সংবাদ :
জাতীয় : জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত- বাংলাদেশের আকাশে আজ পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে, ১০ জুলাই রবিবার সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে ইসলামিক বিশ্ব : আরাফাতে খুতবা দিবেন শায়খ ড. মুহাম্মাদ আবদুল করীম , হজের খুতবা সরাসরি সম্প্রচার হবে বাংলাসহ ১৪ ভাষায় আন্তর্জাতিক : আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় ৩য় স্থান অর্জনকারী সালেহ আহমদ তাকরিমকে সংবর্ধনা প্রদান করল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন

  • টেক্সট সাইজ
  • A
  • A
  • A
  • |
  • রং
  • C
  • A
  • A
  • A

যাকাত কল্যাণকর একটি ব্যবস্থা ও তার বিধি বিধান
প্রিন্ট
প্রকাশঃ : বৃহস্পতিবার ০৪/০২/২০২১

যাকাত-ঈমানের পর, ইসলামের দ্বিতীয় রোকন: পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা নামায আদায়ের সাথে সাথে অধিকাংশ আয়াতে যাকাত আদায়েরও নির্দেশ দিয়েছেন। বলেছেন, “নামায কায়েম করো এবং যাকাত আদায় করো”। [দেখুন ২:৪৩, ২:৮৩, ২:১১০, ২৪:৫৬, ৫৮:১৩ ইত্যাদি আয়াতগুলো।]

 এসব আয়াতের আলোকে যাকাত ইসলামের অন্যতম অপরিহার্য ফরয দায়িত্ব বলে প্রমাণিত হয়; যার অস্বীকারকারী বা তুচ্ছ তাচ্ছিল্যকারী কাফির বলে গণ্য; আর অনাদায়কারী ফাসিক এবং কঠিন শাস্তির যোগ্য, পবিত্র কুরআনের একেবারে শুরুর দিকে, সূরা বাক্বারায়, হেদায়াতপ্রাপ্ত মুত্তাকীদের পরিচয় দিতে গিয়ে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, “…আমার দেয়া রিযক হতে যাকাত প্রদান করে”। আল্লাহর ভয় অন্তরে লালন করা ও হেদায়াতের পূর্ণতায় পৌঁছুতে যাকাত প্রদানের কোনো বিকল্প নেই। যে ব্যক্তি যাকাত ফরয হওয়ার পরও তা আদায় করে না, তার পক্ষে পূর্ণ হেদায়াত লাভ করা কখনো সম্ভব নয়।

যাকাত সমাজের বঞ্চিতদের অর্থনৈতিক সাহায্যপ্রাপ্তির একটি উপায়: আর্থসামাজিক উন্নয়নে যাকাত অত্যন্ত ফলপ্রসূ একটি ব্যবস্থা। সর্বোপরি যাকাত মানুষের মানবীয় ও আধ্যাত্মিক সম্ভাবনার বিকাশ ঘটাতে সহায়ক। যাকাতের কল্যাণধর্মিতা বহুমাত্রিক। সমকালীন কোনো অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় যাকাতের বিকল্প নেই।

যাকাতের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে: পবিত্রকরণ, পরিশুদ্ধীকরণ, বৃদ্ধি পাওয়া, বরকতময় হওয়া, বিশুদ্ধ হওয়া। পবিত্র কুরআন মজীদে যাকাতের বিকল্প শব্দ হিসেবে সাদাকাহ শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। আল-কুরআনের অনেক জায়গায় যাকাত শব্দের উল্লেখ রয়েছে। এর মধ্যে আবার অনেক জায়গায় যাকাত সালাতের সাথে বিধৃত হয়েছে। সঞ্চিত বা উপার্জিত মালের পরিমাণ একটি নির্দিষ্ট সীমা অতিক্রম করলে তার অংশবিশেষ নির্দিষ্ট ব্যক্তির অনুকূলে ও নির্ধারিত খাতে ব্যয় করতে হয়, যা ইসলামী পরিভাষায় যাকাত বলে খ্যাত। এ ছাড়া অন্যভাবেও যাকাতের সংজ্ঞা প্রদান করে বলা হয়েছে: প্রত্যেক সাহেবে নিসাব মুসলমান তার মাল ও সম্পদ থেকে ইসলামী শরীয়তে নির্ধারিত অংশটুকু নির্ধারিত হকদারকে দিয়ে দেয়াকে যাকাত বলে। আরো একটি সংজ্ঞা এরূপ: উৎপাদিত বস্তুতে পুঁজি ও শ্রমের যেমন অধিকার আছে তেমনি তৃতীয় উপকরণ ঐশ্বরিক দানের জন্যও একাংশ স্থিরকৃত থাকা উচিত তাই যাকাত। আরো বলা হয়েছে, যাকাত হচ্ছে বিত্তবানদের ধনসম্পদে আল্লাহ-নির্ধারিত সেই অপরিহার্য অংশ যা সম্পদ ও আত্মার পবিত্রতা বিধান। সম্পদের ক্রমবৃদ্ধিসাধন এবং সর্বোপরি আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের আশায় শরীয়ত-নির্ধারিত খাতে ব্যয় বন্টন করার জন্য দেয়া হয়।

ইসলামী বিধিব্যবস্থাকে খাটো করা অথবা হেয় করার উদ্দেশ্যে কেউ কেউ বলে থাকেন যাকাত ও কর এক ও অভিন্ন। তারা মুনাফা ও সুদকেও অনুরূপভাবে অথবা মনগড়াভাবে উপস্থাপন করে থাকেন। অথচ যাকাত ও কর এর মধ্যে বিস্তর পার্থক্য রয়েছে।

১. যাকাত মহান আল্লাহ তায়ালার একটি নির্দেশ যা ফরজ ইবাদত হিসেবে বাস্তবায়ন হয়। পক্ষান্তরে কর রাষ্ট্র কর্তৃক একশ্রেণীর নাগরিকের ওপর আরোপিত হয়ে থাকে।

. যাকাত ঈমানদার স্বেচ্ছাপ্রণোদিত প্রদান করে। অপর দিকে নাগরিকবৃন্দ কর বাধ্য হয়ে পরিশোধ করে।

৩. যাকাত ব্যয়ের নির্ধারিত আটটি খাত স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা নির্ধারিত করে দিয়েছেন। কর সরকারী কোষাগারে জমা হয়। কর ব্যয়ের নির্ধারিত কোনো খাত নেই।

যাকাতের উদ্দেশ্য:  যাকাতের উদ্দেশ্য পর্যালোচনা করা হলে দেখা যায়, যাকাতের উদ্দেশ্য দু‘টি।

এক. যাকাত অর্থ পবিত্রকরণ, পরিশুদ্ধীকরণ, বৃদ্ধি। যাকাত প্রদানের মাধ্যমে ব্যক্তির আত্মা ও সম্পদ পবিত্র ও পরিশুদ্ধ হয়।

 দুই. যাকাতের মাধ্যমে দারিদ্র্য হ্রাস পায়। সম্পদ বন্টনের ক্ষেত্রে যাকাত অত্যন্ত ফলপ্রসূ মেকানিজম হিসেবে কাজ করে।

যাকাতের তিনটি দিক বিশেষভাবে প্রণিধানযোগ্য। এই তিনটি দিক হলো: অর্থনৈতিক, সামাজিক, মানবীয় ও আধ্যাত্মিক দিক। নিম্নে বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে দেখা যাক। যাকাত দানের মাধ্যমে সম্পদের নির্দিষ্ট একটা অংশ ধনীদের কাছে থেকে গরীব-দুস্থদের মধ্যে হস্তান্তরিত হয়। ফলে গরীব-দুস্থরা অর্থনৈতিকভাবে কিঞ্চিত হলেও লাভবান হওয়ার সুযোগ লাভ করে। সমাজে তাদের পুনর্বাসিত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়। বিত্তবান ও বিত্তহীনদের মধ্যে এতে সম্প্রীতি সৃষ্টি হয়। আরো দেখা যায়, আয়ের ক্ষেত্রে সামান্য হলেও আয় বৃদ্ধি পায়।

যাকাত সম্পদ পুঞ্জীভূত করে রাখার প্রবণতা হ্রাস করে। অর্থসম্পদ অনুৎপাদনশীল খাতে সঞ্চয় করে রাখার প্রবণতাও অনেকটা দূর করে। যাকাত সম্পদ বন্টনব্যবস্থার ক্ষেত্রে একটি প্রক্রিয়া হিসেবে কাজ করে। সমষ্টিগত অর্থনৈতিক মৌল কাঠামো নির্মাণে যাকাত ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে।

মানুষ এ পৃথিবীতে সম্পদের আমানতদার মাত্র। নিজের প্রয়োজন অতিরিক্ত সম্পদ কাজে লাগিয়ে উদ্বৃত্ত সম্পদ থেকে মানবকল্যাণে ব্যয় করবে, এটি ইসলামের অন্যতম একটি চেতনা। আর এটা করা হলে সম্পদ ও আয় পূণর্বন্টনে একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব পড়ে।

সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে যাকাতের তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা লক্ষ করা যায়। বিত্তবানদের উপার্জিত সম্পদ ও আয়ে গরীব-দুস্থদের অধিকারকে পবিত্র কুরআন মজীদে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে। যাকাতের মাধ্যমে বিত্তবানদের সম্পদ ও আয়ের কিয়দংশ গরীব ও দুস্থদের কাছে হস্তান্তরিত হয়। এর দ্বারা কিছুটা হলেও সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠা হয়। সম্পদ ও আয় এভাবে হস্তান্তরের মাধ্যমে একটা বন্টনগত মেকানিজম অথবা একটা শিফটিং মেকানিজমের উন্মেষ ঘটে। সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এর বড়ই প্রয়োজন রয়েছে।

যাকাত স্বনির্ভরতা অর্জনে সাহায্য করে। যাকাতের অর্থ পেয়ে একজন বিত্তহীন তার কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। এর ফলে সামাজিক ভারসাম্য সৃষ্টি হয় এবং সামাজিক নিরাপত্তা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। যাকাত একজন দুস্থ বা গরীবকে নিজ পায়ে দাঁড়াতে সাহায্য করে। সমাজের কম ভাগ্যবান এই বঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে অর্থনৈতিক সহযোগিতা প্রদান করা সমাজের সঙ্গতিপূর্ণ এবং ধনী জনগোষ্ঠীর জন্য নৈতিক দায়িত্ব হয়ে দাঁড়ায়। যাকাত প্রদানের মাধ্যমে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়।

যাকাতের দানের ফযীলত

হযরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেন- নিঃসন্দেহে দান-সদকা (যাকাত) আল্লাহ তা’আলার ক্ষোভের আগুন নিভিয়ে দেয় এবং অপমৃত্যু থেকে রক্ষা করে। (সুনানে তিরমিযী: ১/১৪৪)

যাকাত আদায় না করার শাস্তি

মহান আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন- যারা স্বর্ণ ও রৌপ্য জমা করে রাখে এবং তা আল্লাহর পথে ব্যয় করে না তাদেরকে আপনি যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ দিন। যেদিন সেগুলো উত্তপ্ত করে তা দ্বারা তাদের মুখমণ্ডল,পার্শ্ব ও পিঠে দাগ দেয়া হবে (এবং বলা হবে) এগুলো তোমাদের সে সম্পদ যা তোমরা নিজেদের জন্য কুক্ষিগত করে রেখেছিলে। এখন তোমরা নিজেদের অর্জিত সম্পদের স্বাদ আস্বাদন করো। (সূরা তাওবা: ৩৪-৩৫)

নবী কারীম সা. ইরশাদ করেন- আল্লাহ তা’আলা যাকে ধন সম্পদ দিয়েছেন সে যদি তার সম্পদের যাকাত আদায় না করে তাহলে তার সম্পদকে কিয়ামতের দিন টাক পড়া বিষধর সাপের রূপ দেয়া হবে, যার চোখের উপর দুটি কাল দাগ থাকবে। কিয়ামতের দিন সেটা তার গলায় পেঁচিয়ে দেয়া হবে। এরপর সাপ তার মুখে দংশন করতে থাকবে এবং বলবে আমি তোমার সম্পদ, আমি তোমার সঞ্চয়। (সহীহ বুখারী: ১/১৮৮)

 

যাকাত কার উপর ফরয ?

  • যাকাত দাতাকে মুসলমান হতে হবে।
  • প্রাপ্ত বয়স্ক ও বিবেক বুদ্ধি সম্পন্ন হতে হবে।
  • নিসাব পরিমাণ মাল অর্থাৎ সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ অথবা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রূপা অথবা তার সমপরিমাণ মূল্য বা টাকা তার বৎসরের সকল মৌলিক প্রয়োজনের পর অতিরিক্ত থাকতে হবে। (‘নিসাব’ বলা হয় শরীয়তের নির্ধারিত আর্থিক নিম্নতম সীমা বা পরিমাণকে অর্থাৎ যে পরিমাণ সম্পদ-মাল, অর্থ কোন ব্যক্তির সাংসারিক সকল মৌলিক প্রয়োজন মিটানোর পর বছর শেষে      নির্দিষ্ট তারিখে ওই ব্যক্তি মালিকানায় থাকলে যাকাত প্রদান করতে হয় তাকে      ইসলামী পরিভাষায় ‘নিসাব’ বলে। মালের প্রকৃতি ধরন অনুযায়ী বিভিন্ন মালের নিসাব বিভিন্ন। )

রাসূলুল্লাহ (সা.) এর সময় যেখানে সাড়ে সাত তোলা সোনা আর সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার দাম সমান ছিলো সেখানে আজ সাড়ে সাত তোলা সোনার দাম ২ লাখ ৮৪ হাজার ৬১২ টাকা ৩০ পয়সা,অথচ সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার দাম মাত্র ৩৫ হাজার ২৪১ টাকা ৮৫ পয়সা। (২ মে,২০১৩ হিসাব অনুযায়ী) সুতরাং আজ যদি কারো কাছে মাত্র ৩৫,২৪১.৮৫ মতো সম্পদ একবছর গচ্ছিত থাকে তাহলে তার উপর যাকাত ফরজ হয়ে যাবে। নিয়ম হলো, যে হিসাব করলে গরীব ও অভাবীদের বেশি উপকার হয়,সে হিসাবে দিবে। বর্তমানকালে যেহেতু রূপার হিসাব করলে যাকাত আদায়কারীর সংখ্যা বাড়বে এবং অভাবীদের উপকার বেশি হবে, তাই এ হিসাবেই দেয়া উচিৎ। সুতরাং আমাদের কে স্বর্ণের হিসাব না করে ৫২.৫ তুলা রুপার দাম সম্পদের মালিক হিসাবে দিতে হবে।

মনে করেন বছর শেষে আপনার কাছে ১৬ হাজার টাকা আছে (ধরুন প্রথম রামযান) আর আপনার কাছে  একটা ২০ হাজার টাকা মূল্যের স্বর্ণের চেইন বা আংটি আছে তাহলে দুইটা মিলয়ে আপনার কাছে ৫২.৫ তুলা রুপোর দাম হয়ে গেছে। অর্থাৎ আপনার সম্পদ মূল্য ২ টা মিলয়ে ৩৬ হাজার টাকা হয়ে গেছে সুতরাং আপনার উপর যাকাত ফরজ হয়ে গেছে। কিন্তু সমপরিমাণ টাকা যদি আপনি ঋণগ্রস্ত থাকেন তাহলে যাকাত ফরজ হবেনা।

 

  • যদি এককভাবে কোন পণ্য বা দ্রব্যের মূল্য নিসাব পরিমাণ না হয় কিন্তু ব্যক্তির সবগুলো সম্পদের মূল্য মিলিয়ে একত্রে সাড়ে ৫২ তোলা রৌপ্য মূল্যের সমান হয় তবে ওই ব্যক্তির নিসাব পূর্ণ হবে। অর্থাৎ যাকাত আদায় করতে হবে।
  • সাংসারিক প্রয়োজনে গৃহীত ঋণ কর্তনের পর নিসাব পরিমাণ সম্পদ থাকলে যাকাত দিতে হবে।
  • স্বামী-স্ত্রীর সস্পদ একই পরিবারের গণ্য হলেও মালিকানা ভিন্নহেতু পৃথকভাবে নিজ নিজ সম্পদের যাকাত আদায় করতে হবে।
  • নির্ধারিত যাকাত পরিশোধের পূর্বেই সম্পদের মালিক মারা গেলে যাকাত পরিশোধের পর ওয়ারিশগণ মালিক বলে গণ্য হবে।

যাকাত কাকে দেয়া যাবে

  • ফকির:   ফকির ওই ব্যক্তি যার নিকট খুবই সামান্য সহায় সম্বল আছে।
  • মিসকীন:   মিসকীন ওই ব্যক্তি যার আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি এবং আতœসম্মানের  খাতিরে কারো কাছে হাত পাততে পারে না।
  • আমিল বা  যাকাত আদায় ও বিতরণের কর্মচারী।
  • মন জয় করার জন্য নওমুসলিম: অন্য ধর্ম ছাড়ার কারণে পারিবারিক, সামাজিক ও আর্থিকভাবে বঞ্চিত হয়েছে। অভাবে তাদের সাহায্য করে ইসলামে সুদৃঢ় করা।
  • ঋণমুক্তির জন্য: জীবনের মৌলিক বা প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণের জন্য সঙ্গতকারণে ঋণগ্রস্ত ব্যক্তিদের ঋণ মুক্তির জন্য যাকাত প্রদান করা যাবে।
  • দাসমুক্তি:  কৃতদাসের মুক্তির জন্য।
  • ফি সাবিলিল্লাহ বা জিহাদ: অর্থাৎ ইসলামকে বোল-বালা বা বিজয়ী করার লক্ষ্যে যারা কাফির বা  বিধর্মীদের সাথে জিহাদে রত সে সকল মুজাহিদদের প্রয়োজনে যাকাত দেয়া যাবে।
  • মুসাফির:   মুসাফির অবস্থায় কোন ব্যক্তি বিশেষ কারণে অভাবগ্রস্থ হলে ওই ব্যক্তির  বাড়িতে যতই ধন-সম্পদ থাকুক না কেন তাকে যাকাত প্রদান করা যাবে।

কাদেরকে যাকাত দেয়া যাবে না

  •  উলামায়ে ছূ` বা ধর্মব্যবসায়ী  দ্বারা পরিচালিত মাদরাসা অর্থাৎ নিজের স্বার্থে  মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছে, ও অন্যান্য কুফরী মতবাদের সাথে সম্পৃক্ত সেই সমস্ত      মাদরাসাতে যাকাত প্রদান করলে যাকাত আদায় হবে না।
  •  নিসাব পরিমাণ মালের অধিকারী বা ধনী ব্যক্তিকে যাকাত দেয়া যাবে না।
  • মুতাক্বাদ্দিমীন অর্থাৎ পূর্ববর্তী আলিমগণের মতে      কুরাঈশ গোত্রের বনু হাশিম-এর অন্তর্গত আব্বাস, জাফর,      আকীল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের বংশধরের জন্য যাকাত      গ্রহণ বৈধ নয়। তবে মুতাআখখিরীন অর্থাৎ পরবর্তী আলিমগণের মতে বৈধ।
  • অমুসলিম ব্যক্তিকে যাকাত দেওয়া যাবে না।
  •   যে সমস্ত মাদরাসায় লিল্লাহ বোডিং নেই সেখানে যাকাত দেয়া যাবে না।
  •  দরিদ্র পিতামাতাকে, সন্তানকে, স্বামী বা স্ত্রীকে যাকাত দেয়া যাবে না।
  •  প্রতিষ্ঠানের পক্ষে ইয়াতীমখানা লিল্লাহ বোডিংয়ের জন্য যাকাত আদায়কারী নিযুক্ত হলে তাকে যাকাত দেয়া যাবে না।
  •  উপার্জনক্ষম ব্যক্তি যদি উপার্জন ছেড়ে দিয়ে নামায-রোযা ইত্যাদি নফল ইবাদতে মশগুল হয়ে যায় তাকে যাকাত দেয়া যাবে না। তবে সে যদি উপার্জন না      থাকার কারণে যাকাত পাওয়ার উপযুক্ত হয় তবে যাকাত দেয়া যাবে।
  •  বেতন বা ভাতা হিসেবে নিজ চাকর-চাকরানীকে যাকাতের টাকা দেয়া যাবে না।

উল্লেখ্য,মসজিদে বা মাদ্রাসার সাধারণ ফাণ্ডে কিংবা নির্মাণ ফাণ্ডে যাকাত দেয়া যাবে না। অনুরূপ কোন ধরনের জনকল্যাণমূলক কাজেও যাকাত দেয়া যাবে না।

১৫

কোন তথ্যসূত্র নেই

আপনার জন্য প্রস্তাবিত

ইসলামিক ফাউন্ডেশন

To preach and propagate the values and ideals of Islam, the only complete code of life acceptable to the Almighty Allah, in its right perspective as a religion of humanity, tolerance and universal brotherhood and bring the majority people of Bangladesh under the banner of Islam

অফিসিয়াল ঠিকানা: অফিসিয়াল ঠিকানা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, আগারগাঁও, শের-এ- বাংলা নগর, ঢাকা -১২০৭