আবূ নাজীহ ইরবায সারিয়াহ(রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ(সাঃ) আমাদেরকে এমন মর্মস্পর্শী বক্তৃতা শুনালেন যে, তাতে অন্তর ভীত হল এবং চোখ দিয়ে অশ্রু বয়ে গেল। সুতরাং আমরা বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল! এ যেন বিদায়ী ভাষণ মনে হচ্ছে। তাই আমাদেরকে অন্তিম উপদেশ দিন। তিনি বললেন, “আমি তোমাদেরকে আল্লাহভীতি এবং ( ইসলামী রাষ্ট্রের রাষ্ট্রনেতার) কথা শোনার ও তার আনুগত্য করার উপদেশ দিচ্ছি; যদিও তোমাদের উপর কোন নিগ্রো(আফ্রিকার কৃষ্ণকায় অধিবাসী) রাষ্ট্রনেতা হয়। (স্মরণ রাখ) তোমাদের মধ্যে যে আমার পর জীবিত থাকবে, সে অনেক মতভেদ বা অনৈক্য দেখবে। সুতরাং তোমরা আমার সুন্নাত ও সুপথপ্রাপ্ত খুলাফায়ে রাশেদীনের রীতিকে আঁকড়ে ধরবে এবং তা দাঁত দিয়ে মজবুত করে ধরে থাকবে। আর তোমরা দ্বীনে নব উদ্ভাবিত কর্মসমূহ(বিদ’আত) থেকে বেঁচে থাকবে। কারণ, প্রত্যেক বিদ’আতই ভ্রষ্টতা। [ আবূ দাউদ ৪৬০৭; সুনানে ইবনে মাজাহ, মুকাদ্দিমা, নং ৪২; মুসনাদে আহমাদ, মুসনাদ আশ-শামিয়্যিন, নং ১৬৫২২; দারেমী ৯৫]; নাসায়ীর বর্ণনায় অতিরিক্ত আছে, “আর প্রত্যেক ভ্রষ্টতাই হল জাহান্নামের পথ।” [সুনান নাসায়ী ১/৫৫]
এবার দেখি বিদআত কি জিনিস।
ইসলাম মানুষের জীবনের কাজগুলোকে মূলত দুই ভাগে ভাগ করেছেঃ
ইবাদাত (যা কেউ মুসলিম হওয়ার কারণে, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করে - নামায, রোযা, কুরআন পাঠ ইত্যাদি )
মু’মালাত (যা কেউ মানুষ হওয়ার কারণে জৈবিক প্রয়োজনে করে- খাওয়া, ঘুম, চাকরি ইত্যাদি)
ইসলামে সকল ইবাদাতের একমাত্র উৎস হল ওহী।তাই এক্ষেত্রে নতুন যেকোন কিছু হচ্ছে হারাম যা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল শিখিয়ে গেছেন, তা ব্যতীত। কেউ যদি আপনাকে বিশেষ কোন আমল শেখায় তবে মূল নিয়ম হচ্ছে তা নিষেধ, যতক্ষণ না আপনি প্রমাণ পাচ্ছেন যে এটা সহীহ সুন্নাহ তে আছে, সাহাবীরা করেছেন!
অন্যদিকে মু’মালাতের ব্যাপারে সবকিছু হালাল যা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল নিষেধ করে গেছেন, তা ব্যতীত। কেউ যদি আপনার সামনে কোন খাবার নিয়ে আসে, তবে মূল নিয়ম হচ্ছে তা জায়েজ, যতক্ষণ না আপনি প্রমাণ পাচ্ছেন যে এটা সহীহ সুন্নাহ বা কুরআনে নিষেধ করা হয়েছে।
তাহলে ‘বিদআত’ কি? ‘বিদআত’ হচ্ছে ইবাদাতের ক্ষেত্রে উদ্ভাবন। অর্থাৎ ইবাদাতের ক্ষেত্রে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ও তার সাহাবীদের ‘ইচ্ছাকৃত বর্জন’। এই বিশেষণটা যেন আমরা জীবনেও না ভুলি- ইবাদাতের ক্ষেত্রে‘ইচ্ছাকৃত বর্জন’। এটা মনে রাখলে ‘বিদআত’ চেনা খুব সহজ হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ! আসুন নিচের পদ্ধতি অনুসরণ করার চেষ্টা করি-
১. কাজটা কি আপনি ইবাদাত মনে করে করছেন?
২. যদি করে থাকেন তবে এটা কি রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ও তার সাহাবীদের জানা ছিল?
৩. যদি জানা না থাকে, তবে এটা ‘বিদআত’, কারণ ওহীর ব্যাপারে আপনি কোনভাবেই উনাদের চেয়ে বেশি জানেন না এবং এটা আমাদের জন্য প্রয়োজনীয় কোন জ্ঞান নয়।
৪. যদি জানা থাকে, তবে ঊনারা কি এটার উপর আমল করেছিলেন?
৫. যদি করে থাকেন, আলহামদুলিল্লাহ্, আমরাও করতে পারি।
৬. যদি জেনে থাকেন,কিন্তু তারপরও না করে থাকেন তার মানে এটা ‘বিদআত’, কারণ ‘ইচ্ছাকৃত বর্জন’ ছিল।
৩৩৫
০
০
কোন তথ্যসূত্র নেই
ইসলাম তার শিক্ষা ও আদর্শের মাধ্যমে মানব প্রকৃতিকে- যা দিয়ে......
হাদীস অস্বীকার প্রসঙ্গে দুটি কথা: সুপ্রিয় বন্ধুগণ, বর্তমান যুগে অগণিত......
মুসলিম নারীর দায়িত্ব ও কর্তব্যের পরিমণ্ডল মুসলিম নারীর দায়িত্ব ও......
হাদীস (حَدِيْث) এর শাব্দিক অর্থ: নতুন, প্রাচীন ও পুরাতন এর......
নিশ্চয় আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা তাঁর রাসূলকে হেদায়াত ও সত্য......
নারী এবং তার দায়িত্ব ও কর্তব্য নিয়ে আলোচনা কেন? প্রথমত:......
আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেছেন, “(হে নবী) আপনি মু’মিন পুরুষদের......
যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর। দরুদ ও সালাম আল্লাহর রাসূল (সা) এর......
আবূ নাজীহ ইরবায সারিয়াহ(রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ(সাঃ)......