মানব কেন ? (দুই)
বিগত দিনে মাযহাব মানার বিষয়ে আমরা কোরআন ও হাদীছের আলোকে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেছিলাম । আজও এ বিষয়ে আরো কিছু দলিল আদিল্লা উপস্থাপন করব যাতে মাযহাব মানার অপরিহার্যতা অধিকতর স্পষ্ট হয়ে ওঠে
দুররুল মুখতার এর হাশিয়ায় আল্লামা আহমদ মিশরী তাহতাবী মিশরী আলাইহির রাহমা বলেন- من شذ عن جمهور اهل الفقه والعلم والسواد الاعظم قد شذ فيما يدخله في النار فعليكم معاشر المومنين باتباع الفرقة الناجية المسماة باهل السنة والجماعة فان نعرة الله تعالي و حفظه و توفيقه في موافقهم وخدلان وسخطه في مخالفتهم و هذه الطاءف الناجية قد اجتمعت اليوم في مذاهب اربعة وهم الحنفيون والمالكيون والشافعيون والحنبليون رحمهم الله تعالي ان كان خارجا عن هذه الاربعة في هذا الزمان فهوا من اهل البدع والنار .অর্থাৎ -“ যেব্যক্তি অধিকাংশ আলেম ফিক্বহবিদ,ও সাওয়াদে মাযহাব আযম থেকে পৃথক হবে সে একাকী হয়ে গেল, যা তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবে । অতএব হে মু’মিন সম্প্রদায়! তোমাদের উপর নাজাত প্রাপ্ত দল আহলে সুন্নাত ওয়াল জা’মাতের অনুসরন করা অপরিহার্য । কেননা তাদের অনুসরনের মধ্যে আল্লাহর সাহায্য, হেফাজত,তার তাওফিক্ব নির্ভরশীল । আল্লাহতা’লা কাউকে ত্যাগ করা ,অসন্তুষ্ট হওয়া , নির্ভর করে আহলে সুন্নাত ওয়াল জা’মাতের খেলাফ করার উপর। আর এ নাজাত প্রাপ্ত দল বর্তমানে চার মাযহাবের অন্তর্ভূক্ত । তারা হলেন হানাফী, শাফেয়ী, মালিকী ও হাম্বলি মাযহাবে ঐক্যবদ্ধ । আল্লাহ তা’লা তাদের উপর রহম করুন । এ যুগে যারা এ চার মাযহাবের বাহিরে, তারা হল বিদ’আতি ও জাহান্নামী” ।
লক্ষ্য করুন উদ্ধৃতি খানা ফাতওয়ার কিতাবের মুজতাহিদ গণের সপ্তম স্থবকের ফাতওয়া। এদের কে যদি আমরা না মানি,তাহলে দ্বীন ও ধর্মের বিধিবদ্ধ আমলি তরিকা আমরা পেলাম কোথা থেকে ?
বিগত লেখায় আমার এক ফ্রেণ্ড প্রশ্ন করলেন” আল্লাহর রাসূল আমাদেরকে কোরআন ও সুন্নাহ অনুসরন করলে কখনো গোমরা হব না বলেছেন ,মাযহাব মানার কথা তো বলেন নাই” । আমি সেখানে উনাকে বলেছি “এই হাদীছ মাযহাব না মানার দলিল নয়” । দেখুন কোরআন এবং সুন্নাহ মহা সমূদ্র । পবিত্র কালামে ছয়হাজার ছয়শত ৬৬ আয়াত । এর মধ্যে শরয়ী আয়াত, নাসেখ মানসূখ, আম,খাস , জাহির ,নাস ,মুশতারাক,মুয়াওয়াল, হাক্বিক্বাত ,মাযাজ, আয়াতের শানে নুযুল ইত্যাকার বিষয়াবলি কি যে কেউ বুঝে নিতে পারবে?
সনদের ভিত্তিতে দশ লক্ষের মত হাদীছ ।কোন হাদীছের প্রেক্ষাপট কি ? কোনটা আগের কোনটা পরের ? কোনটা রহিত ? কোনটার উপর আমল প্রতিষ্ঠিত, তা কি সকলে জানা সম্ভব ? অবশ্য ই না । তাহলে কোন সাহসে আপনি আমি একটা হাদীছ আর একটা আয়াত পেয়ে ই সিদ্ধান্ত দিয়ে দিব ? তাই তিরমিযি শরীফের জানাযার অধ্যায়ের এক হাদীছের এক অংশে বলা হয়েছে-لا يجوز لاحد ان ياخذ من الكتاب او السنة ما لم يجتمع فيه شروط الاجتهاد اللخ অর্থাৎ- ইজতিহাদের শর্ত সমূহ অনুপস্থিত এমন ব্যক্তি সরাসরি কোরআন সুন্নাহ থেকে দলিল সিদ্ধান্ত গ্রহন করা জায়েয নেই । এবার বলুন তিরমিযি সিহাহ সিত্তার অন্তর্ভূক্ত হাদীছের কিতাব । সেখান থেকে হাদীছ প্রমান করে ইজতিহাদের শর্ত নাই এমন ব্যক্তি কোরআন সুন্নাহ থেকে সরাসরী দলিল গ্রহন করা ই জায়ায নেই । তাহলে কোরআন সুন্নাহকে আপনি আকড়ে থাকবেন কি করে ? সুতরাং কোরআন সুন্নাহ কে আকড়ে ধরার জন্য ই আপনি মোজতাহিদ ইমাম গণের অনুসরন করা প্রয়োজন । আল্লাহ তা’লা তাই বলেছেন- اطيعوا الله و اطيعوا الرسول و اولي الامر منكم অর্থাৎ আনুগত্য কর আল্লাহর, আল্লাহর রাসূলের, আর আনুগত্য কর তোমাদের মধ্যে যারা উলুল আমর তথা কোরআন সূন্নাহ বিষয়ে পারংগম ব্যক্তি বর্গ তাদের। আর তারাই মাযহাবের ইমাম । যারা লক্ষ লক্ষ হাদীছের হাফেজ ছিলেন। কোরআনের ব্যপারে পূর্বে উল্লেখিত জ্ঞানের নির্ভরযোগ্য স্থল ছিলেন ।
কিফায়া নামক কিতাবে আছে- العامي اذا سمع حديثا ليس له ان ياخذ بظاهره جوازا ان يكون مصروفا عن ظاهره او منسوخا بخلاف الفتواي অর্থাৎ- “সাধারণ ব্যক্তি যখন হাদীছ শুনবে তখন হাদীছের বাহ্যিক অবস্থা আমল করা তার জন্য জায়েয নেই । কারণ হতে পারে হাদীছ খানার বাহ্যিক আমল হচ্ছেনা বা এটি রহিত বা বাতিল হয়ে গেছে” । (আল মাবসূত) দেখুন আপনি যদি বলেন এটা একটা ফাত্বওয়ার কিতাবের কথা আমরা তা মানি না । যেমনটি সালাফিরা বলে থাকেন । তাহলে আমি বলব, এই সিদ্ধান্ত টা কি পূর্বে উল্লেখিত তিরমিযি শরীফের হাদীছাংশের সিদ্ধান্তের সাথে সামঞ্জশ্য পূর্ণ নয় ? তাহলে আপনি তা না মানার অর্থ কি হাদীছ না মানা বুঝায় না ? তাই যদি হয় তাহলে আপনি আহলে হাদীছ হলেন কি করে?
আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী আল উসূলুল আরবা নামক কিতাবের ৭৫-৮৮ পৃষ্টায় আলোচনা করে সিদ্ধান্ত প্রদান করেন যে , بل وجب عليه ان يعين مذهبا من هذا المذاهب অর্থাৎ ইজতিহাদের জ্ঞানহীন ব্যক্তির জন্য ওয়াজিব হল উক্ত মাযহাব সমূহের কোন একটি মাযহাবকে নির্দিষ্ট করে নেয়া । আল্লামা মোল্লা যিয়ন আলাইহির রাহমা বলেন -اذا التزم مذهبا يجب عليه ان يدوم علي ذالك ولا يتبدل الي مذهب অর্থাৎ যে ব্যক্তি কোন মাযহাব কে গ্রহন করে নিল, তার জন্য সে মাযহাবের উপর অটল থাকা অপরিহার্য । সে মাযহাব পরিবর্তন করতে পারবে না ।
চলবে ।
৫১৪
০
০
কোন তথ্যসূত্র নেই
عن ابن مسعود رضي الله تعالي عنه قال قال رسول......
আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি, স্বজনপ্রীতি,গোত্রপ্রীতি ও সাম্প্রদায়িকতার কারনে......
عن انس رضي الله تعالي عنه قال لعن رسول الله......
আজ দিনের শেষে রাতের পবিত্র এক মুহূর্তে সুন্দর শুভক্ষণে সেই......
গত ০৩.০৪.১৮ ইং তারিখ রাত এগারটায় ইমাম বাতায়নে চোখ রেখে......
অযোধ্যায় বাবরী মসজিদের মাথায় উঠে শাবলের আঘাত করছিলেন তিনি মসজিদে।......
বাংলাদেশের ইতিহাসে ইমাম বাতায়নের পথচলা নজিরবিহীন এক ঘটনা। ডিজিটাল বাংলা......
আল্লাহ পাক আজ্জা ওয়া জাল্লাহ বিভিন্ন সময় নবী এবং রাসূল......
((৩১)আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল্লাহ ফরমান -ومن يعص الله ورسوله فقد......
ইসলাম সমাজ ও পারিবারিক বন্ধনকে সুন্দর সাবলিল ও সুষ্টু রাখার......