সংবাদ :
জাতীয় : জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত- বাংলাদেশের আকাশে আজ পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে, ১০ জুলাই রবিবার সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে ইসলামিক বিশ্ব : আরাফাতে খুতবা দিবেন শায়খ ড. মুহাম্মাদ আবদুল করীম , হজের খুতবা সরাসরি সম্প্রচার হবে বাংলাসহ ১৪ ভাষায় আন্তর্জাতিক : আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় ৩য় স্থান অর্জনকারী সালেহ আহমদ তাকরিমকে সংবর্ধনা প্রদান করল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন

  • টেক্সট সাইজ
  • A
  • A
  • A
  • |
  • রং
  • C
  • A
  • A
  • A

প্রবন্ধ
প্রিন্ট
প্রকাশঃ : বুধবার ১৯/০৭/২০১৭

 

 

 

 

 

বিভ্রান্তির বেড়াজালে কালিমায়ে তায়্যিবাহ

মুফতি ইলিয়াস আহমদ 

ইসলামের বার শত বছর অতিবাহিত হওয়ার পর বৃটিশ সরকারের ছত্রছায়ায় আর্বিভাব ঘটল নতুন এক দলের। যাদের কাজ ছিল বৃটিশ সরকারের দালালি করা। বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনমুখী মুসলিম জনতাকে বিভ্রান্ত করা। তাদের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করা। যাতে বৃটিশদের শাসন-শোষণ এ উপমহাদেশে স্থায়ী হয়, তার জন্য তারা সমুদয় অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। তারা ‘আহলে হাদিস’ নামে আত্মপ্রকাশ করলেও হাদিস অস্বীকারে তাদের জুড়ি নেই। মিথ্যাচার, কুরাআন-হাদিসের অপব্যাখ্যা, মুসলমানদের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি ও অনুসরণীয় মহা মণিষীদের সমালোচনা এবং মাযহাব মান্যকারীদের মুশরিক বলে ফতোয়া দেয়ার মতো গর্হিত ও আত্মঘাতী কাজগুলোই হলো তাদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। তাদের আগ্রাসন থেকে রক্ষা পায়নি ইসলামের ছোটখাটো বিষয়গুলো থেকে নিয়ে মৌলিক বিষয়গুলোও।

হাল জামানায় তারা ইসলামের মূলভিত্তি “কালিমায়ে তায়্যিবাহ” থেকে মুসলমানদের দুরে সরিয়ে বিপদগামী করার চক্রান্তে মেতে উটেছে। বলে বেড়াচ্ছে “কালিমায়ে তায়্যিবাহ” “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ” এভাবে কোন হাদিসে নেই। একালিমাটি পড়লে মানুষ মুমিন হওয়া দূরের কথা উল্টা মুশরিক হবে। বক্ষমান নিবন্ধে তাদের এদুটো অভিযেগের নিরসন তুলে ধরার চেষ্টা করব। ইনশা আল্লাহ।

প্রথম অভিযোগ : তাদের প্রধান অভিযোগ হলো কালেমাটিতে দু’টি অংশ রয়েছে ; “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ও মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ”।

এদু’টি অংশ একই সাথে কোন হাদিসে নেই। অতএব দু’টি অংশকে একত্রিত করে “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ” বলা যাবেনা।

এ অভিযোগটি আহলে হাদিসদের মূর্খতা ও ইলমে হাদিস সর্ম্পকে তাদের অজ্ঞতার পরিচায়ক। অথবা তাদের মিথ্যাচারের এক বাস্তব নমুনা। কারণ কালিমায়ে তায়্যিবার উভয় অংশ একসাথে প্রায় ৩০টি হাদিসে রয়েছে। তন্মধ্যে ৫/৬টি হাদিসকে হাদিস-বিশারদ বিজ্ঞ ইমামগণ সহিহ বলে আখ্যায়িত করেছেন। এ ছাড়া ১০/১২টির মতো হাদিস রয়েছে যেগুলো হাসান বা উত্তম ও নির্ভরযোগ্য হাদিস। আরো অনেক হাদিস রয়েছে যেগুলো যায়িফ হলেও দলিলের উপযুক্ত। উদাহরণ হিসেবে কয়েকটি হাদিস উপস্থাপন করছি।

এক. 

عن انس بن مالك قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: دَخَلْتُ الجَنَّةَ فَرَأيْتُ فِي عارِضَتِي الجَنَّةِ مَكْتُوباً ثلاثة أسطر بالذهب: السطر الأول لا إله إِلَّا الله محمَّد رّسوُلُ الله والسَّطرُ الثَّانِي ما قدمنا وَجَدْنا وَمَا أكَلْنا رَبِحْنا وَمَا خَلَّفْنا خَسِرْنا والسَّطْرُ الثَّالِثُ أُمَّةٌ مُذْنِبَةٌ وَرَبٌّ غَفُورٌ 

হযরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত রাসুল সা. ইরশাদ করেন : মেরাজ রজনীতে আমি জান্নাতে প্রবেশের সময় তার উভয় পার্শে স্বর্ণাক্ষরে তিনটি লাইন লেখা দেখতে পেলাম। প্রথম লাইনে লেখা: “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ”।

দ্বিতীয় লাইনে লেখা: আমরা যে ভালো কর্ম পেশ করেছি তা পেয়েছি এবং যা খেয়েছি তাতে লাবভান হয়েছি এবং যা রেখে এসেছি তাতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি।

তৃতীয় লাইনে লেখা: উম্মত হলো গোনাহগার আর রব হলেন ক্ষমাশীল [জামেউস সাগির সুয়ূতী ৬৭০৭/১ হা.ন.৬৭০৭, ফাতহুল কবির ১০৪/২হা.ন.৬৩০৬]

ইমাম সুয়ুতি রাহ. হাদিসটিকে সাহিহ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

দুুই. 

হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে দীর্ঘ এক হাদিসে বর্ণিত আছে, রাসুল সা. তদানিন্তন কাফের ও খাঁটি মুুমিনের অবস্থার বিবরণ দিতে গিয়ে নি¤œবর্ণিত আয়াতের আলোকে বলেনÑ 

)إِذْ جَعَلَ الَّذِينَ كَفَرُوا فِي قُلُوبِهِمُ الْحَمِيَّةَ حَمِيَّةَ الْجَاهِلِيَّةِ فَأَنْزَلَ اللَّهُ سَكِينَتَهُ عَلَى رَسُولِهِ وَعَلَى الْمُؤْمِنِينَ وَأَلْزَمَهُمْ كَلِمَةَ التَّقْوَى وَكَانُوا أَحَقَّ بِهَا وَأَهْلَهَا) وهى لا اله إلا الله محمد رسول الله.

‘‘কাফেররা মুসলমানদের সাথে সেই অজ্ঞযুগের বাড়াবাড়িতে লিপ্ত ছিল। এমতাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলা [মুসলমানদের একত্ববাদের ফলে] রাসুল সা.ও মুমিনদেও ওপর স্থায়ী প্রশান্তি অবতরণ করেন। আর তাদের জন্য তাকওয়ার কালেমা আবশ্যক করেন। যার সত্যিকার ধারক তারাই’’। আর এই তাকওয়ার কালেমাটি হলো “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ”। [বায়হাকি,১৯৫-১৯৬: কিতাবুল আসমা ওয়াস সিফাত ] হাদিসটি সাহিহ। এর সকল বর্ণনাকারী নির্ভরযোগ্য।

উল্লেখ্য, হাদিসটি সুরা ফাতাহের ২৬ নং আয়াতস্থ (كلمة التقوى) এর ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে বর্ণিত অসংখ্য হাদিসের একটিমাত্র। এছাড়া তাফসিরের প্রায় সবকিতাবেই (كلمة التقوى ) এর ব্যাখ্যা “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ” দ্বারা করা হয়েছে। যেমন-তাফসিরে ইবনে কাসির : ৭/৩২০, রূহুল মা‘আনি : ১৩/২৭২, কুরতুবি : ১৫/৭৬, তাবারি : ১১/৩৬৫, বাগাবি : ৪/২৪৩ ইবনে আবি হাতেম ১০/৩২১০, যাদুল মাছির ইবনুল জাওযি ৪/১৩৮, ফাতহুল কাদির শাওকানি ৪/৪৫৩ ।

 

তিন.

عن يوسف بن صهيب، عن عبدالله بن بريدة، عن أبيه، قال: انطلق أبو ذر ونعيم ابن عم أبي ذر، وأنا معهم يطلب رسول اللَّه صلّى اللَّه عليه وآله وسلّم وهو مستتر بالجبل، فقال له أبو ذر: يا محمد، أتيناك لنسمع ما تقول، قال: أقول لا إله إلا الله محمد رسول الله، فآمن به أبو ذر وصاحبه.

হযরত বুরায়দা রা. বলেন , আবুযর রা. ও তিনার চাচাত ভাই নুয়াইম রা.রাসুল সা. এর খোজে বের হন। আমিও তাদের সাথে ছিলাম। রাসুল সা. তখন এক পাহাড়ের আড়ালে ছিলেন। আবুযর তাঁকে বললেন, হে মুহাম্মদ! আপনি কী বলেন তা শুনতে এসেছি। রাসুল সা. বলেন, আমি বলি :“লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ”। অতএব আবুযর রা. তার সাথী তার উপর ঈমান আনলেন। [আল-ইসাবা : ৬/৩৬৫]

এই হাদিসটিরও সনদ সহিহ এবং বর্ণনাকারীগণ নির্ভরযোগ্য। কারণ ইউসুফ ইবনে সুহাইব এই হাদিসের প্রথম রাবি। যার সম্পর্কে হাফিয ইবনে হাজার আসকালানী রহ. বলেন : তিনি সিকাহ বা নির্ভরযোগ্য। [ তাকরিবুত তাহযিব, পৃ. ৬৪২]

দ্বিতীয় রাবি আবদুল্লাহ ইবনে বুরাইদা। তার সম্পর্কেও হাফিয ইবনে হাজার আসকালানী রহ. বলেন : তিনি সিকাহ বা নির্ভরযোগ্য। [ তাকরিবুত তাহযিব, পৃ. ৩৩১]

তৃতীয় রাবি হযরত বুরাইদা রা.। তিনিতো সাহাবী । তার সম্পর্কে কোন প্রকার সন্দেহ করার সুযোগই নেই।

চার.

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: كَانَتْ رَايَةُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَوْدَاءَ وَلِوَاؤُهُ أَبْيَضُ، مَكْتُوبٌ عَلَيْهِ: لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللَّهِ.

আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: রাসুল সা. এর ঝান্ডা ছিল কালো। পতাকা ছিল সাদা রংয়ের। তাতে লিখা ছিলো “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ”। [আল-মু‘জামুল আওসাত তাবরানি, ৭৭/১:হা.ন.২১৯, শামায়েলে ইমাম বাগাবি ৫৯/১: হা.ন.৮৯৪]

এই হাদিসের বর্ণনাকারীগণও নির্ভরযোগ্য। একজন বর্ণনাকারী ‘হাইয়্যান’ কেউ কেউ অপরিচিত বলে আপত্তি করার সুযোগ খুঁজেছেন। কিন্তু এতে এমন কোনো সুযোগ নেই। তাঁর সম্পর্কে হাদিস বিশারদ ইমাম আবু হাতেম রাহ. বলেন, صدوق ‘নির্ভরযোগ্য’। এছাড়া ইমাম বায্যার রাহ. তাঁকে সুপ্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস বলে অভিহিত করেন। [আল-জারহু ওয়াত্ তা‘দিল : ৩/২৪৬] 

পাচ .

সুরা কাহাফের ৮২ নাম্বার আয়াত (وكان تحته كنز لهما ) “এর নিচে ছিল তাদের গুপ্তধন”। উক্ত আয়াতের তাফসিরে হযরত ইবনে আব্বাস রা. বলেন : গুপ্তধন ছিলো একটি স্বর্ণের বোর্ড। তাতে কয়েকটি বিষয় লিখা ছিল। যে গুলোর একটি হচ্ছে “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ”। [তাবরানি : ১/৪৬৬ হা. ১৬২৯, বায়হাকি : ১/১১৪-১১৫ হা. ৫৪৪-৫৪৫]

এই হাদিসের সকল বর্ণনাকারী অত্যান্ত নির্ভরযোগ্য।

ছয় .

عن ابن عباس ان النبي صلي الله عليه وسلم حدثه، قال: من خالف دين الله من المسلمين فاقتلوه ومن قال: لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللَّهِ فلاسبيل لأحد عليه إلامن أصاب حدا فإنه يقام عليه .

হযরত ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত নবীয়ে করিম সা. বলেন: যে মুসলমান আল্লাহর দ্বীনের বিরোধিতা করবে (অর্থাৎ ইসলাম ধর্ম অস্বীকার করবে ) তাকে তোমরা হত্যা কর। আর যে لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللَّهِ. “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ” বলবে তাকে কিছু বলার অধিকার কারো নেই । তবে কোন হদের উপযুক্ত হলে তা তার উপর কার্যকর হবে। [ ত্বাবকাতুল মুহাদ্দিসীন, শায়খ আসবাহানী, হা.ন. ২৩২]

এই হাদিসটিরও সনদ সহিহ এবং বর্ণনাকারীগণও নির্ভরযোগ্য।

★★

 

দ্বিতীয় অভিযোগ: “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ” দু’টি পরিপূর্ণবাক্য। একটি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আর অপরটি ‘মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’। সব ভাষাতেই দু’টি পূর্ণবাক্যকে পৃথক করতে কোনো না কোনো বিভাজক শব্দ ব্যবহার করতে হয়। যাকে আরবিতে حرف عطف বা বিভাজক অব্যয় বলা হয়। তাই নীতিগতভাবে আলোচ্য বাক্যদ্বয়ের মধ্যে বিভাজক অব্যয় থাকার প্রয়োজন ছিল। অন্যথায় বাক্যদ্বয় একাকার হয়ে যাবে। ফলে শিরকের অর্থ সৃষ্টি হবে। বিষয়টি বোঝার জন্য মনে মনে করুন ‘যায়েদ ও চোর’ বললে দু’জনকে বোঝায়।

আর ‘ও’ ব্যতিত ‘যায়েদ চোর’ বললে একই ব্যক্তি বা যে যায়েদ সেই চোর এবং যে চোর সেই যায়েদ বোঝাবে। এভাবে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’-এর মধ্যে কোনো বিভাজন শব্দ না থাকায় দু’টি বাক্য একই অর্থে রূপান্তরিত হবে যা শরিক ব্যতিত আর কিছুই না। তাই যারা এই কালিমা পড়বে তারা মুশরিক। বরং তাদরে ভাষ্যমতে [নাউযু বিল্লাহ] যারা এই কালিমা পড়ে তারা আল্লাহ ও রাসুলকে দু’ভাইয়ে পরিণত করে থাকে।

প্রিয় পাঠক! আরবি ভাষা, বাংলা ভাষাসহ সব ভাষাতেই বিভাজন শব্দ আছে ঠিক। কিন্তু যেকোনো দু’শব্দের মধ্যে বা দু’বাক্যের মধ্যে বিভাজন অব্যয় ব্যবহার করতেই হবে এমন দাবি সম্পূর্র্ণ ভুল। এর কোনো ভিত্তি নেই। কারণ আরবি ভাষার ব্যাকরণ সর্ম্পকে যাদরে পান্ডিত্ব রয়েছে তারা অবশ্যই অবগত আছেন যে, পাঁচটি স্থান আছে যেখানে বিভাজন শব্দ ব্যবহার না করাই নিয়ম। ওই সব স্থানে বিভাজন শব্দ ব্যবহার না করলেও দু’শব্দ বা দু’বাক্য একবাক্য হয় না বরং ভিন্ন ভিন্ন অর্থে গণ্য হয়। এমন স্থানগুলোর অন্যতম হলো- 

ان يكون بين الجملتين تباين تام. بأن لا يكون بينهما مناسبة فى المعنى كقولك على كاتب الحمام طائر

দু’টি শব্দ বা বাক্য যদি অর্থগত সম্পূর্ণ বিপরীত বা ভিন্ন হয় তাহলে এর মধ্যে বিভাজক শব্দ ছাড়াই বিভাজন বুঝা যায় যেমন- আলী লিখক পাখিটি উড়ন্ত। -দুরুসুল বালাগা ১৪৭, মুখতাসারুল মা‘আনি,২৩৮] 

এভাবে আগুন পানি, আকাশ পাতাল, আসমান জমীন ইত্যাদি বহুল প্রচলিত বিপরীতমুখী শব্দ বা বাক্যের মাঝে বিভাজক শব্দ না হওয়াই ভাষার নিয়ম ৷ এগুলোতে বিভাজক শব্দ না থাকা সত্ত্বেও দু’টিকে কেউ এক গণ্য করবে না। তেমনি ভাবে আল্লাহ রাসুল দু’টি ভিন্ন ভিন্ন বিষয়। আল্লাহ হলেন স্রষ্টা আর রাসুল সা. হলেন সৃষ্ট। ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বাক্যে আল্লাহর একত্ববাদের আলোচনা আর ‘মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ বাক্যে মুহাম্মাদ সা.’র রিসালাত বা রাসুল হওয়ার আলোচনা হয়েছে। তাই স্রষ্টা ও সৃষ্টির মধ্যে যেমন ব্যবধান ও বৈপরীত্ব বিদ্যমান তেমনি বাক্য দু’টিতে আকাশ-পাতাল ব্যবধান। এ জন্য দু’টি বাক্যের মধ্যে কোনো বিভাজক অব্যয় حرف عطف না থাকা সত্ত্বেও পরপিূর্ণ বিভাজন বোঝা যাচ্ছে। তাই প্রমাণ হয়ে গেল বিভাজন শব্দ বা حرف عطف ছাড়াই কালেমার উভয় অংশ এক সাথে বলতে কোনো অসুবিধা নেই ।

আসল কথা হলো- "কালেমায়ে তায়্যিবাহ" ’র ওপর কোনো প্রশ্ন তুলারই সুযোগ নেই। কারণ, যুগযুগ ধরে লক্ষ লক্ষ মুসলমানের মুখে কালেমাটি এভাবেই উচ্চারিত হয়ে আসছে এবং কালেমায়ে তাওহিদ ও রিসালাত হিসেবেই স্বীকৃত হয়ে আছে। তাই তো মসজিদে হারাম, কা‘বার গিলাফ, মসজিদে নববি, সউদি আরবের পতাকাসহ বিভিন্নস্থানে কালেমার উভয়াংশ একত্রে লিখা আছে। ফলে “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ” এভাবে একত্রে বলা ‘তাওয়াতুরে আমলি’ বা পরম্পরায় বর্ণিত আমল দ্বারা প্রমাণিত যা অকাট্য প্রমাণ হিসেবে স্বীকৃত। অতএব, কালেমা তাইয়্যিবা অকাট্য দলিল দ্বারা প্রমাণিত। 

উপররে আলোচনা দ্বারা স্পষ্ট হয়গেলে যে, তাদরে অভযিোগগুলো ভিত্তিহীন, বিভ্রান্তিমূলক। তাই সরলমনা মুসলমানদরে খেদমতে আরয ওদরে কথায় ধোকা খেয়ে ষড়যন্ত্ররে শকিার হবনে না ৷ বিভ্রান্ত না হয়ে বিজ্ঞ আলমেদরে শরণাপন্ন হন এবং দ্বীনরে বিষয়ে সঠিক দিকনির্দেশনা গ্রহণ করুন। আল্লাহ আমাদরে সবাইকে হেফাজত করুন ৷ আমিন ৷

লেখক : উস্তাদুল হাদিস ওয়াদ দিরাসা ইসলামিয়া।

জামেয়া দারুল হুদা সিলট ৷

ইমাম ও খতিব: দক্ষিণ বালুচর বায়তুস সালাম জামে মসজিদ, দক্ষিণ বালুচর, সেনপাড়া, শিবগঞ্জ, সিলেট ৷

৪৬৯

কোন তথ্যসূত্র নেই

আপনার জন্য প্রস্তাবিত

ইসলামিক ফাউন্ডেশন

To preach and propagate the values and ideals of Islam, the only complete code of life acceptable to the Almighty Allah, in its right perspective as a religion of humanity, tolerance and universal brotherhood and bring the majority people of Bangladesh under the banner of Islam

অফিসিয়াল ঠিকানা: অফিসিয়াল ঠিকানা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, আগারগাঁও, শের-এ- বাংলা নগর, ঢাকা -১২০৭