সংবাদ :
জাতীয় : জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত- বাংলাদেশের আকাশে আজ পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে, ১০ জুলাই রবিবার সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে ইসলামিক বিশ্ব : আরাফাতে খুতবা দিবেন শায়খ ড. মুহাম্মাদ আবদুল করীম , হজের খুতবা সরাসরি সম্প্রচার হবে বাংলাসহ ১৪ ভাষায় আন্তর্জাতিক : আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় ৩য় স্থান অর্জনকারী সালেহ আহমদ তাকরিমকে সংবর্ধনা প্রদান করল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন

  • টেক্সট সাইজ
  • A
  • A
  • A
  • |
  • রং
  • C
  • A
  • A
  • A

আশুরার সঠিক ইতিহাস ও ফজিলত ঃ
প্রিন্ট
প্রকাশঃ : শুক্রবার ১৪/০৯/২০১৮

আশূরার সঠিক ইতিহাস ও ফজিলতঃ
=========================
মহান আল্লাহ আমাদের জন্য ৪ টি মাস যথা- যিলকদ, জিলহজ্ব, মোহরম ও রজবকে হারাম তথা সম্মানিত মাস করেছেন। আল্লাহ্‌ বলেন,
إِنَّ عِدَّةَ الشُّهُورِ عِندَ اللَّهِ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا فِي كِتَابِ اللَّهِ يَوْمَ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ مِنْهَا أَرْبَعَةٌ حُرُمٌ ۚ ذَٰلِكَ الدِّينُ الْقَيِّمُ ۚ فَلَا تَظْلِمُوا فِيهِنَّ أَنفُسَكُمْ ۚ وَقَاتِلُوا الْمُشْرِكِينَ كَافَّةً كَمَا يُقَاتِلُونَكُمْ كَافَّةً ۚ وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ مَعَ الْمُتَّقِينَ
-আসলে যখন আল্লাহ আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন তখন থেকেই আল্লাহর লিখন ও গণনায় মাসের সংখ্যা বারো চলে আসছে৷ এর মধ্যে চারটি হারাম মাস৷ এটিই সঠিক বিধান৷ কাজেই এ চার মাসের নিজেদের ওপর জুলুম করো না৷ আর মুশরিকদের সাথে সবাই মিলে লড়াই করো যেমন তারা সবাই মিলে তোমাদের সাথে লড়াই করে৷ এবং জেনে রাখো আল্লাহ মুক্তাকীদের সাথেই আছেন৷[সুরা তওবাহ ৩৬]
-
বছরের প্রথম মাস মোহররমের দশ তারিখ কে আশুরা বলা হয়। আশূরা শব্দটি শুনতেই সাধারণ মানুষের যেন গা শিউরে ওঠে। কারণ, আশূরা বলতেই তাদের ধারণা কারবালা।
আর কারবালা মানেই নবী ﷺ এর নাতি ইমাম হুসাইন ইবনে আলী (রাঃ)-এর পরিবারের মর্মান্তিক শাহাদাতের ঘটনা।

■ আশূরারর সিয়ামের মুল ইতিহাসঃ
=========================

 মূলতঃ এ দিনে মূসা (আঃ) ও তার জাতি বনী ইসরাঈল ফেরাউনের অন্যায়-অত্যাচার, নিষ্পেষণের জাঁতাকল ও গোলামী থেকে মিশর ছেড়ে সাগর পার হয়ে নাজাত পেয়ে ছিলেন, তাই তিনি আল্লাহ্‌র শোকরিয়া ও কৃতজ্ঞার্থে এ দিনে সিয়াম রেখেছিলেন এবং পরবর্তী সময়ে বনী ইসরাঈলরাও এই দিনে সিয়াম রাখত।
.
◉ কোরআনে বর্নিত ইতিহাস:
☞ মহান আল্লাহ বলেন,
وَإِذْ فَرَقْنَا بِكُمُ الْبَحْرَ فَأَنجَيْنَاكُمْ وَأَغْرَقْنَا آلَ فِرْعَوْنَ وَأَنتُمْ تَنظُرُونَ
-স্মরণ করো সেই সময়ের কথা যখন আমরা সাগর চিরে তোমাদের জন্য পথ করে দিয়েছিলাম , তারপর তার মধ্য দিয়ে তোমাদের নির্বিঘ্নে পার করে দিয়েছিলাম , আবার সেখানে তোমাদের চোখের সামনেই ফেরাউনী দলকে সাগরে ডুবিয়ে দিয়েছিলাম। [সুরা বাক্বরা -৫০]
.
☞মহান আল্লাহ আরও বলেন,
وَجَاوَزْنَا بِبَنِي إِسْرَائِيلَ الْبَحْرَ فَأَتْبَعَهُمْ فِرْعَوْنُ وَجُنُودُهُ بَغْيًا وَعَدْوًا ۖ حَتَّىٰ إِذَا أَدْرَكَهُ الْغَرَقُ قَالَ آمَنتُ أَنَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا الَّذِي آمَنَتْ بِهِ بَنُو إِسْرَائِيلَ وَأَنَا مِنَ الْمُسْلِمِينَ
آلْآنَ وَقَدْ عَصَيْتَ قَبْلُ وَكُنتَ مِنَ الْمُفْسِدِينَ
فَالْيَوْمَ نُنَجِّيكَ بِبَدَنِكَ لِتَكُونَ لِمَنْ خَلْفَكَ آيَةً ۚ وَإِنَّ كَثِيرًا مِّنَ النَّاسِ عَنْ آيَاتِنَا لَغَافِلُونَ
-আর আমি বনী ইসরাঈলকে সাগর পার করে নিয়ে গেলাম৷ তারপর ফেরাউন ও তার সেনাদল জুলূম নির্যতন ও সীমালংঘন করার উদ্দেশ্য তাদের পেছনে চললো৷ অবশেষে যখন ফেরাউন ডুবতে থাকলো তখন বলে উঠলো, আমি মেনে নিলাম, নবী ইসরাঈল যার উপর ঈমান এনেছে তিনি ছাড়া আর কোন প্রকৃত ইলাহ নেই, এবং আমিও আনুগত্যের শির নতকারীদের অন্তরভুক্ত৷
(জবাব দেয়া হলো) এখন ঈমান আনছো! অথচ এর আগে পর্যন্ত তুমি নাফরমানী চালিয়ে এসেছো এবং তুমি বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের একজন ছিলে৷ এখন তো আমি কেবল তোমার লাশটাকেই রক্ষা করবো যাতে তুমি পরবর্তীদের জন্য শিক্ষনীয় নিদর্শন হয়ে থাকে৷যদিও অনেক মানুষ এমন আছে যারা আমার নিদর্শনসমূহ থেকে উদাসীন৷ [সুরা ইউনুস ৯০-৯২]
.
◉ হাদীসে বর্ণিত ইতিহাস:
☞ রাসূলুল্লাহ ﷺ যখন মদিনায় আগমন করলেন, তখন দেখলেন যে, ইহুদীরা আশূরার সিয়াম পালন করছে। তখন রাসূলুল্লাহ ﷺ তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন,
-তোমরা এ দিকে কেন সিয়াম পালন কর? তারা বলল,
-এটা এক মহান দিবস। এদিনে আল্লাহ্‌ মুসা (আঃ) ও তার জাতিকে নাজাত দেন এবং ফেরাউন ও তার জাতিকে ডুবিয়ে ধ্বংস করে দেয়। তাই মূসা (আঃ) ও তার জাতি এদিনে আল্লাহ্‌র শোকরিয়া আদায়ের উদ্দেশ্য সিয়াম পালন করে এ জন্য আমরাও পালক করি। রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেনঃ
-আমরা মূসা (আঃ) এর অনূসরণ করার বেশি হকদার। এরপর রাসূলুল্লাহ ﷺ আশূরার সিয়াম পালন করেন এবং সাহাবাগনকেও সিয়াম পালন করার নির্দেশ দেন। [বোখারী হ/২০২৪,৩৩৯৭; মুসলীম হা/১১৩০]
.
☞ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ কে যেভাবে আশূরা ও রমযানের সিয়ামের গুরুত্ব সহকারে অনুসন্ধান করতে দেখেছি, অনুরূপ অন্য কোন সিয়ামের ব্যপারে দেখিনি। [বোখারী হা/১৮৬৭; মুসলীম হা/১১৩২]
.
☞ আয়েশা ؓ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, জাহেলিয়াতের জামানায় কুরাইশরা আশূরার সিয়াম পালন করত এবং রাসূলুল্লাহ ﷺ ও পালন করতেন। এরপর যখন তিনি মদিনায় আগমন করলেন তখনও তিনি আশূরার সিয়াম পালন করেন এবং পালন করার জন্য নির্দেশ করেন। অতঃপর যখন রমযানের সিয়াম ফরজ হলো তখন রাসূলুল্লাহ ﷺ আশূরার সিয়াম (ফরজ হিসাবে) পালন করেননি (সুন্নত হিসাবে পালন করেছেন)। এরপর যে চাইত পালন করত এবং যে না পালন করতে চাইত সে পালন করত না। [বোখারী হা/১৮৬৩; মুসলীম হা/১৮৯৯]
→ অর্থাৎ এ দিনে সিয়াম রমাযানে সিয়াম ফরজ হওয়ার পূর্বে ফরজ ছিল।
.
■ আশূরার সিয়াম পালন করার নিয়মঃ
=================================
শুধুমাত্র দশম তারিখে সিয়াম রাখা জায়েয, যা ইবনে আব্বাস ؓ -এর হাদীসের উল্লেখ করা হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ আশূরার সিয়াম পালন করার জন্য তা তালাশ করতেন, দশম তারিখের সাথে নবম তারিখেও পালন করা সুন্নত, যাতে করে ইহুদীর-খৃষ্টানদের সাথে সদৃশ না হয়, আর ইহাই হলো সর্বোত্তম যা সাহাবায়ে কেরাম দয়াল নবী সাল্লাল্ললাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পর করতেন।

☞ আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস ؓ থেকে বর্ণিত তিনি বলেন,
যখন রাসূলুল্লাহ ﷺ আশূরার সিয়াম পালন করতেন এবং পালন করার জন্য নির্দেশ করেন, পরবর্তীতে সাহাবীগন বললেন, এ দিনটিকে ইহুদী-খৃষ্টানরা বড় সম্মান করে, সূলুল্লাহ ﷺ বলেনঃ আল্লাহ্‌ চাহে তো যখন আগামী বছর আসবে তখন আমরা নবম তারিখেও সিয়াম পালন করব, কিন্তু পরের বছর আশূরা আসার পূর্বেই রাসূলুল্লাহ ﷺ মৃত্যুবরণ করেন ।
[মুসলীম হা/১৯১৬, ১৯১৭]
.
☞আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,
-রামাযানের পরে সর্বোত্তম সিয়াম হলো মুহাররম মাসের ছিয়াম (অর্থাৎ আশূরার ছিয়াম) এবং ফরয সালাতের পরে সর্বোত্তম সালাত হলো রাতের নফল সালাত (অর্থাৎ তাহাজ্জুদের ছালাত)।[মুসলিম হা/১১৬৩, মিশকাত হা/২০৩৯ ‘নফল ছিয়াম’ অনুচ্ছেদ; ঐ, বঙ্গানুবাদ হা/১৯৪১]
.
☞আবু ক্বাতাদাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,
-আমি আশা করি আশূরা বা ১০ই মুহাররমের সিয়াম আল্লাহর নিকটে বান্দার বিগত এক বছরের গুনাহের কাফফারা হিসাবে গণ্য হবে। [মুসলিম হা/১১৬২, মিশকাত হা/২০৪৪; ঐ, বঙ্গানুবাদ হা/১৯৪৬।
→ অর্থাৎ ইহা পূর্ববর্তী এক বছরের গুনাহের কাফফারা স্বরূপ অর্থাৎ এর মাধ্যমে পূর্ববর্তী এক বছরের গুনাহ ক্ষমা হয়।
 

১২৯৬

কোন তথ্যসূত্র নেই

আপনার জন্য প্রস্তাবিত

ইসলামিক ফাউন্ডেশন

To preach and propagate the values and ideals of Islam, the only complete code of life acceptable to the Almighty Allah, in its right perspective as a religion of humanity, tolerance and universal brotherhood and bring the majority people of Bangladesh under the banner of Islam

অফিসিয়াল ঠিকানা: অফিসিয়াল ঠিকানা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, আগারগাঁও, শের-এ- বাংলা নগর, ঢাকা -১২০৭