সংবাদ :
জাতীয় : জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত- বাংলাদেশের আকাশে আজ পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে, ১০ জুলাই রবিবার সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে ইসলামিক বিশ্ব : আরাফাতে খুতবা দিবেন শায়খ ড. মুহাম্মাদ আবদুল করীম , হজের খুতবা সরাসরি সম্প্রচার হবে বাংলাসহ ১৪ ভাষায় আন্তর্জাতিক : আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় ৩য় স্থান অর্জনকারী সালেহ আহমদ তাকরিমকে সংবর্ধনা প্রদান করল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন

  • টেক্সট সাইজ
  • A
  • A
  • A
  • |
  • রং
  • C
  • A
  • A
  • A

ইমামের পিছনে মুক্তাদীর সুরা ফাতিহা পড়া আর না পড়া
প্রিন্ট
প্রকাশঃ : মঙ্গলবার ২০/০৬/২০১৭

ইমামের পিছনে সুরা ফাতিহা পড়া আর না পড়া – অনেক দিন ধরেই এটি একটি বিতর্কের বিষয়।এই তর্কটি, কোন পদ্ধতি ভাল ও উত্তম শুধুমাত্র এই বিষয়ে সীমাবদ্ধ নয়,বরং ইমামের পিছনে সুরা ফাতিহা পড়া যাবে কি যাবে না অর্থাৎ জায়েজ নাকি মানা – এটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।এ কারণে সালাতের বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।এজন্য বিভিন্ন আলেম উলামাদের এ নিয়ে বিভিন্ন মতামত লক্ষ্য করা যায় এবং অনেক বই, অনুচ্ছেদ ও পাওয়া যায়।

নামাযের অন্যান্য বিষয়গুলো যেমন রাফয়ে ইয়াদাইন ইত্যাদির ক্ষেত্রে ২ টি মতামত এর মাঝে কোনটি অধিকতর ভাল তা নিয়ে বিভিন্ন আলোচনা পাওয়া যায়,কিন্তু ইমামের পিছনে মুক্তাদীর কেরাত এর বিষয়টি অনেক গুরুতর,কারণ কারও মতে ইমামের পিছনে মুক্তাদীর কেরাত ফরজ,কারও মতে ওয়াজিব,আবার কারও মতে মাকরুহে তাহ্রীমী আর কারও মতে হারাম।

ইমামের পিছনে মুক্তাদীর কেরাত পড়া কি জরূরী? উত্তর যদি হ্যাঁ হয়, তবে কোন নামাযের ক্ষেত্রে, সিরী নামায(ইমাম যখন কেরাত চুপে চুপে পড়েন) এবং জেহরী নামায (ইমাম যখন কেরাত শব্দ করে জোরে জোরে পড়েন), উভয়ের ক্ষেত্রে না যে কোন একটির ক্ষেত্রে।

উত্তর যদি না হয়, তাহলে সে সব হাদীসের ব্যাখ্যা কি যেগুলো দেখতে এ মতামতের বিরোধী মনে হয়?

এই প্রবন্ধটি বা লেখাটি আশা করি আপনার সকল প্রশ্নের উত্তর দিবে এবং আপনার বুঝে আসবে।

আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে বুঝার তওফীক দান করুন। আমিন।

চার ইমাম এবং উলামা কেরাম গণের মতামতঃ

প্রথমত, ইমাম এবং মুনফারিদ (যে একাকী নামায পড়ে) নামাযে সুরা ফাতিহা পড়বে কি পড়বে না – এ বিষয়ে মুজতাহিদ ইমাম গণের মাঝে কোন মত বিরোধ নেই। সকল ইমাম এবং মুহাদ্দিসগণ একমত যে তাদের কে অবশ্যই সুরা ফাতিহা পাঠ করতে হবে এবং এটি বাধ্যতামূলক।তাঁদের এ বিষয়েও ঐক্যমত্য আছে যে, ইমামের পিছনে মুক্তাদীর অন্য কোন সুরা বা আয়াত পড়তে হবে না যা সাধারণত ইমাম বা মুনফারিদ কে সুরা ফাতিহার পড়ে অবশ্যই পড়তে হয়।

কিন্তু মুক্তাদী যখন ইমামের পিছনে নামায আদায় করবেন, তখন সুরা ফাতিহা পাঠ করতে হবে কি না তা নিয়ে উলামা দের মাঝে মতবিরোধ আছে।

ইমাম মালিক ও ইমাম আহমদঃ

তাদের উভয়েরই মত হলঃ জাহরী নামায ( ইমাম যখন কেরাত শব্দ করে জোরে জোরে পড়েন, ফজর, মাগরিব, এশা ) এর ক্ষেত্রে মুক্তাদীর ইমামের পিছনে সুরা ফাতিহা পাঠ করার দরকার নেই।কিন্তু সিরী নামায(ইমাম যখন কেরাত চুপে চুপে পড়েন, যোহর, আসর) এর ক্ষেত্রে সুরা ফাতিহা পাঠ করতে হবে।

ইমাম শাফীঃ

উনার প্রসিদ্ধ মত হচ্ছে, জাহরী নামায এবং সিরী নামায উভয় ক্ষেত্রেই মুক্তাদীর সুরা ফাতিহা পাঠ করতে হবে।

এই মতটি যদিও প্রসিদ্ধ, কিন্তু এটি ইমাম শাফীর সর্বশেষ মত ছিল না।
তাঁর কিতাবগুলোর উপর ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করলে এই মতটিকে তাঁর পূর্বের মত হিসেবে পাওয়া যায়।

ইবনে কদামাহ তাঁর কিতাব “আল মুগনী” তে এই মতটিকে ইমাম শাফীর পূর্বের মত বলে অভিহিত করেছেন।
(আল মুগনী ৬০১ : ১)

ইমাম শাফীর নিজের লিখা “কিতাবুল উমম” গ্রন্থ থেকে আমরা জানতে পারি জাহরী নামায এর ক্ষেত্রে মুক্তাদীর সুরা ফাতিহা তিলাওয়াত জরূরী নয়, তবে সিরী নামায এর ক্ষেত্রে সুরা ফাতিহা পাঠ অবশ্যই জরুরী।
তিনি “কিতাবুল উমম” গ্রন্থে লিখেন, “এব্ং আমরা বলি ইমাম নিঃশব্দে পড়েন এ রকম প্রত্যেক নামাযের ক্ষেত্রে ইমামের পিছনে মুক্তাদীর অবশ্যই কিরাত পাঠ করতে হবে।”
(আল মুগনী ৬০১ : ১)

“কিতাবুল উমম” ইমাম শাফীর পরবর্তী কিতাবগুলোর মধ্যে একটি যা হাফেজ ইবনে কাসীর তার “আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া” (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ২৫২ : ১০) এবং আল্লামা সুয়ুতী “হুসনুল মুহাদরাহ” গ্রন্থে দৃঢ়তার সাথে উল্লেখ করেছেন।এটি প্রমাণ করে যে “কিতাবুল উমম” এর মতামতটি ইমাম শাফী পরে দিয়েছেন।

ইমাম শাফীর মত থেকে অনেক গাইর মুকাল্লীদীন দাবি করেন সুরা ফাতিহা পড়া মুক্তাদীর জন্য ফরয, এমনকি জাহরী নামায এর ক্ষেত্রেও।
দাউদ জাহিরি এবং ইবনে তাইমিয়ার মতে জাহরী নামায এ মুক্তাদীর কেরাত পড়া যাবে না।

ইমাম আবু হানিফাঃ

ইমাম আবু হানিফা, আবু ইউসুফ এবং মুহাম্মদ তাঁরা সবাই তাদের মতামতে এক।তাঁরা বলেছেন, “ইমামের পিছনে মুক্তাদীর পবিত্র কোরআনের যে কোন অংশ তিলাওয়াত করা, সেটি সুরা ফাতিহা হোক বা অন্য কোন আয়াত হোক, জায়েজ নেই, সিরী এবং জাহরী উভয় নামাযের ক্ষেত্রে।”

একটি কথা বলা হয়ে থাকে যে, সিরী নামাযের ক্ষেত্রে সুরা ফাতিহা পড়া ভাল – ইমাম মুহাম্মদের এ রকম একটি মত আছে- এটি সত্য নয়। ইবনে হুমাম এটিকে ইমাম মুহাম্মদের উপর ভ্রান্ত অভিযোগ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন এবং তিনি বলেন, “সত্য হল যে ইমাম মুহাম্মদের মতামত ইমাম আবু হানিফা এবং আবু ইউসুফের মতই ।”
(ফাতহুল মুলহিম ২০ : ২)

উপরের বর্ণনা থেকে কিছু point পাওয়া যায়ঃ

১। জাহরী নামাযের ক্ষেত্রে মুক্তাদীর সুরা ফাতিহা পড়া ফরয বা বাধ্যতামূলক - কোন ইমাম এ মত পোষণ করেন নি।
২।কেউ কেউ শুধুমাত্র সিরী নামাযের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক বলেছেন।
৩।হানাফী ইমাম গণের শুধুই একটি মত, তা হচ্ছে মুক্তাদীর জন্য কোন কিরাত নেই।

এই মতটিই পবিত্র কোরআন ও সুন্নাহ্র আলোকে সবচেয়ে সঠিক ও সহীহ হিসেবে পাওয়া যায়, যা এ প্রবন্ধে প্রমাণ করা হবে ইনশাল্লাহ।

৭৯৩

কোন তথ্যসূত্র নেই

আপনার জন্য প্রস্তাবিত

ইসলামিক ফাউন্ডেশন

To preach and propagate the values and ideals of Islam, the only complete code of life acceptable to the Almighty Allah, in its right perspective as a religion of humanity, tolerance and universal brotherhood and bring the majority people of Bangladesh under the banner of Islam

অফিসিয়াল ঠিকানা: অফিসিয়াল ঠিকানা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, আগারগাঁও, শের-এ- বাংলা নগর, ঢাকা -১২০৭