সংবাদ :
জাতীয় : জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত- বাংলাদেশের আকাশে আজ পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে, ১০ জুলাই রবিবার সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে ইসলামিক বিশ্ব : আরাফাতে খুতবা দিবেন শায়খ ড. মুহাম্মাদ আবদুল করীম , হজের খুতবা সরাসরি সম্প্রচার হবে বাংলাসহ ১৪ ভাষায় আন্তর্জাতিক : আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় ৩য় স্থান অর্জনকারী সালেহ আহমদ তাকরিমকে সংবর্ধনা প্রদান করল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন

  • টেক্সট সাইজ
  • A
  • A
  • A
  • |
  • রং
  • C
  • A
  • A
  • A

ইসলামে মাতৃভাষার গুরুত্ব
প্রিন্ট
প্রকাশঃ : সোমবার ১৭/০৭/২০১৭

প্রত্যেক জাতিই তার আপন ভাষাকে ভালবাসে। আপন ভাষায় কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। আপন ভাষা কখনোই তার কাছে কঠিন মনে হয় না। আপন জীবনে, সমাজে, রাষ্ট্রে এবং পররাষ্ট্রে এই আপন ভাষাকে, নিজস্ব ভাষাকে সুসংহত ও সুপ্রতিষ্ঠিত করতে চাইলে ভাষায় ব্যুৎপত্তি এবং উৎকর্ষ সাধন অপরিহার্য। মাতৃভাষায় বা স্বজাতীয় ভাষায় উৎকর্ষ সাধন করতে না পারলে আমি আমার মনের কথা, আমার বোধ ও বিশ্বাসের কথা, এমনকি মহান রাব্বুল আলামীনের চিরন্তন বাণী এবং রাসূলুল্লাহ সা.-এর মানবমুক্তির দিক-নির্দেশনা হৃদয়গ্রাহী ও চিত্তাকর্ষক করে অন্যের কাছে তুলে ধরতে পারবো না। তাইতো মাতৃভাষায়, স্বজাতীয় ভাষায় পারদর্শিতা অর্জন করা খুবই জরুরি। ইসলাম এ সত্যকে যথাযথ মর্যাদার সাথেই গ্রহণ করেছে। তাই স্বজাতীয় ভাষায় বিশুদ্ধতার অধিকারী হওয়ার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেছে ইসলাম। কুরআনে কারীমের বিভিন্ন আয়াতে এবং একাধিক হাদীসে আমরা স্বজাতীয় ভাষা শিক্ষা এবং বিশুদ্ধ ভাষা অর্জনের তাকিদ প্রদর্শন লক্ষ্য করি। সূরা ইবরাহীমে আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেছেন, ‘আমি প্রত্যেক নবী ও রাসূলকে স্বজাতীয় ভাষার অধিকারী করে পাঠিয়েছি। যাতে তাঁরা তাঁদের উম্মতদেরকে সুষ্পষ্টভাবে (আমর আদেশ-নিষেধ বিষয়ে) বুঝাতে পারেন।’ [সূরা ইবরাহীম : আয়াত-৩] সূরা তোয়া-হা এবং সূরা কাছাছে দীনের দাওয়াত পৌঁছানোর স্বার্থে সুস্পষ্ট বাকশক্তি অর্জন এবং বিশুদ্ধ ভাষার অধিকারীর সহায়তা লাভের জন্য হযরত মূসা আ. এর প্রার্থনার কথা বর্ণনা করে আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেছেন, ‘মূসা আ. প্রার্থনা জানালেন, হে আমার প্রতিপালক, আপনি আমার বক্ষ প্রশস্ত করে দিন, এবং আমার কাজ আমার জন্য সহজ করে দিন। আর আমার জিহ্বার জড়তা দূর করে দিন। যাতে আমার উম্মতেরা আমার কথা, আমার বর্ণনা বুঝতে পারে।’ [সূরা তোয়া-হা : আয়াত ২৫-২৯] আল্লাহ তা‘আলা মূসা আ. এর প্রার্থনা গ্রহণ করে জবাবে ইরশাদ করলেন, ‘আমি অতি অবশ্যই তোমার (বিশুদ্ধ ও প্রাঞ্জলভাষী) ভাই এর দ্বারা তোমার বাহু শক্তিশালী করবো। তোমাদের প্রাধান্য দান করবো (বিজয়ী করবো)। ফলে আমার বিশেষ কুদরতের বদৌলতে তোমরা হবে গালিব ও বিজয়ী। ওরা তোমাদের ধারে কাছেও পৌঁছাতে পারবে না।’ [সূরা কাসাস : আয়াত ৩৪-৩৫] উল্লিখিত আয়াতসমূহে যে ভাষার প্রয়োজনীয়তা এবং গুরুত্ব প্রমাণিত হয় তাকে আমরা বিশুদ্ধ ভাষা বা সাহিত্যের ভাষা বলতে পারি। সুতরাং এ পর্যন্ত উল্লিখিত আয়াতের দ্বারা সুষ্পষ্টভাবেই প্রতিভাত হলো যে, মাতৃভাষা, স্বজাতীয় ভাষা তথা বিশুদ্ধ ও প্রাঞ্জল ভাষা অর্জনে ইসলাম বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে। বিশুদ্ধ ভাষার প্রয়োজনীয়তা এবং বিশুদ্ধভাষী হওয়ার কথা ঘোষণা করে রাসূলে কারীম সা. ইরশাদ করেছেন, ‘আমি আরবদের মধ্যে সবচে বিশুদ্ধ ও সুষ্পষ্ট ভাষার অধিকারী।’ অন্য হাদীসে ইরশাদ করেছেন, ‘নিশ্চয়ই কোনো কোনো কবিতায় রয়েছে প্রকৃষ্ট জ্ঞানের কথা।’ হযরত হাসসান রা. কর্তৃক রচিত ও আবৃত্তিকৃত একটি কবিতা শ্রবণ করে রাসূল সা. বলেছেন, ‘হাসসানের এ কবিতা কাফেরদের প্রতি তীরের আঘাতের চেয়ে অধিক (প্রভাব বিস্তারকারী) শক্তিশালী। অপর এক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মহানবী সা. ইরশাদ করেছেন, ‘যারা হাতিয়ার দ্বারা আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের সাহায্যে অগ্রগামী হয়েছে, তারা কেন কবিতার কথার দ্বারা আল্লাহকে সাহায্য করে না? ইবনে রাওয়াহার এই কবিতা শুনে হযরত উমর রা. বিব্রত হয়ে বলে উঠলেন, রাসূলের সামনে কবিতা আবৃত্তি করছো আবদুল্লাহ? রাসূল সা. তখুনি হযরত উমর রা.-কে থামিয়ে দিয়ে বললেন, ‘আবদুল্লাহ ইবনে রাওয়াহাকে কবিতা আবৃত্তি করতে দাও। নিষেধ কর না। কাব্যবাণেও ক্ষতবিক্ষত হোক কাফিরদের অন্তর’। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, বিশিষ্ট কবি সাহাবী হাসসান রা.-এর জন্য মসজিদে নববীতে আলাদা একটি মিম্বার তৈরি করিয়ে দিয়েছিলেন রাসূল সা.। সে-মিম্বারে দাঁড়িয়ে হযরত হাসসান রা. নিয়মিত কবিতা আবৃত্তি করতেন। অপর হাদীসে বর্ণিত রয়েছে, একজন কবি সাহাবীর চমৎকার কবিতা শুনে রাসূল সা. তাঁকে আপন চাদর উপহার দিয়েছিলেন। উল্লিখিত কুরআনের আয়াত ও হাদীসসমূহ দ্বারা প্রমাণিত যে, ইসলাম মাতৃভাষা তথা উন্নত ভাষা ও সাহিত্য চর্চাকে প্রভূত গুরুত্ব প্রদান করে। তবে সাহিত্য ক্ষেত্রে ইসলাম কোনো প্রকার অশ্লীলতা ও মিথ্যাচারকে প্রশ্রয় দেয় না।

৩৫৯

কোন তথ্যসূত্র নেই

আপনার জন্য প্রস্তাবিত

ইসলামিক ফাউন্ডেশন

To preach and propagate the values and ideals of Islam, the only complete code of life acceptable to the Almighty Allah, in its right perspective as a religion of humanity, tolerance and universal brotherhood and bring the majority people of Bangladesh under the banner of Islam

অফিসিয়াল ঠিকানা: অফিসিয়াল ঠিকানা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, আগারগাঁও, শের-এ- বাংলা নগর, ঢাকা -১২০৭