে মসজিদে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের ব্যাপক
সমাগম ঘটে। সারা দিন রোজা পালন করে ক্লান্ত-
অবসন্ন দেহে আল্লাহর কালামের সম্মোহনে
তাঁরা খতমে তারাবি নামাজের জামাতে সমবেত হন।
শেষ রাতে সপরিবারে সেহির খেতে জেগে
ওঠেন। অন্যায় ও অসৎ কাজের বিপক্ষে এবং সত্য-
ন্যায়ের সপক্ষে তাঁরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে যান। মাতৃগর্ভ
থেকে মানুষ যেভাবে নিষ্পাপ অবস্থায় ভূমিষ্ঠ হয়,
মাহে রমজানের ৩০ দিন যথাযথভাবে রোজা পালন
করলে তেমন নিষ্কলুষ হয়ে যাওয়ার সুযোগ
রয়েছে। এসব মুমিন বান্দার মাগফিরাত ও নাজাতপ্রাপ্তি
সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ফরমান, ‘যারা রমজানের
চাঁদের প্রথম তারিখ থেকে শেষ দিন পর্যন্ত
রোজা রেখেছে, তারা সেদিনের মতোই
নিষ্পাপ হয়ে যাবে, যেদিন তাদের মাতা তাদের
নিষ্পাপ রূপে জন্ম দিয়েছেন।’ তিনি আরও
বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান মাস পেয়ে নিষ্পাপ
হতে পারল না, তার মতো হতভাগ্য এই জগতে আর
কেউ নেই।’
রোজাদারদের মধ্যে এমন অনেক ইমানদার
আছেন, যাঁরা তাকওয়া ও পরহেজগারসম্পন্ন এবং তাঁরা
যাবতীয় পাপাচার ও বর্জনীয় কাজকর্ম থেকে
বেঁচে থাকার জন্য অত্যন্ত সতর্ক থাকেন। তথাপি
সিয়াম-সাধনার মধ্যে কোনো রকম ভুলত্রুটি হয়ে
গেলে তৎক্ষণাৎ তাঁরা তওবা ও ইস্তেগফার করে
নিজেদের সংশোধন ও ত্রুটিমুক্ত করে নেন। এই
শ্রেণীর রোজাদারদের প্রতি রমজান মাস শুরু
হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রহমতের বারি বর্ষণ হতে
থাকে। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে: ‘আর
তিনিই (আল্লাহ) তাঁর বান্দাদের তওবা কবুল করেন এবং
পাপসমূহ ক্ষমা করে দেন।’ (সূরা-আশ শুরা, আয়াত: ১৫)
মাহে রমজানের মধ্যে জাগতিক কল্যাণ ও পারলৌকিক
মুক্তির বার্তা রয়েছে। ইহকালীন কল্যাণ
প্রচেষ্টার মধ্য দিয়েই রোজাদার পারলৌকিক শান্তির
পথ রচনা করবে। তাই সিয়াম-সাধনার মাধ্যমে আল্লাহর
অপার অনুগ্রহ লাভ করে ক্ষমা, মুক্তি ও
নিষ্কৃতিপ্রাপ্তদের মধ্যে নিজেদের অধিষ্ঠিত করা
প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের একান্ত কাম্য হওয়া উচিত।

৩১৭

কোন তথ্যসূত্র নেই

ইসলামিক ফাউন্ডেশন

To preach and propagate the values and ideals of Islam, the only complete code of life acceptable to the Almighty Allah, in its right perspective as a religion of humanity, tolerance and universal brotherhood and bring the majority people of Bangladesh under the banner of Islam

অফিসিয়াল ঠিকানা: অফিসিয়াল ঠিকানা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, আগারগাঁও, শের-এ- বাংলা নগর, ঢাকা -১২০৭