সংবাদ :
জাতীয় : জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত- বাংলাদেশের আকাশে আজ পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে, ১০ জুলাই রবিবার সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে ইসলামিক বিশ্ব : আরাফাতে খুতবা দিবেন শায়খ ড. মুহাম্মাদ আবদুল করীম , হজের খুতবা সরাসরি সম্প্রচার হবে বাংলাসহ ১৪ ভাষায় আন্তর্জাতিক : আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় ৩য় স্থান অর্জনকারী সালেহ আহমদ তাকরিমকে সংবর্ধনা প্রদান করল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন

  • টেক্সট সাইজ
  • A
  • A
  • A
  • |
  • রং
  • C
  • A
  • A
  • A

আল্লাহর ওলি গণের আলোচনা
প্রিন্ট
প্রকাশঃ : শনিবার ১১/০৮/২০১৮

আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের আলোচনায় পবিত্র কালামে পাকে ঘোষণা করা হয়েছে - الا ان اولياء الله لا خوف عليهم ولا هم يحزنون .الذين امنو وكانوا يتقون.لهم البشري في الحياة الدنيا وفي الاخره. لا تبديل لكلمات الله .ذالك هوا الفوز العظيم..অর্থাৎ- খবরদার!নিশ্চয় আল্লাহর প্রিয়জনদের কোন ভয় নেই, না তারা চিন্তিত হবে । যারা ঈমান আনয়ন করেছে এবং যারা ভয় করে (আল্লাহকে) । তাদের জন্য রয়েছে ইহকালে ও পরকালে সুসংবাদ । আল্লাহর কথা মালার কোন ব্যত্যয় ঘটে না । এটাই মহা সাফল্য । (সূরা ইউনুস-৬৪-৬৫) প্রকাশ থাকে যে, এখানে আল্লাহ পাক আল্লাহর ওলী বা বন্ধুদের পরিচয়ে সরিহ আয়াতে ঘোষণা করেছেন-যারা ঈমানদার হবে ,আল্লাহকে ভয় করবে তারাই হচ্ছেন আল্লাহর ওলী বা বন্ধু । তবে প্রথম শর্ত হল যারা ঈমানদার বা নির্ভেজাল আল্লাহ – রাসূল, বিশ্বাসী হবে তারা ওলী হতে পারবে যদি আল্লাহকে যথাযথ ভয় করে । 

“তাদের ভয় ও চিন্তা নাই “ এ বাক্যের তাফসীরে আল্লামা ইমাদুদ্দীন ইবনে কাসীর আলাইহির রাহমাত বলেন- “আখেরাতে তাদের কোন ভয় থাকবে না এবং দুনিয়াতে কোন সম্পদ না পাওয়ার বেদনায় তারা ব্যথাতুর হবে না । তবে অপরাপর মুফাসসিরীনে কেরাম বলেন – দুনিয়া এবং আখিরাতে কোথায় ও তাদের কোন ভয় ও চিন্তা নেই । কারণ তারা আল্লাহর উদ্দেশ্যে কাউকে ভাল বাসেন আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কারো সাথে দুশমনী রাখেন ।বোখারী শরীফের একহাদীছে আছে- عن ابي هريرة قال قال رسول الله صلي الله عليه وسلم ان الله قال من عاد لي وليا فقد اذنته با الحرب وما تقرب الي عبدي بشي احب الي مما افترضت عليه ولا يزال عبدي يتقرب الي با النوافل حتي احببته فكنت سمعه الذي يسمع به وبصره الذي يبصر به و يده التي يبطش بها ورجله التي يمشي بها وان ساءلني لاعطين ولءن استعاذني لاعيذنه وما ترددت عن شييء انا فاعله ترددي عن نفسي الموءمن يكره الموت وانا اكره مساءته .بخاري١ج٩٦٣ অর্থাৎ- হযরত আবু হোরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা’লা আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন- আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন , আল্লাহ তা’লা ফরমান – যে ব্যক্তি আমার কোন ওলীর সাথে শত্রুতা করবে, আমি তার সাথে অবশ্যই যুদ্ধ ঘোষণা করলাম । যে সকল বস্তু দ্বারা বান্দা আমার নৈকট্য লাভ করে তন্মধ্যে সর্বাপেক্ষা প্রিয় বস্তু হল ফরজ সমূহ । আর বান্দা বরাবর ই তার নফল বা অতিরিক্ত কাজের মাধ্যমে আমার নৈকট্য অর্জন করে থাকে । শেষ পর্যন্ত আমি তাকে এতটাই ভালবাসি যে, আমি তার কান হয়ে যাই যে কান দ্বারা সে শুনে। আর আমি তার চোখ হয়ে যাই যে চোখ দ্বারা সে দেখে । আমি তার হাত হয়ে যাই যে হাত দ্বারা সে ধরে । আমি তার পা হয়ে যাই যে পা দ্বারা সে চলে । আর যদি সে আমার কাছে কোন আবদার করে আমি অবশ্যই তা রক্ষা করি । যদি সে আশ্রয় প্রার্থনা করে আমি তাকে অবশ্যই আশ্রয় প্রদান করি । আর তার থেকে আমি যা প্রতিহত করি তার কর্তা হই আমি নিজেই । প্রতিহত করাটা মু’মিন ব্যক্তি নিজের জন্য মৃত্যুকে না পছন্দ করার মত । আমি তার বিচ্ছেদ বিরহ বা দূরত্বকে অপছন্দ করি । (বুখারী ২ম জিলদ ৯৬৩ পৃষ্ঠা)

আল্লাহ তার হাত পা হয়ে যাওয়ার অর্থ হাক্বিক্বি অংগ হওয়া নয়্‌ বরং এ কথা দ্বারা মু’মিন মোত্তাকী ব্যক্তিটি আল্লাহর মহব্বতের আতিশয্যে এতটা ই উন্নীত হয়ে যান যে, তার হাত পা ,চোখ,কান তথা অংগ প্রত্যঙ্গ দ্বারা কৃত কার্যাদিকে আল্লাহর কৃত কর্ম হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া ই উদ্দেশ্য । সুবহানাল্লাহ । 

 উক্ত হাদীছের ব্যখ্যায় হাফিজুল হাদীছ আল্লামা ইবনে হাজর আসকালানী আলাইহির রাহমাহ فتح الباري شرح بخاري এর এগারতম খন্ডের ৩৪৩ পৃষ্ঠায় লিখেন- وما تقرب الخ ان النافلة لا تقدم علي الفريضة لان النافلة انما سميت نافلة لانها تاتي زاءدة علي الفريضة فمما لم تود الفريضة لا تحصل النافلة و من ادي الفريضة ثم زاد عليه النفل و ادام ذالك تحققت منه ارادة التقرب انتهي অর্থাৎ - وما تقرب( নৈকট্য বর্তি হয় এ কথা দ্বারা উদ্দেশ্য হল )নিশ্চয় নফল বন্দেগী কস্মিনকালেও ফরয বন্দেগীর অগ্রগামী হতে পারে না । কেননা নফল কে নফল নাম করণ করা হয়েছে এ কারণে যে , তা ফরয সমূহের উপর অতিরিক্ত । অবশ্য ফরয অনাদায়ের ত্রুটি নফল বন্দেগী দ্বারা পূরণ করা যায় না । তবে যে ব্যক্তি ফরয আদায় করল, অতঃপর তার উপর নফল বা অতিরিক্ত করল এবং উহার উপর ক্বায়িম থাকল,তাহলে নৈকট্য অর্জন করার লক্ষ্য বাস্তবায়িত হবে । 

সপ্তম শতাব্দির ষষ্ট মোজাদ্দিদ আল্লামা ফখর উদ্দীন রাযি আলাইহির রাহমাত বলেন- وكذالك لعبد اذا واظب علي الطاعات بلغ الي المقام الذي يقول الله كنت له سمعا و بصرا فاذا صار نور جلال الله سمعا له سمع القريب والبعيد واذا صار ذالك النور بصرا له راي القريب والبعيد اد ا صار ذالك النور يدا له قدر علي التصرف في الصعب واسهل والبعيد والقريب অর্থাৎ কোন বান্দা আল্লাহ রাসূলের আনুগত্যের উপর অটল থাকলে এমন এক মাক্বামে সে পৌঁছে গেল যার ব্যপারে আল্লাহ ঘোষণা দেন যে, আমি তার চোখ , কান হয়ে যাই । সুতরাং যখন আল্লাহর নূরের মহত্ব তার কানে এসে গেলে সে নিকট ও দূরের সব কিছু শুনতে থাকে । আর আল্লাহর সে নুরের মহত্ব তার চোখে প্রভাবিত হলে সে কাছের ও দূরের বস্থু নীচয় দেখতে পারে । আর সে নূরের তাজাল্লি তার হাতে প্রতিভাত হলে তার দ্বরা সে কঠিন ও সহজ দূরের ও কাছের বিষয়াবলীতে তাসাররুফ বা ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে । (তাফসীরে কাবীর )

আল্লামা মোজাদ্দেদে আলফেসানী রাহিমাহুল্লাহু তা’লা আলাইহি - الفتواي الحديثيه তে লিখেন - ومن حيث قال رسول الله صلي الله عليه وسلم من عمل بما يعلم اورثه الله علم ما لم يعلم আর রাসূলে খোদা এরুপই বলেছেন যে ব্যক্তি তার জ্ঞাতবিষয়ে আমল করে, মহান আল্লাহ তাকে এমন জ্ঞানের উত্তরাধিকারী বানাবেন যে জ্ঞান তার ইতোপূর্বে জানা ছিল না । মোদ্দাকথা আল্লাহর ওলী তথা বন্দুগণ তাদের নিজেদের কৃত কর্মের দ্বারা আল্লাহর অপার মহিমায় এমন স্থরে উপনীত হয়ে যান যে , তাদের ইহ পরকালীন ব্যপার অন্যসব সাধারণ লোক থেকে আলাদা এবং অনেকাংশেই বিস্ময়কর হয়ে যায় । এমন কি এক হাদীছে এসেছে ময়দানে ক্বিয়ামতে আল্লাহর এসকল বান্দাদের অভয় ও চিন্তাহীন অবস্থা দর্শনে নবী রাসূল ও শহীদগন পর্যন্ত অভিভূত হবেন । সুতরাং তাদের ব্যপারে সাধারণের সতর্ক থাকা প্রয়োজন । নতুবা আল্লাহর মোকাবেলা করার মত ভয়াবহ পরিস্থতির শিকার হতে হবে । যা থেকে নমরুদ ফেরাউন হামানরা ও রেহাই পায় নাই । ধর্মের লেবাসে ও যদি আল্লাহর বন্দুদের কে নিয়ে মশকারা করলেও কি হয়, তার প্রচ্ছন্ন নজির আমাদের নিকট অতীত ও বর্তমানে অহরহ প্রত্যক্ষ করা যায় ।বিবেক দিয়ে ভাবতে হয় শুধু ।

৩৭৩

কোন তথ্যসূত্র নেই

আপনার জন্য প্রস্তাবিত

ইসলামিক ফাউন্ডেশন

To preach and propagate the values and ideals of Islam, the only complete code of life acceptable to the Almighty Allah, in its right perspective as a religion of humanity, tolerance and universal brotherhood and bring the majority people of Bangladesh under the banner of Islam

অফিসিয়াল ঠিকানা: অফিসিয়াল ঠিকানা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, আগারগাঁও, শের-এ- বাংলা নগর, ঢাকা -১২০৭