মানুষের অধিকার ও ক্ষমতার ব্যবহার
আমাদের জীবন, আমাদের সমাজ, আমাদের রাজনীতি, আমাদের শিক্ষাঙ্গন, আমাদের সংস্কৃতির বর্তমান হাল কি তেমন আশাব্যঞ্জক? সুস্থ জীবনছন্দ কি কোথাও আছে? কেন নেই? এই প্রশ্ন মানুষ কার কাছে করবে? জনে জনে যদি প্রশ্ন করা হয়, ‘আছেন কেমন’? কি যুবক, কি বৃদ্ধ, কি নারী, কি ছাত্র, সকলেরই একই উত্তর: ‘একে কি থাকা বলে! চলে যাচ্ছে কোনও রকমে।’ সবারই অবস্থা কম বা বেশি নয়। কিন্ত তাঁরা এই বাস্তব সত্যটিকে না জানার ভাব করে অন্য একটি বস্তু নিত্য ফেরি করে বেড়াচ্ছেন। এই বস্তুটির নাম: নিজেদের ক্ষমতা, নিজেদের অহঙ্কার, নিজের আখের গোছানোর কৌশল।
বিজ্ঞানীদের পরীক্ষায় মানুষ স্বভাব-লোভী। সব লোভের সেরা হলো ক্ষমতায় থাকা বা যাওয়ার লোভ। ক্ষমতার আবার স্তর আছে। সর্বোচ্চ হলো, দেশ পরিচালনার ক্ষমতা। একটি সময় ছিল, যখন নেতাদের তরফে ক্ষমতা ও সম্মান হাসিল করতে অবশ্য করণীয় কিছু কর্তব্য পালন করতে হতো। কল্যাণ ব্রত হতো তাঁর কর্মপ্রতিভা। পাড়ার ক্লাব থেকে পৌর কমিশনার। কমিশনার থেকে মেয়র, চেয়ারম্যান, সংসদ। একবার নির্বাচিত হলে পরবর্তী নির্বাচনে ফিরে আসা। নির্ভর করতো তাঁর সুকর্মের ওপরে। নেতারা ভয়ে থাকতো। জনগণ বলতেন, কাজ দেখাও, ভোট নাও। এখন সেসবের বালাই নেই। বাক্যবল, বাহুবল, অর্থবল, অস্ত্রবল, দলবল, শীর্ষ পর্যায়ের আশীর্বাদবল তুচ্ছ কোনও ব্যক্তির জন্যও মনোনয়ন পাওয়া, নির্বাচনে জেতা এবং ক্ষমতায় টিকে থাকাকে সম্ভব করেছে।
নেতাদের ক্ষমতায়ন হয়েছে; জনতার ক্ষমতায়ন হলো না। গণতন্ত্রে বা প্রজাতন্ত্রে জনগণ এখনও রয়ে গেছে ‘পাবলিক’। যেভাবে রাখা হবে, সেভাবেই থাকতে বাধ্য। কি শহর, কি গ্রাম, সর্বত্র অবহেলিত জনতা। কৃষক, ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী, স্কুলগামী কিশোরী, কর্মজীবী নারী, হিমসীম গৃহকর্মী, উদয়াস্ত কর্মকান্ত পোষাক-শ্রমিক, রাস্তায় আহাজারিরত সম্মানিত শিক্ষক সমাজ, বাস ভাড়া-গ্যাস ও বিদ্যুত মূল্যবৃদ্ধিতে নূজ্ব্য নাগরিক, আদিঅস্তহীন নগ্ন পদধ্বনিতে বিপর্যস্ত সহস্র বেকার চলছে অবহেলায়, নিরাপত্তাহীনতায়, ভবিষ্যতের সম্ভাবনাহীনতায়। সর্বত্র অবহেলা। অনাদর । সর্বত্র শক্তির দম্ভ। আক্রান্ত অসহায়জন। যেন কোথাও কোনও সুষ্ঠু নীতি ও নিয়ম নেই। দুর্নীতিই নীতি। শহরের রাজপথে যান চলাচলের অরাজক বিশৃঙ্খলা। দুর্ঘটনার পর দুর্ঘটনা। ধর্ষণ। দখল। আক্রমণ। ভাঙা বাস। দূষিত পানি। লোডশেডিং। চাষী ও উৎপাদকের সামনে রক্তচোষা ফড়িয়া-মধ্যস্বত্ত্বভোগী-সিন্ডিকেট। সবাই জনতার ওপরে দেখাচ্ছে ক্ষমতার রক্তচক্ষু। শক্তির দাপট। লুণ্ঠণের কসরৎ।
অথচ এই জনতার নামেই সব কিছু। গণতন্ত্র। ক্ষমতা। সরকার। শাসন। প্রশাসন। কিন্ত এই জনতাই যে আজ বেসামাল। সে খেয়াল কেউ রাখছে বলে মনে হয় না। এখন জনগণের দাবিতে নেতারা কাজ করবেন না; নেতাদের স্বার্থে জীবন উৎসর্গ করবে জনতা। রাজনৈতিক মূল্যবোধই যেন উল্টে গেছে। এই উল্টোপথ এক দিনে তৈরি হয়নি। দিনে দিনে গড়ে উঠেছে স্বৈরতন্ত্র, ব্যক্তিতন্ত্র, পরিবারতন্ত্র, দলতন্ত্রের পৃষ্ঠপোষকতায়। আমাদের গণতন্ত্রের পিছে পিছেই চলছে এই বিকৃতি ও স্বৈরতা এবং ক্রমে ক্রমে কুশাসনে বন্দি করছে আম-জনতার জীবন-যাপনকে।
দেশের বৃহত্তর মানবসমাজ মূলত আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক আতঙ্কে আড়ষ্ট, শিরঃপীড়ায় শঙ্কিত, নিত্যনতুন সমস্যায় জেরবার-জবুথবু, রাজনৈতিক মতাদর্শের লড়াইয়ে তটস্থ। এমণ স্কুল-দ্বৈরথের কবল থেকে এবং জীবন-যাপনের গ্লানি-কষ্ট-ক্লান্তি থেকে মানুষ বাঁচতে চাচ্ছে। শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ, নিরাপদ জীবনের নিরিখে দেখতে চাচ্ছে চারপাশের সব কিছুকে। সবাই যেন প্রাণময় উচ্চারণে বলতে পারে, ‘ভালো আছি’। ক্ষমতায় যাঁরা আছেন, তাঁরা তাঁদের ক্ষমতা-শক্তিটিকে আত্মস্বার্থের বদলে মানুষের ‘ভালো থাকার কাজে’ সাচ্চাভাবে ব্যবহার করলেই অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে এবং মানুষের ভালো থাকা সম্ভব হবে।
৪৯৭
০
০
কোন তথ্যসূত্র নেই
ক্ষমা ও মাগফিরাত শুরু দেখতে দেখতে বিদায় নিলো মাহে রমজানের......
তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত......
মানুষের অধিকার ও ক্ষমতার ব্যবহার আমাদের জীবন, আমাদের সমাজ, আমাদের......
ইয়া রব জুমু'অার নামাজ পড়ার তৌফিক দিন “হে মুমিনগণ! জুমআর......
আগ্রাসী হৃদরোগ হতে রক্ষা পাওয়ার উপায় বাংলাদেশে হৃদরোগীর সংখ্যা আশঙ্কা......
আসুন জুমার দিনের ফজিলত জেনে নিই ১. সূর্য উদিত হয়......
দোয়া কবুল না হওয়ার কারণগুলো জেনে রাখি কিছু পাপ আছে......
আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট, তিনি ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই।......
নিফাকের পরিচয় নিফাক শব্দের অর্থ কপটতা, দ্বিমুখী নীতি অবলম্বন করা।......
দোয়া ভাগ্যকে পরিবর্তন করতে পারে হযরত রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ্র......