মাওলানা মোঃ রেজাউল করিম খান
খতিব,
পীরযাত্রাপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ
বুড়িচং, কুমিল্লা।
email:[email protected]
সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের যিনি এই অধমকে কিছু লেখার সাহস দিয়েছেন।
আজ এমন একটি বিষয় উপস্থাপন করার চেষ্টা করছি মানুষের প্রাত্যহিক জীবনে চলতে গেলে অনেকেই এর সম্মুখীন হতে হয়।
মানুষের জীবনের এক অনস্বীকার্য বাস্তবতা হচ্ছে- ঋণ আদান-প্রদান। প্রয়োজনের সময় মানুষ ঋণ নেয়। ঋণের আদান-প্রদানে ঋণগ্রহীতা ঋণের টাকা নিয়ে যেমন উপকৃত হয় এবং তার প্রয়োজন পূরণ করতে পারে, তেমনি ঋণদাতাও এর মধ্য দিয়ে বিপদগ্রস্ত ব্যক্তির সাহায্যে এগিয়ে আসে।
মানুষের জীবনের এক অনস্বীকার্য বাস্তবতা হচ্ছে- ঋণ আদান-প্রদান। প্রয়োজনের সময় মানুষ ঋণ নেয়। ঋণের আদান-প্রদানে ঋণগ্রহীতা ঋণের টাকা নিয়ে যেমন উপকৃত হয় এবং তার প্রয়োজন পূরণ করতে পারে, তেমনি ঋণদাতাও এর মধ্য দিয়ে বিপদগ্রস্ত ব্যক্তির সাহায্যে এগিয়ে আসে।
পবিত্র কোরআন ও হাদিসে একদিকে ঋণ প্রদানকে উৎসাহিত করা হয়েছে, অপরদিকে ঋণ পরিশোধের বিষয়ে যথেষ্ট গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। যারা সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও ঋণ পরিশোধে টালবাহানা করবে তাদের জন্যে হুঁশিয়ারিও উচ্চারিত হয়েছে।
ঋণ যথারীতি পরিশোধের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঋণ প্রদান করে ঋণদাতা গ্রহীতাকে উপকার ও অনুগ্রহ করে থাকে। কিন্তু ঋণ পরিশোধ কোনো অনুগ্রহ নয়, বরং ঋণগ্রহীতার ওপর এক অবধারিত দায়িত্ব। ঋণগ্রহীতার ওপর এটি ঋণদাতার অধিকার। এমনকি যদি ঋণগ্রহীতা ঋণ পরিশোধ করার পূর্বে মারা যায়, তাহলে কাফন-দাফনের পর প্রথমেই তার রেখে যাওয়া সম্পদ থেকে ঋণ পরিশোধ করে দিতে হবে। ঋণ পরিশোধের পর যদি অতিরিক্ত কিছু থাকে, তাহলেই কেবল তার ওয়ারিশদের মাঝে তা বণ্টন করা হবে এবং তাতে তার অসিয়ত কার্যকর হবে।
ঋণ পরিশোধের বিষয়টি একদিকে যেমন বাধ্যতামূলক, তেমনি হাদিস শরিফে এর ফজিলতের কথাও বর্ণিত হয়েছে। এতে প্রকারান্তরে যথারীতি ঋণ পরিশোধের প্রতি উৎসাহিতও করা হয়েছে। সাহাবী হজরত আবু হুরায়রা রাযিয়াল্লাহু আনহুর বর্ণনা, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি পরিশোধ করে দেওয়ার নিয়তে কারও নিকট থেকে ঋণ গ্রহণ করে আল্লাহতায়ালা তার পক্ষ থেকে তা আদায় করে দেন।’ -সহিহ বোখারি: ২৩৮৭
যথাসময়ে ঋণ পরিশোধ করে দেওয়া কেবল পাওনা আদায় নয়, বরং এটা ওয়াদা রক্ষা করার অন্তর্ভুক্ত। সময়মতো যেন ঋণ পরিশোধ
রক্ষা করে ঋণদাতাকে তা জানাতে পারে, তার কাছ থেকে আরও কয়েকদিন সময় চেয়ে নিতে পারে। কিন্তু সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও ঋণ যথাসময়ে আদায়ে টালবাহানা করা- হাদিসে একে সরাসরি জুলুম বলা হয়েছে।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, সচ্ছল ব্যক্তির (ঋণ পরিশোধে) টালবাহানা করা অন্যায়। -সহিহ বোখারি: ২৪০০
সময়মতো ঋণ পরিশোধ না করলে পাওনাদার অনেক সময় কটুকথাও বলে। ইসলামের শিক্ষা হলো- পাওনা টাকার জন্যে তাগাদা করার সময় ঋণদাতা যেন সহজ ও কোমল আচরণ করে, কোনো কটুবাক্য ব্যবহার না করে। কিন্তু এরপরও যদি সে কটুকথা বলে, অসুন্দর আচরণ করে, তাহলে ঋণগ্রহীতার উচিত তার সঙ্গে বাদানুবাদে কিংবা ঝগড়া-তর্কে জড়িয়ে না পড়া।
বোখারি শরিফে আছে, এক ব্যক্তির কাছ থেকে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) কিছু ঋণ নিয়েছিলেন। সে এসে তার সঙ্গে কঠোর ভাষায় কথা বলতে লাগল। তা দেখে সাহাবায়ে কেরাম তাকে মারতে উদ্যত হচ্ছিলেন। কিন্তু হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) তাকে ছেড়ে দাও, পাওনাদারের একটু কথা বলার অধিকার রয়েছে। -সহিহ বোখারি: ২৪০১
ঋণপরিশোধের সময় ঋণগ্রহীতা ইচ্ছা করলে ঋণদাতার অনুগ্রহের বদলাস্বরূপ তাকে কিছু টাকা বাড়িয়েও দিতে পারে কিংবা যে মানের সম্পদ ঋণ নিয়েছিল তাকে এর চেয়ে উৎকৃষ্ট মানের জিনিস ফেরত দিতে পারে। বাড়িয়ে দেয়ার যদি স্পষ্ট কিংবা অস্পষ্ট কোনো পূর্ব কথা না থাকে, তাহলে এটা নিষিদ্ধ সুদের অন্তর্ভুক্তও হবে না। অনুগ্রহের বিনিময় তো অনুগ্রহ দিয়েই হতে পারে। প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনালেখ্য থেকেও আমরা এ অনুগ্রহের শিক্ষা পাই।
সাহাবি হজরত জাবের (রা.) বলেছেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) আমার কাছ থেকে একবার ঋণ নিয়েছিলেন। পরে যখন তিনি তা আমাকে পরিশোধ করলেন, তখন আমার পাওনার চেয়েও বাড়িয়ে দিলেন। -সুনানে আবু দাউদ: ৩৩৪৯
পাওনা পরিশোধকালে পাওনাদারের কৃতজ্ঞতা জানানো এবং তার জন্যে কল্যাণের দোয়া করা ইসলামের এক অনন্য শিক্ষা।
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) একবার সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আবি রবিয়া (রা.)-এর থেকে চার হাজার দিরহাম ঋণ করেছিলেন। যখন তা পরিশোধ করলেন, তখন তিনি তার জন্য এ দোয়া করলেন, আল্লাহতায়ালা তোমার পরিবার-পরিজন ও ধন-সম্পদে বরকত দান করুন। -সুনানে নাসায়ি: ৪৬৮৩
১০৫১
০
০
কোন তথ্যসূত্র নেই
আসসালামু আলাইকুম। ইমাম বাতায়নের সকল কর্মকর্তা ও সদস্যদের জানাই আন্তরিক......
মাওলানা মোঃ রেজাউল করিম খান খতিব, পীরযাত্রাপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ......
আসসালামু আলাইকুম । আমি ইমাম বাতায়ন এর নতুন সদস্য কোন......
জুমার গুরুত্ব ও ফজিলত – সংগ্রহে- মাওলানা রেজাউল করিম খান......