সংবাদ :
জাতীয় : জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত- বাংলাদেশের আকাশে আজ পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে, ১০ জুলাই রবিবার সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে ইসলামিক বিশ্ব : আরাফাতে খুতবা দিবেন শায়খ ড. মুহাম্মাদ আবদুল করীম , হজের খুতবা সরাসরি সম্প্রচার হবে বাংলাসহ ১৪ ভাষায় আন্তর্জাতিক : আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় ৩য় স্থান অর্জনকারী সালেহ আহমদ তাকরিমকে সংবর্ধনা প্রদান করল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন

  • টেক্সট সাইজ
  • A
  • A
  • A
  • |
  • রং
  • C
  • A
  • A
  • A

মাযহাব মানতে হবে কেন? (তিন)১১.০৮.২০১৮ ইং
প্রিন্ট
প্রকাশঃ : শনিবার ১১/০৮/২০১৮

বিগত দুই পর্বে আমরা মাযহাবের প্রয়োজনীয়তা ও মাযহাব মানার বিষয়ে কোরআন হাদীছ ও ইজমায়ে উম্মতের আলোকে শরয়ী দলিল আদিল্লা উপস্থাপন করেছিলাম । আজ আমরা বিশ্ব বরেণ্য উলামায়ে কেরামের লিখিত বিশ্ব বিখ্যাত কিতাবাদি থেকে মাযহাব মানার অপরিহার্যতা সম্পর্কে সামান্য আলোকপাত করার প্রয়াস পাব। সত্যানুসন্ধিগণ এর মধ্যেই তাদের কাংখিত জ্ঞান তৃষ্ণা নিবারনের খোরাক পেতে পারেন বলে আমার বিশ্বাস । হেদায়াতের মালিক আল্লাহ । 

 

শায়েখ আহমদ ইবনে আবু সাঈদ ইবনে উবায়দুল্লাহ আল হানাফি আস সিদ্দিকী যিনি শায়খ মোল্লা জিয়ন নামে সমধিক পরিচিত । ফাতওয়ায়ে আলমগীরির বাণী মোঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব যার শিষ্যত্ব গ্রহন করেছিলেন । ফিকহ শাস্ত্রের সে উজ্জ্বল নক্ষত্র শায়খ মোল্লা জিয়ন তার অমর কীর্তি-التفسيرة احمديه في بيان االايات الشرعيه নামক বিশ্ব বিখ্যাত তাফসীরের কিতাবের ৩৬৪ পৃষ্ঠায় লিখেন-الانصاف ان انحصار المذاهب الاربع واتباعهم فضل الهي و قبولية من عند الله تعالي لا مجال فيه للتوجيهات والادلة অর্থাৎ- ইনসাফ তথা নিরপেক্ষ কথা হল এই যে, মাযহাব চারটির মধ্যে সীমাবদ্ধ করণ এবং তা অনুসরণ খোদায়ী অনূগ্রহ এবং আল্লাহ তা’লার পক্ষ হতে গৃহীত । উহার মধ্যে দলিল-প্রমান তালাশের কোন অবকাশ নেই ।

ভারত উপমহাদেশের উলামায়ে কেরামদের মাণ্যবর আল্লামা শাহ ওয়ালী উল্লাহ মোহাদ্দেসে দেহলভী আলাইহির রাহমাহ লিখেন -ان هذه المذاهب الاربعةالمروفةالمحررة قد اجتمعت الامة অর্থাৎ- নিশ্চয় ই উদ্ভাবিত নির্দিষ্ট এ চার মাযহাব সম্পর্কে উম্মতের ইজমা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে । (হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ ১ম খণ্ড ৫০৬)

 

বিশ্ব নন্দিত তাফসীরের কিতাব تفسير صاوي এর সূরা কাহাফের اذكر ربك اذا نسيت আয়াতের ব্যখ্যায় উল্লেখিত আছে- لا يجوز تقليد ما عدا المذاهب الاربعة ولو وافق قول الصحابة والحديث الصحيح والاية اما الخارج عن المذاهب الاربعة ضال مضل وربما اداه ذالك الكفر لان الاخذ بظواهر الكتاب والسنة من اصول الكفر

 অর্থাৎ- চার মাযহাব ছাড়া অন্য কোন মাযহাব অনুসরণ করা যায়েজ নেই । যদিও তা (মাযহাবের বিপরীতে) বাহ্যত কোরআনের আয়াত ,সহীহ হাদীছ কিংবা সাহাবায়ে কেরামের কওলের মোতাবেক হয় । চার মাযহাবের বাহিরে আমল করা গোমরাহী, অপরকে বিভ্রান্তকারী কখনো কখনো তা কুফরীতে উপনীত হয়ে যায় । কেননা কোরআন ও হাদীছ শরীফের বাহ্যিক অর্থ গ্রহন করা কুফুরীর মূল ।  

 

আল্লামা মোনাবী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি فيض القدير ফয়জুল কাদীর নামক গ্রন্থে লিখেন- فيمنع تقليد غير الاربعة في القضاء والافتاء لان مذاب الاربعة انتشرت و تحررت অর্থাৎ - সিন্ধান্তের ক্ষেত্রে ও ফাতওয়ার ক্ষেত্রে চার মাযহাব বতীত অন্য কোন মত-পথের অনুসরণ করা নিষিদ্ধ । কেননা চার মাযহাব সর্বত্র ব্যাপকতা লাভ করেছে এবং এর সব কিছু সুনির্দিষ্ট করা হয়ে গেছে।

 সপ্তম তবকার অন্যতম ফক্বিহ ইবনে নুজাইম রহমাতুল্লাহি আলাইহি লিখেন - وما خالف الاءمة الاربعة مخالف الاجماع অর্থাৎ মাযহাব চতুষ্টয়ের ইমামগণের বিপরীত মত পোষণকারী “ইজমা” তথা মুসলিম উম্মাহ এর সর্ব সম্মত সিদ্ধান্তের বিরোধী হিসেবে গণ্য হবে । (আসবাহ ওয়ান নাযাইর-১৩১ পৃঃ) বলে রাখা প্রয়োজন যে, ইজমা বা উম্মতের ঐক্যমত হচ্ছে শরীয়তের তিন নম্বর দলিল। এই তৃতীয় মূল ভিত্তিকে যারা অগ্রাহ্য করে তারা নিঃসন্দেহে উম্মতের মধ্যে কতবড় ফেতনাবাজ তা তাদের বক্তব্য বিবৃতি শুনলেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে । যেমন তাদের একজন বলেছে – “আল্লাহর নামের পাশাপাশি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নাম লিখা, এটাও শিরকের অন্তর্ভূক্ত”। নাউজুবিল্লাহ । কতবড় বদ নসীব হলে কোরআন হাদীসের সম্পুর্ণ বিপরীত এমন একটি ন্যক্কারজনক মন্তব্য করতে পারে ! তার জন্য পাবনা হেমায়েতপুর যে কত জরুরী ছিল ! তা সত্বেও আমরা তাকে সংখ্যা গরিষ্ট নবী প্রেমিক মুসলিম এ দেশের টিভি চ্যনেলে তার অবাধ বিচরণ দেখতে পাই ! 

 

হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাজ্জালী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি “আলমুসতাসফ” নামক কিতাবের ৯৮৮ পৃষ্ঠায় লিখেন- العامي يجب عليه الاستفتاء و اتباع العلم অর্থাৎ - আম জনসাধারনের জন্য আলেমদের কাছে ফাতওয়া জিজ্ঞাসা করা এবং তা মান্য করা ওয়াজিব । 

 

ইমাম মুহাম্মদ অবনে জারীর আত তাবারী আলাইহির রাহমাহ “ইলমুল মুয়াক্কিঈন” নামক কিতাবের ১ম খন্ডের ১৬ নং পৃষ্ঠায় লিখেন - لم يكن احد له اصحاب معروفون حرروا فتياه و مذهبه في الفقه غير ابن مسعود رضي الله عنه وكان يترك مذهبه و قوله لقول عمر رضي الله عنه وكان لا يكاد يخالفه في شيء من مذهبه و يرجع من قوله الي قوله অর্থাৎ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) এর সাগরেদ দের ন্যায় প্রসিদ্ধ সাগরেদ অন্য কোন সাহাবীর ছিলনা । তার মত অন্য কোন সাহাবীর ফাতওয়া ও মত পথ লিপিবদ্ধ হয়নি । ইবনে মাসউদ (রা) ফিক্বহি সমাধানের ক্ষেত্রে হযরত উমর (রাঃ) এর সাথে দ্বিমত পোষণ করতেন । তা সত্ত্বেও কোন কোন মাসয়ালা হযরত উমর(রাঃ) এর বিপরীত হলে তা নিজ মত ত্যাগ করে হযরত উমর (রাঃ) এর মত বা মাযহাব গ্রহন করতেন । 

এখানে লক্ষ্য করার বিষয় হল সাহাবাগনের মত ও পথের ভিন্নতা ছিল । কিন্তু ইবনে মাসউদ হযরত উমর (রাঃ) কে নিজের চে বেশী জ্ঞানী মনে করায় তিনি নিজের মাযহাব ত্যাগ করে হযরত উমর (রাঃ) এর মাযহাব কে প্রাধান্য দিতেন । সাহাবাগণের পরে মাযহাব চতুষ্টয়ের ইমাম গণের চে বেশী জ্ঞানী কেউ ছিলেন না । তাই তাদের অনুসরণ করা আমাদের জন্য অপরিহার্য। কেননা সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ)থেকে অনুসৃত পথ ও মতের ভিত্তিতে ইমামগণ অক্লান্ত পরিশ্রম করে আমাদের জন্য বিধি বিধানকে সুবিন্যস্থ করে রেখে গিয়েছেন। আমরা তাদের অনুসরণে আমলি জিন্দেগীকে সুষমা মন্ডিত করব ।

৩৪৬

কোন তথ্যসূত্র নেই

আপনার জন্য প্রস্তাবিত

ইসলামিক ফাউন্ডেশন

To preach and propagate the values and ideals of Islam, the only complete code of life acceptable to the Almighty Allah, in its right perspective as a religion of humanity, tolerance and universal brotherhood and bring the majority people of Bangladesh under the banner of Islam

অফিসিয়াল ঠিকানা: অফিসিয়াল ঠিকানা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, আগারগাঁও, শের-এ- বাংলা নগর, ঢাকা -১২০৭