সংবাদ :
জাতীয় : জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত- বাংলাদেশের আকাশে আজ পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে, ১০ জুলাই রবিবার সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে ইসলামিক বিশ্ব : আরাফাতে খুতবা দিবেন শায়খ ড. মুহাম্মাদ আবদুল করীম , হজের খুতবা সরাসরি সম্প্রচার হবে বাংলাসহ ১৪ ভাষায় আন্তর্জাতিক : আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় ৩য় স্থান অর্জনকারী সালেহ আহমদ তাকরিমকে সংবর্ধনা প্রদান করল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন

  • টেক্সট সাইজ
  • A
  • A
  • A
  • |
  • রং
  • C
  • A
  • A
  • A

আল্লাহর কাছে প্রিয় কাজ পিতা-মাতার সঙ্গে উত্তম আচরণ
প্রিন্ট
প্রকাশঃ : শুক্রবার ৩০/০৬/২০১৭

                                   ............আব্দুল্লাহ শাকির

সন্তান বাবার শরীরের একটি অংশ। এটা পরিপক্ব হয় মায়ের গর্ভে। দুনিয়ার আলো-বাতাসের স্পর্শে আসার উপযুক্ত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত। অতঃপর জন্ম হয় কাঙ্খিত সন্তানের।

 

আর এ সন্তানের জন্য বাবার হৃদয়ে জন্ম নেয় স্নেহ, মমতা ও অকৃত্রিম ভালোবাসা। যে ভালোবাসার টানে বাবা সন্তানকে শাসন ও মমতার চাদরে আগলে রেখে লালন-পালন করেন, শিক্ষা-দীক্ষা দেন এবং সুন্দর ভবিষৎ নিশ্চিত করার জন্য নিজের সুখকে বিসর্জন দিয়ে সন্তানের সুখের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম ও হাড়ভাঙা খাঁটুনি করেন।

প্রত্যেক বাবা চেষ্টা করেন নিজের জীবন কষ্টে পার করে হলেও সন্তানের জন্য কিছু সম্পত্তি রেখে যাওয়ার। 

মুঘল বাদশা বাবর নিজ পুত্র হুমায়ূনের আরোগ্য লাভের জন্য স্বীয় জীবন উৎসর্গ করে সন্তানের প্রতি পিতার ভালোবাসার যে নজির স্থাপন করেছেন- তা অবিস্মরণীয় হয়ে আছে ইতিহাসের পাতায়। সন্তানের জন্য এমন ত্যাগ, ভালোবাসা ও শাসন যিনি করেন- তিনিই তো বাবা।

একজন বাবা সন্তানের সুখের জন্য সব ধরনের দুঃখ-কষ্ট অকাতরে সহ্য
করেন। সামান্য কষ্ট যেন সন্তানকে স্পর্শ করতে না পারে- সর্বদা এ চেষ্টা করেন। তারপরও অনেক সন্তান বাবার সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। এমন কাজ কোরআন-হাদিস বিরুদ্ধ। ইসলামে এমন কাজের প্রতি স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা এসেছে।

এ বিষয়ে কোরআনে কারিমে বর্ণিত হয়েছে, ‘তোমার প্রভু ফয়সালা করে দিয়েছেন, যেন তোমরা তার ইবাদত ব্যতিত অন্য কারও ইবাদত না করো এবং পিতা-মাতার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করো৷ যদি তোমাদের কাছে তাদের কোনো একজন বা উভয়জন় বৃদ্ধাবস্থায় উপনীত হয়, তাহলে তাদেরকে উহ্ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমকের সুরে জবাব দিও না বরং তাদের সঙ্গে সম্মান ও মর্যাদার সাথে কথা বলো। -সূরা বনি ঈসরাইল: ২৩

বর্ণিত আয়াতে বাবা-মায়ের প্রতি সদাচরণ করার কথা বলা হয়েছে। বিশেষ করে বৃদ্ধাবস্থায়। যখন মানুষের আচরণ শিশুসুলভ হয়ে যায়। এ সময়টা তারা ভোগেন নিঃসঙ্গতায়। তখন সন্তানদের উচিৎ তাদের খোঁজ-খবর রাখা, সেবা-যত্ন করা এবং তাদের কোনো আচরণে বিরক্তি প্রকাশ না করা।

হাদিসে এসেছে, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবি করিমকে (সা.) জিজ্ঞাসা করলাম, আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় কাজ কোনটি? তিনি বললেন, সময়মতো নামাজ পড়া। আমি বললাম তারপর কোনটি? তিনি বললেন, পিতা-মাতার সঙ্গে উত্তম আচরণ করা। আমি বললাম তারপর কোনটি? তিনি বললেন, আল্লাহর পথে জিহাদ করা। -সহিহ বোখরি

সুতরাং হাদিসের ভাষ্যমতে আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় তিনটি কাজের মধ্যে পিতা-মাতার সঙ্গে উত্তম আচরণ করা অন্যতম।

শরিয়তের ভাষ্যমতে সন্তান প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ভরণ-পোষণের দায়িত্ব বাবার ওপর। সন্তান প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর বাবার ওপর আর এই দায়িত্ব থাকে না। তখন স্বয়ং সন্তানকেই উপার্জনক্ষম হতে হয়। কিন্তু ভারতীয় উপমহাদেশের শ্রদ্ধেয় বাবারা তাদের সন্তানদের প্রতি এতটাই দয়াশীল যে, প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া পর্যন্ত তো সন্তানের খরচ বহন করেনই, এমনকি সন্তানের বিয়ে-শাদি, নাতি-নাতনিদের  ভরণ-পোষণ করতেও দেখা যায় তাদের। 

সন্তানের জন্য বাবাদের এত আয়োজন, এত ভালোবাসা- সবই নিঃস্বার্থভাবে করে যান তারা। তারা সন্তানের কাছে কি‍ছুই চান না। আসলে সন্তানের ওপর বাবার যে ঋণ, তা শোধ করার সাধ্য কোনো সন্তানের নেই। তার পরও দেখা যায়, শেষ বয়সে একটু আশ্রয়, একটু ভালোবাসা, সন্তানের হাত ধরে চলা- যেভাবে ছোটবেলায় সন্তান বাবার হাতের অনামিকা ধরে চলতে শিখেছে- তা থেকে বঞ্চিত করা হয় বাবাদের। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। 

আজকে বাবা দিবস। আজকের এই দিনে পৃথিবীর সব বাবার প্রতি রইল বিশেষ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। বস্তুত বাবার জন্য শুধু একদিনের ভালোবাসা নয় বরং বছরের প্রতিদিনই ভালোবাসা থাকা উচিত। আর দুনিয়ার যেসব বাবা ইহকাল ত্যাগ করেছেন- তাদের জন্য রইল মাগফিরাতের দোয়া- ‘রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বাইয়ানি সগিরা’ অর্থাৎ হে প্রভু! আপনি তাদের প্রতি দয়া করুন, রহমত বর্ষণ করুন; যেভাবে তারা ছোটবেলায় আমাদেরকে লালন-পালন করেছেন। আমিন।

৪৪৬

কোন তথ্যসূত্র নেই

আপনার জন্য প্রস্তাবিত

ইসলামিক ফাউন্ডেশন

To preach and propagate the values and ideals of Islam, the only complete code of life acceptable to the Almighty Allah, in its right perspective as a religion of humanity, tolerance and universal brotherhood and bring the majority people of Bangladesh under the banner of Islam

অফিসিয়াল ঠিকানা: অফিসিয়াল ঠিকানা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, আগারগাঁও, শের-এ- বাংলা নগর, ঢাকা -১২০৭